সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: প্রায় দু’ দশকের খোলা হাওয়ার পর আফগানিস্তানে ক্ষমতায় ফিরেছে তালিবান (Taliban)। তবে গৃহযুদ্ধের জেরে বিধ্বস্ত দেশটির অর্থনীতি। চরম রাজনৈতিক ডামাডোলে বিপর্যয় নেমে এসেছে সাধারণ মানুষের জীবনে। দেখা দিয়েছে প্রবল খাদ্য সংকট। এহেন পরিস্থিতিতে আমজনতার উদ্দেশে বার্তা দিল তালিবানের প্রধানমন্ত্রী মোল্লা মহম্মদ হাসান আখুন্দ। তার কথায় দেশবাসীর জন্য আল্লা খাবার জুগিয়ে দেবে।
[আরও পড়ুন: আফগানিস্তানের নতুন প্রধানমন্ত্রী পদে এক কুখ্যাত জঙ্গি! কে এই মোল্লা আখুন্দ?]
তালিবান ক্ষমতায় আসার পর গত শনিবার প্রথমবারের জন্য প্রকাশ্যে বার্তা দিল জেহাদি সরকারের প্রধানমন্ত্রী আখুন্দ। আফগান ন্যাশনাল টিভিতে প্রচারিত ওই বার্তায় আখুন্দ বলে, “মানুষের মুখে খাবার তুলে দিতে ঈশ্বর মদত করবে।” বলে রাখা ভাল, কাবুলে জেহাদিরা ক্ষমতায় আসার পর সেই অর্থে প্রকাশ্যে কোনও বার্তা দেয়নি আখুন্দ। ফলে তাকে ঘিরে প্রশ্ন উঠতে শুরু করে। এবার সেই জল্পনায় জল ঢেলে জনতার উদ্দেশে অডিও বার্তা দেয় আখুন্দ।
যুদ্ধজর্জর আফগানিস্তানে স্বাভাবিকভাবেই মুখ থুবড়ে পড়েছে অর্থনীতি। মানুষের হাতে টাকা নেই, কাজ নেই, ব্যাংকগুলি কার্যত দেউলিয়া। আন্তর্জাতিক বাজারে আফগানি মুদ্রার দর তলানিতে ঠেকেছে। বিদেশ থেকে সাহায্য আসাও প্রায় বন্ধ। আসন্ন শীতে অর্ধেকের বেশি দেশবাসীকে অনাহারে কাটাতে হবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে রাষ্ট্রসংঘ। এই অবস্থায় পরিস্থিতি সামাল দিতে বিশ্বের অন্য দেশগুলিকে পাশে থাকার বার্তা দিল বর্তমান তালিবান সরকারের প্রধানমন্ত্রী মোল্লা মহম্মদ হাসান আখুন্দ। একইসঙ্গে, সন্ত্রাস রপ্তানির অভিযোগে সাফাই দিয়ে আখুন্দ বলে, “আমরা আশ্বাস দিচ্ছি, অন্য কোনও দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে তালিবান সরকার হস্তক্ষেপ করবে না।”
উল্লেখ্য, তালিবানের (Taliban) দখলে চলে যাওয়া আফগানিস্তানে দ্রুত ফুরিয়ে যেতে বসেছে খাদ্য ও অন্যান্য জীবনদায়ী রসদ। বিধ্বস্ত সেদেশের অর্থনীতি। এহেন পরিস্থিতিতে যুদ্ধজর্জর দেশটিতে মানবিক বিপর্যয় এড়াতে গত অক্টোবর মাসে ১২০ কোটি ইউরো আর্থিক সাহায্য ঘোষণা করল ইউরোপীয় ইউনিয়ন। চিন ও তুরস্কের মতো কয়েকটি দেশ ইতিমধ্যেই সেখানে ত্রাণ পাঠানো শুরু করেছে। গত সেপ্টেম্বর মাসে রাষ্ট্রসংঘের মানবতা বিষয়ক সমন্বয় দপ্তর জানিয়েছিল, দ্রুত বিপর্যয়ের মুখোমুখি হতে চলেছে আফগানিস্তান। রাষ্ট্রসংঘের মুখপাত্র জেন্স লার্ক জেনেভায় এক সাংবাদিক সম্মেলনে জানিয়েছিলেন, সেদেশের লক্ষ লক্ষ আফগান নাগরিক বড় সমস্যার মুখে। খাদ্য সংকটের পাশাপাশি স্বাস্থ্য পরিকাঠামো ভেঙে পড়ার মুখে।