সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: স্কুলে মেয়েদের প্রবেশ নিষিদ্ধ করেছে তালিবান (Taliban)। জেহাদিদের দৌরাত্ম্যে আফগানিস্তানে নেমে এসছে অশিক্ষার অন্ধকার। জঙ্গিদের রাজত্বে চুল ছাঁটা থেকে শুরু করে গান শোনাও নাকি ইসলামের ‘অবমাননা’। এহেন তালিবরা এবার বাকস্বাধীনতার পক্ষে মত দিয়েছে! তবে এক্ষেত্রে শর্তাবলী প্রযোজ্য। তালিবানের আমলে মতে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা থাকবে, তবে তা হবে ইসলামের আইনকানুন মেনে।
[আরও পড়ুন: অভাব বড় বালাই! তালিবান জমানায় সংসার বাঁচাতে ছোট্ট মেয়েদের ‘বিক্রি’ করে দিচ্ছেন আম আফগানরা]
আফগান সংবাদমাধ্যম টলো নিউজ সূত্রে খবর, সোমবার সংবাদমাধ্যম ও অন্যান্য প্রতিষ্ঠানগুলির সঙ্গে সমন্বয় বাড়িয়ে তোলার উদ্দেশ্যে একটি অনুষ্ঠান আয়োজিত করে জেহাদি সংগঠনটি। সেখানে তালিবান সরকারের অভ্যন্তরীণ মন্ত্রী সইদ খোস্তি দাবি করে, কাউকেই বাকস্বাধীনতা হরণ করতে দেওয়া হবে না। ইসলামিক আমিরশাহী কখনওই এমনটা হতে দেবে না। তবে তাঁর এই দাবির নেপথ্যে রয়েছে জেহাদিদের আসল ফাঁদ। মন্ত্রী খোস্তি বলেন, “ইসলামিক আইনের আওতায় থেকে ও নিয়ন মেনে বাকস্বাধীনতাকে সমর্থন করে ইসলামিক আমিরশাহী।” অর্থাৎ, মতপ্রকাশ করা যাবে, তবে তা করতে হবে শরিয়ত আইন মেনেই। এবং সেই আইনের হর্তাকর্তা বিধাতা হবে তালিবান।
উল্লেখ্য, গত আগস্ট মাসে কাবুল দখল করে তালিবান। প্রায় দুই দশক ধরে গণতন্ত্রের খোলা হওয়ার পর ফের আফগানভূম ঢেকে গিয়েছে মৌলবাদের কালো মেঘে। আর আশঙ্কা সত্যি করে ১২ বছরের ঊর্ধ্বে মেয়েদের পড়াশোনা করলেই কঠিন শাস্তির বিধান দিয়েছে তালিবান। স্কুল-বিশ্ববিদ্যালয়ে মহিলা শিক্ষক ও পড়ুয়া উভয়ের প্রবেশ নিষিদ্ধ করেছে জেহাদিরা। কর্মক্ষেত্রেও মহিলাদের উপর নেমে এসেছে খাঁড়া। শুধু তাই নয়, ‘ইসলামের রীতি মতে’ পোশাক পরা ও চুল ছাঁটারও নিদান দিয়েছে জেহাদি গোষ্ঠীটি। আফগানিস্তানে আইপিএল সম্প্রচারের উপরও নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল তালিবান।
ইসলামিক আইন চাপিয়ে দেওয়ার পাশাপাশি বিগত দিনে আফগানিস্তানে একাধিক শিয়া মসজিদেও হামলা চালিয়েছে ইসলামিক স্টেট। সম্প্রতি, কান্দাহারে একটি শিয়া মসজিদে আত্মঘাতী বিস্ফোরণ ঘটায় আইএস। ওই হামলায় মৃত্যু হয় কমপক্ষে ৩০ জনের। বিশ্লেষকদের মতে, শিয়া সম্প্রদায়ের মানুষজনকে মুসলিম বলে গণ্য করে না সুন্নি জঙ্গিরা। ফলে বরাবরই আফগানিস্তানে হাজারা জনগোষ্ঠীর মানুষরা তালিবান ও আইএস-এর হামলার শিকার হয়ে আসছে।