সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: আফগানভূমে শক্তি আরও বাড়াচ্ছে তালিবান (Taliban)। এবার কুন্দুজ প্রদেশ দখল করে নিজেদের পতাকা লাগিয়ে দিল জঙ্গিগোষ্ঠী। রবিবার কুন্দুজ (Kunduz) দখলের ঠিক কয়েকঘণ্টার মধ্যে আবার পাশের সর-ই-পুলেও থাবা বসাল তালিবানি জঙ্গিরা। এই দুটিই প্রাদেশিক রাজধানী শহর। বিশেষত কুন্দুজ প্রদেশটি তালিবানদের দখলে চলে যাওয়া আফগানিস্তানের (Afghanistan) সাম্প্রতিক পরিস্থিতিতে বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছে আন্তর্জাতিক মহল। যুদ্ধবিধ্বস্ত ‘কাবুলিওয়ালা’র দেশ থেকে মার্কিন সেনাবাহিনী প্রত্যাহারের পর থেকেই ফের তালিবানি অত্যাচারের মুখে পড়েছেন আফগানিরা। ধাপে ধাপে আফগান সেনাবাহিনীকে পরাস্ত করে একেকটি এলাকা নিজেদের দখলে এনে ফের সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠা করতে চাইছে জঙ্গিগোষ্ঠী। তবে কুন্দুজ এত সহজে তাদের হাতে ছেড়ে দেবেন না আফগান সেনা। তা পুনরুদ্ধারে নেমেছে কমান্ডো বাহিনী। ইতিমধ্যে তাদের হামলায় প্রায় ৬০০ জন তালিবান জঙ্গি নিহত হয়েছে বলে দাবি বাহিনীর।
সপ্তাহখানেক লড়াইয়ের পর রবিবার বিকেল নাগাদই কুন্দুজ প্রদেশ নিজেদের দখলে আনে তালিবান জঙ্গিগোষ্ঠী। এ নিয়ে দেশের মোট চারটি বড় প্রাদেশিক রাজধানী এল তাদের দখলে। প্রাদেশিক কাউন্সিলের সূত্র অনুযায়ী, গভর্নরের কার্যালয়, পুলিশের সদর দপ্তর এবং মূল কারাগারের (main prison) দখল নেওয়ার পর জঙ্গিরা ৫০০ জন জেলবন্দিকে ছেড়ে দিয়েছে। এরা প্রত্যেকেই জঙ্গি কার্যকলাপের সঙ্গে যুক্ত থাকায় কারারুদ্ধ হয়েছিল। এখন কুন্দুজ তালিবানদের দখলে আসায় মুক্তি পেল। এই মুহূর্তে কুন্দুজের যা পরিস্থিতি তাতে স্রেফ এখানকার বিমানবন্দর এবং সেনাবাহিনীর মূল ব্যারাকটিই আফগান সেনার অধীনে রয়েছে। বাকি শহরের সবটাই কবজা করেছে জঙ্গিরা।
[আরও পডুন: ভারতের নেতৃত্বে আফগানিস্তান নিয়ে রাষ্ট্রসংঘের বৈঠকে ডাক না পেয়ে ক্ষুব্ধ পাকিস্তান]
কুন্দুজ একাধিক কারণে অত্যন্ত গুরুত্বপূ্র্ণ। ভৌগলিক অবস্থান, ঐতিহ্য, জনসংখ্যার নিরিখে কুন্দুজের গুরুত্ব একাধিক। বরাবর তালিবানদের টার্গেট এই প্রদেশটি। এর আগে ২০১৫ সালেও একবার এর দখল নিয়ে পতাকা উড়িয়েছিল তালিবান জঙ্গিগোষ্ঠী। উত্তর-পূর্ব আফগানিস্তানের সবচেয়ে বড় প্রদেশ কুন্দুজের জনসংখ্যা সাড়ে ৩ লক্ষ ছুঁইছুঁই। সকলেই এখন তালিবানিদের ভয়ে কাঁটা।
[আরও পডুন: ৭০ শতাংশ টিকাকরণের পরেও আমেরিকায় দৈনিক COVID সংক্রমণ ছাড়াল ১ লক্ষের গণ্ডি]
প্রাদেশিক কাউন্সিলের (Provincial council member) এক সদস্যের কথায়, ”সেনাবাহিনী ও তালিবান জঙ্গিরা নিজেদের মধ্যে ক্ষমতা দখলের লড়াইয়ে ব্যস্ত। মাঝখান থেকে দরিদ্র, নিরীহ সাধারণ মানুষকে এর মূল্য চোকাতে হচ্ছে। একপক্ষ দেশবাসীকে নিরাপত্তা দিতে পারছে না, আরেকপক্ষ মানুষের নিরাপত্তার কথা ভাবছেই না।” তবে পালটা দিচ্ছে আফগান সেনাও। মার্কিন সেনা কাবুলের মাটি ছেড়ে চলে গেলেও অত্যাধুনিক অস্ত্রে জঙ্গিডেরাগুলি ভাঙার চেষ্টা করছে সেনাবাহিনী। তার জেরেই ৫৭জনেরও বেশি জঙ্গি নিকেশ হয়েছে বলে দাবি তাদের।