সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: দুই দশকের ‘খোলা হাওয়ার’ পর আফগানিস্তান এখন ‘হাল্লা রাজার দেশ’। তালিবানের (Taliban) শাসনে ‘জেহাদ’ আর ইসলামের নামে শুধু চলছে নৈরাজ্য। শাসনব্যবস্থার হাল এমনই যে এবার এক আফগান শহরের মেয়র পদে বসেছে এক তালিব বন্দুকবাজ।
[আরও পড়ুন: পাকিস্তানের সঙ্গে তুঙ্গে সীমান্ত সংঘাত, পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে কমিটি গঠন তালিবানের]
জানা গিয়েছে, আফগানিস্তানের মেমানা (Maymana) শহরের মেয়র পদে বসানো হয়েছে দমউল্লা মহিবুল্লা মোয়াফফাক নামের এক তালিবান স্নাইপারকে। গত বছরের নভেম্বর মাসেই এই সিদ্ধান্ত নেয় তালিবান সরকার। উত্তর-পশ্চিম আফগানিস্তানের ফরিয়াব প্রদেশের রাজধানী হল মেমানা। সেই শহরের ভালমন্দ দেখার দায়িত্ব এবার তুলে দেওয়া হয়েছে দমউল্লার কাঁধে। আফগানিস্তানের ক্ষমতা পুনর্দখলের মাত্র কয়েকমাসের মাথায় আখুন্দজাদার দলের এই সিদ্ধান্ত নিয়ে দেখা দিয়েছে বিতর্ক। তবে আফগানিস্তানের ইতিহাসে এমন ঘটনা বিরল নয়। আগে শাসন করার যোগ্যতা বা অভিজ্ঞতা না থাকলেও মেয়র বা গভর্নর পদে বসেছে বহু আফগান ওয়ারলর্ড।
এদিকে, বছর পঁচিশের মেয়র দমউল্লার দাবি, “নিয়মিত শহর ঘুরে দেখছি আমি। স্থানীয়দের সঙ্গে আলোচনা করে কোথায় কী সমস্যা রয়েছে, তা বোঝার চেষ্টা করছি। পৌরকর্মীদের সঙ্গে সরাসরি কথা বলে তাঁদের কাজ বুঝিয়ে দিচ্ছি। আমি যখন যুদ্ধ করতাম, তখন আমার লক্ষ্য একেবারে স্পষ্ট ছিল। দেশকে বিদেশিদের দখল মুক্ত করা এবং বৈষম্য ও অবিচার দূর করাই ছিল আমার প্রধান কাজ। এখন আমার উদ্দেশ্য হচ্ছে দেশের উন্নতি।” কিন্তু তার মুখের কথায় সেই অর্থে আশ্বস্ত হতে পারছেন না স্থানীয়রা বলেই খবর। কারণ, জেহাদিদের রক্তপিপাসা ও অত্যাচারের ইতিহাস ভোলার নয়।
উল্লেখ্য, গত আগস্ট মাসে কাবুল দখল করে তালিবান। জেহাদিদের রাজত্বে অশিক্ষার অন্ধকার গ্রাস করছে আফগানিস্তানকে। ক্ষমতায় এসে মহিলাদের অধিকার রক্ষার কথা বলেছিল তালিবান। অনেকেই ভেবেছিলেন যে এবারে হয়তো কিছুটা বদলেছে তালিবরা। কিন্তু আশঙ্কা সত্যি করে স্বমেজাজে ফিরেছে তারা। কাবুল বিশ্ববিদ্যালয়ের পর স্কুলেও মহিলাদের প্রবেশ নিষিদ্ধ করেছে জেহাদি সংগঠনটি। কর্মক্ষেত্রেও মহিলাদের উপর বাধানিষেধ জারি করেছে তালিবান। বিক্ষোভ মিছিল সংক্রান্ত খবর প্রকাশ করলে আক্রমণ নেমে আসছে সংবাদমাধ্যমের উপর। সবমিলিয়ে, দেশটিতে চলছে নৈরাজ্য।