স্টাফ রিপোর্টার: কর্ণাটক ভোটের ফলাফল তুলে ধরে দিল্লির নেতৃত্বকে ফের নিশানা করলেন প্রবীণ বিজেপি নেতা তথাগত রায়। একইসঙ্গে একুশের ভোটে বঙ্গ বিজেপির ভরাডুবিকে সামনে এনে বিস্ফোরক টুইট করেছেন রাজ্য বিজেপির প্রাক্তন সভাপতি। সতর্কও করেছেন বঙ্গ বিজেপিকে।
কর্ণাটকের ভোটে পরাস্ত হওয়ার প্রভাব পড়েছে বঙ্গ বিজেপির (BJP) অন্দরে। তথাগত রায়ের টুইটের পাশাপাশি পুরনো নেতাদের ব্রাত্য করে রাখার বিষয়টি নিয়ে ফের সরব হয়েছে রাজ্য বিজেপির একাংশ। একুশের ভোটে বঙ্গ বিজেপির পুরনো ক্ষত খুঁচিয়ে তুলে ফের কামিনী কাঞ্চন বিতর্ককে উসকে দিয়েছেন মেঘালয়ের প্রাক্তন রাজ্যপাল। পাশাপাশি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে শক্তিশালী নেত্রী হিসাবেও মন্তব্য করেছেন তিনি। তথাগতবাবু টুইটারে লিখেছেন, ‘কর্ণাটকের ফলে অবাক হওয়ার কিছু নেই। এটা ২০২৪-এর জন্য একটা শিক্ষা। ২০২১-এ হারের অন্যতম কারণ দুর্নীতিগ্রস্ত নেতাদের হাতে প্রচারের দায়িত্ব তুলে দেওয়া ও কামিনী কাঞ্চনের যোগাযোগ। বাংলার সঙ্গে ওই নেতাদের সম্পর্ক ছিল না। কর্ণাটকের ফল দেখে সতর্ক হওয়ার সময় এসেছে। কংগ্রেস এ রাজ্যে শেষ। সুনির্দিষ্ট স্ট্র্যাটেজি তৈরি করতে না পারলে পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতির শূন্যস্থান বামেরা পূরণ করবে। এখনও সময় আছে, কিন্তু সময় খুব অল্প।’’
[আরও পড়ুন: রাজ্যের মিড-ডে মিলের ভূয়সী প্রশংসা, ২০০০ কোটি টাকা বরাদ্দ ঘোষণা কেন্দ্রের]
কর্ণাটকের ফলাফলের প্রসঙ্গ টেনে সংবাদ মাধ্যমের সামনেও তাঁর দলের নেতাদের সম্পর্কে সোমবার তথাগত রায় বিস্ফোরক মন্তব্য করেছেন, ‘‘একুশ সালে পশ্চিমবঙ্গেও কতগুলি ভুল পদক্ষেপ করেছিল বিজেপি। দুর্নীতিগ্রস্ত ও নারী আসক্ত নেতা যাঁরা ছিলেন, সেই সমস্ত প্রভাব প্রার্থী নির্বাচনে পড়েছিল। সেই প্রার্থীরা হেরেছে তো বটেই, অন্য দলেও চলে গিয়েছে।’’ একইসঙ্গে তিনি মনে করেন, ‘‘একুশে বিজেপির উচিত ছিল একজন মুখকে সামনে আনা। কারণ, অন্যদিকে যখন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতো শক্তিশালী নেত্রী আছেন।’’ তথাগতবাবুর এই টুইট নিয়ে মুখ খুলেছেন তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ। কুণালের বক্তব্য, ‘‘বাংলা থেকেই বিজেপি হঠাও শুরু হয়েছে। বাংলা ’২১ সালে যা ভেবেছে, কর্ণাটক তা-ই আজ ভাবছে, সারা দেশ ’২৪ সালে তা-ই ভাববে। তথাগতবাবু যা বলছেন দলের বিষয়, তবু বিষয়গুলো ধরলে যা বলেছেন অনেকটা ঠিক। জনভিত্তিহীন লোকদের নিয়ে মাতামাতি করা হয়েছে। ধর্মের নামে রাজনীতি মানুষ প্রত্যাখ্যান করছেন।’’ পাশাপাশি তৃণমূল মুখপাত্রের প্রশ্ন, ‘‘জনবিরোধী নীতির কথা তথাগতবাবু বলছেন না কেন? পেট্রোপণ্য, গ্যাসের বা জীবনদায়ী ওষুধের ব্যাপক দাম বৃদ্ধি। আর্থিক নীতি থেকে নজর ঘোরাতে ধর্ম, বর্ণ, জাতির নামে ভেদাভেদ মানুষ নিচ্ছে না। তথাগতবাবুর মূল্যায়ন তাঁর নিজের যাঁদের উপর রাগ, সেই জায়গায় স্লট আটকে যাচ্ছে।’’
এদিকে, কর্ণাটকে বিজেপির হারের পর বঙ্গ বিজেপির মধ্যেও প্রশ্ন উঠেছে, দলের পুরনোদের কেন ব্রাত্য রাখা হবে? বিজেপি বাঁচাও মঞ্চের তরফে সামসুর রহমান সোমবার দলের সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডাকে ই-মেল করে অমিত মালব্য ও অমিতাভ চক্রবর্তীর বিরুদ্ধেও নালিশ জানিয়েছেন।