shono
Advertisement

অ্যান্টিবায়োটিক ছাড়াই জ্বর সারানোর উপায় বাতলেছিলেন নোবেলজয়ী

সিউড়িবাসীর মনে আজও টাটকা অভিজিৎবাবুর স্মৃতি। The post অ্যান্টিবায়োটিক ছাড়াই জ্বর সারানোর উপায় বাতলেছিলেন নোবেলজয়ী appeared first on Sangbad Pratidin.
Posted: 09:34 PM Oct 15, 2019Updated: 03:45 PM Oct 16, 2019

নন্দন দত্ত, সিউড়ি: ‘উনি চিকিৎসক নন, কিন্তু আমার ৩০ বছরের চিকিৎসা পদ্ধতি সম্পূর্ণ বদলে দিয়েছিলেন। জেনেছিলাম অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধ কখন ও কেন ব্যবহার করতে হয়। তাই এখন সাধারণ ঠান্ডা লাগার ওষুধ দিয়েই সর্দি-কাশি সারিয়ে ফেলতে পারি”, নোবেলজয়ীর স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে জানালেন সিউড়ির সাঁইথিয়া ব্লকের মহম্মদ ফতেনুশ। 

Advertisement

[আরও পড়ুন: জিয়াগঞ্জ হত্যাকাণ্ডের মূল অভিযুক্ত প্রতিবেশীর ভাই, বোনের বাড়িতে বিক্ষোভ স্থানীয়দের]

২০১২ থেকে ২০১৫ সালের মধ্যে বেশ কয়েকবার সিউড়ি গিয়েছিলেন অভিজিৎবাবু। সেই সময় সিউড়ির রামকৃষ্ণ সভাগৃহে নিয়মিত যেতেন অভিজিৎবাবু। সেখানে স্বাস্থ্য পরিষেবা নিয়ে শিক্ষা দিতেন চিকিৎসক শৈবাল মজুমদার। ছাত্রদের সঙ্গে বসে চুপচাপ সব শুনতেন নোবেলজয়ী। ‘অভিজিৎবাবু শুনতেন বেশি, বলতেন কম। যা বলতেন, সব যেন মনে গেঁথে যেত।’, অভিজিৎ বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায় নোবেল পেতেই সেই সব দিনের স্মৃতিচারণা করতে গিয়ে জানালেন সিউড়ি লিভার ফাউন্ডেশনের শিক্ষক। 

তাঁর অভিজ্ঞতায় রসিক লোক ছিলেন নোবেলজয়ী অভিজিৎ। সমীক্ষাপত্র প্রকাশের সময় কলকাতায় সঙ্ঘমিত্রা ঘোষের সামনে বলেছিলেন, ‘জানেন এনারা খুব ভাল পড়ান। আমি এনার ক্লাস করেছি। তখন নিজেকে খুব লজ্জিত মনে হয়েছিল।’ তিনি জানান, সংস্থার প্রাণপুরুষ অভিজিৎ চৌধুরি গ্রামীণ স্বাস্থ্য পরিষেবক তৈরি সমাজে কী প্রভাব ফেলছে তা নিরিক্ষণের জন্য অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়ের সংস্থাকে দায়িত্ব দিয়েছিলেন। অভিজিৎ বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায়, বিশ্ব ব্যাংকের জিষ্ণু দাস ও অভিজিৎ চৌধুরি মিলে তাঁদের সমীক্ষাপত্র প্রকাশ করেন।

তবে শৈবালবাবু জানান, রোগী সেজে গ্রামের হাতুড়ে চিকিৎসকদের কাছে লোক পাঠানোর পাশাপাশি প্রতিষ্ঠিত চিকিৎসকের কাছেও লোক পাঠিয়ে তিনি দুইয়ের তফাৎ খুঁজতেন। সংস্থার কর্মী মিলন মণ্ডল জানান, সাঁইথিয়া, লাভপুর ও ইলামবাজার ব্লক নিয়ে সমীক্ষা চালিয়েছিল নোবেলজয়ী অভিজিৎবাবুর সংস্থা। সাঁইথিয়া ব্লকের মহম্মদ ফতেনুশ জানান, তাঁর কাজের সমীক্ষা করতে পাড়ুই বাসস্ট্যান্ডে তার চেম্বারে সারাদিন ধরে বসে বসে লক্ষ্য করেছে সমীক্ষক দলের চার সদস্য।

অভিজিৎবাবুর নোবেল পাওয়ার পর থেকে সারাদিন ধরে তাঁর ছবি দেখে চলেছেন লাভপুরের লাবণ্য ভট্টাচার্য্য। বলেন, ‘এনার সামনেই কলকাতার ইরানি হাউজে আমি প্রতিবাদ করেছিলাম। দাবি তুলেছিলাম, গ্রামের মুদির দোকানে চাল, ডাল না মিললেও কমপক্ষে দশ রকম ওষুধ পাওয়া যায়। এই প্রবণতা বন্ধ হওয়া দরকার। উনিই আমাদের প্রথম বলেছিলেন, মুক্ত শৌচে, মাঠেঘাটে মানুষদের মল-মূত্র ত্যাগ বন্ধ করতে হবে। তাই সরকারি নির্মলতার প্রচারের বহু আগেই, তাঁর পরামর্শ মতো আমার রোগীদের মধ্যে আমি শৌচাগার ব্যবহার করতে বলি।’ 

[আরও পড়ুন: মোবাইল চোর সন্দেহে যুবককে বেধড়ক মার তরুণীদের, দেখুন ভিডিও]

গ্রামীণ স্বাস্থ্য সেবকের পরিবর্তে এখন প্রাথমিক শিক্ষক ইলামবাজার ব্লকের কয়রা গ্রামের সঞ্জিতকুমার গঙ্গোপাধ্যায়। তাঁর চোখে এখনও ভাসছে অভিজিৎবাবুুর আদর্শ, তাঁর কথা। বিশেষ করে বিরাট মাপের মানুষের সাধারণ বাঙালির মতো জীবনযাপন। তাঁর কথায়, তিনিই শিখিয়েছিলেন, আমাদেরও স্বাস্থ্য পরিষেবা পাওয়ার অধিকার আছে। সেই সঙ্গে তার সীমাবদ্ধতা কতটা তাও বুঝিয়ে দেন তিনি।’ তাঁর মতে, বিদেশে দীর্ঘদিন থাকা সত্বেও অভিজিৎবাবু থাকতেন বিশুদ্ধ বাঙালির মতো। তাঁর সরলতা আমার জীবনের পাথেয় করেছি। ছাত্রদের মধ্যেও আমি হাজার অভিজিৎ বিনায়কের আদর্শ জাগিয়ে রাখতে চাই। বোঝাতে চাই বাঙালি আবার জগৎ সভায় শ্রেষ্ঠ আসন নেবে।

অভিজিৎবাবু শেষবার সিউড়ি গিয়েছিলেন ২০১৫ সালে। মাঝখানের চার বছরে দেখা মেলেনি তাঁর। কিন্তু অর্থনীতিতে নোবেল সিউড়িবাসীর মনে কখন যেন কড়া নেড়ে দিয়ে গেল। দেখা গেল তাঁদের স্মৃতিতে আজও টাটকা অভিজিৎ বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায়।  

The post অ্যান্টিবায়োটিক ছাড়াই জ্বর সারানোর উপায় বাতলেছিলেন নোবেলজয়ী appeared first on Sangbad Pratidin.

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement