স্টাফ রিপোর্টার: শিক্ষকদের পেনশনে জঠিলতা কাটাতে পদক্ষেপ নিল রাজ্য। সরকারি অবসরকালীন ভাতার অন্তর্ভুক্ত হতে গেলে ন্যূনতম টানা ১০ বছর চাকরি করতে হয় শিক্ষক-শিক্ষিকাদের। এবার সেই নিয়মে কিছুটা ছাড় ঘোষণা করল রাজ্য সরকার। এ ক্ষেত্রে টানা ৯ বছর ৬ মাস অর্থাৎ দশ বছরের নিচে কর্মজীবন থাকলেও শিক্ষা দপ্তরের ক্ষমতাবলে সংশ্লিষ্ট শিক্ষক-শিক্ষিকাদের পেনশন স্কিমের অধীনে আনা হবে। বৃহস্পতিবার শিক্ষক দিবসের অনুষ্ঠান থেকে একথা ঘোষণা করলেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু(Bratya Basu)।
জানানো হয়, এবার থেকে কোনও শিক্ষক যদি ১০ বছর হওয়ার আগে পেনশনের অর্ন্তভুক্ত হতে চাইলে তাঁর আবেদন খতিয়ে দেখে পদক্ষের নেওয়া হবে। অনুষ্ঠান থেকে ব্রাত্য বলেন, "বিদ্যালয় শিক্ষকদের সুবিধায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ গ্রহণ করা হল। সরকারি অবসরকালীন ভাতার অন্তর্ভুক্ত হতে গেলে এতদিন কম করে টানা ১০ বছর চাকরি করতে হত শিক্ষক-শিক্ষিকাদের। কিন্তু ৯ বছর ৬ মাস তার বেশি যদি কেউ চাকরি করে থাকেন, তাহলে বিদ্যালয় শিক্ষা বিভাগের হাতে ক্ষমতা আছে, ৬ মাস বা তার কম সময় মার্জনা করে তাঁকে পেনশন দেওয়ার। সাধারণভাবে এতদিন এই ক্ষমতার প্রয়োগ করত না বিদ্যালয় শিক্ষা বিভাগ। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই শিক্ষক-শিক্ষিকাদের উচ্চ ন্যায়ালয়ে গিয়ে বিচার চেয়ে প্রতিবিধান আনতে হত। এই অসুবিধার কথা মাথায় রেখে মানবিক দিকগুলো বিচার করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, কোনও শিক্ষক-শিক্ষিকার কর্মজীবন ১০ বছরের কম, টানা ৯ বছর ৬ মাস হয়ে থাকলেও আবেদনের ভিত্তিতে যোগ্য প্রার্থীদের এই ঘাটতিটুকু মার্জনা করে তাঁর পেনশন অনুমোদন করে দেবে বিদ্যালয় শিক্ষা বিভাগ। তাঁদের আর উচ্চ ন্যায়ালয়ে ছুটতে হবে না।"
[আরও পড়ুন: সন্দীপের শ্বশুরবাড়িতেও ইডি, ‘ও কিছু করেনি’, দাবি ধৃতের স্ত্রীর]
পাশাপাশি, শিক্ষক, পড়ুয়া ও শিক্ষাকর্মীদের অভাব-অভিযোগ শোনা এবং তা নিষ্পত্তিকরণে একটি হোয়াটসঅ্যাপ নম্বর চালু করল শিক্ষা দপ্তর৷ সেই নম্বরটি হল ৯০৮৮৮৮৫৫৪৪৷ এটি সারা বছর ২৪ ঘণ্টাই চালু থাকবে। অভিযোগ পাওয়ার পর একটি প্রাপ্তিসূচক পাঠানো হবে। এ নিয়ে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, "অভিযোগ যাচাই করতে একটি বিশেষ দল গঠন করা হয়েছে। এই দলের প্রতিনিধিরা অভিযোগ খতিয়ে দেখবেন এবং তা দ্রুত সমাধানে উদ্যোগী হবেন।" এছাড়াও এতদিন মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের নথিপত্র সংশোধনের পর, তা ডিজিলকারে আর পুনরায় তালিকাভুক্ত হত না বলে অভিযোগ ছিল। ফলে নথি সংশোধনের পর, ডিজিলকার ব্যবহারে বহু ছাত্র-ছাত্রীকে ব্যাপক হয়রানির শিকার হতে হয়৷ পড়ুয়াদের সুবিধার্থে এবার সেই সমস্যার নিষ্পত্তি করা গেল বলে জানিয়েছেন রাজ্য শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু।
আর জি কর ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে এ বছরের শিক্ষক দিবস উদযাপনে সরকারি কর্মসূচিকে কাটছাঁট করা হয়। বৃহস্পতিবার দুপুরে সল্টলেকের বিকাশ ভবনের শিক্ষাদপ্তরে বসে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, "আর জি কর হাসপাতালে আমরা অনভিপ্রেত ঘটনার সাক্ষী হয়েছি। আমাদের বাড়ির একটি মেয়েকে অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনকভাবে হারিয়েছি। তাতে সাড়ম্বরে শিক্ষক দিবস উদযাপন বেমানান। তাই এ বছরে অনাড়ম্বর ভাবেই শিক্ষক দিবস পালন করা হয়েছে।"