ইংল্যান্ড: ৪৭৭ ও ২০৭
ভারত: ৭৫৯/৭ (ডিক্লেয়ার)
এক ইনিংস এবং ৭৫ রানে জয়ী ভারত
৪-০-য় সিরিজ জয়ী ভারত
ম্যাচের সেরা করুণ নায়ার
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: চার বছর আগে একটা গল্প লেখা শুরু হয়েছিল। ইংল্যান্ডের মাটিতে মুখ থুবড়ে পড়েছিল মহেন্দ্র সিং ধোনির টিম ইন্ডিয়া। বিদেশের মাটিতে ভারতীয় দলের লজ্জাজনক পারফরম্যান্সের তীব্র সমালোচনা হয়েছিল দেশীয় সংবাদপত্রে। প্রশ্ন উঠেছিল দলের নেতৃত্ব নিয়েও। মঙ্গলবার সেই সমালোচনার যোগ্য জবাব দিল বিরাটবাহিনী। চার বছর আগে শুরু হওয়া সেই গল্পের বৃত্ত সম্পূর্ণ হল।
বিরাট কোহলির নেতৃত্বের বিরুদ্ধে প্রথমবার বাইশ গজে নামা কুকবাহিনী এই সিরিজের কথা সহজে ভুলতে পারবে না। কারণ মোহালি থেকে রাজকোট, ভাইজ্যাগ থেকে চেন্নাই ভারতীয় ক্রিকেটারদের একের পর এক ইতিহাসের সাক্ষী থাকল গোটা দেশ। কোথাও অশ্বিনের স্পিন ঝড়ে তৈরি হল নয়া রেকর্ড তো কখনও করুণ নায়ারের ট্রিপল সেঞ্চুরিতে হতবাক হয়ে গেলেন ব্রড, বেন স্টোকসরা। আর সর্বোপরি একজন নেতার অভ্যুত্থানের সাক্ষী থাকলেন ক্রিকেটভক্তরা। যিনি রূপকথার পাতা থেকে বাস্তবের মাটিতে নেমে এসেছেন। যিনি তাঁর জাদুকাঠি ছোঁয়ালেই সবকিছু সোনায় পরিণত হয়। যিনি শুধু চ্যালেঞ্জ নিতেই ভালবাসেন না, তাকে বাস্তবে পরিণত করে তবেই থামেন। তিনি বিরাট কোহলি। যিনি ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে একাধারে বিরাট রানের মালিক হয়ে সিরিজ সেরা হলেন। আর অন্যদিকে মধুর প্রতিশোধ নিয়ে নেতা হিসেবে নিজের যোগ্যতা ফের প্রমাণ করে দিলেন। নোট বাতিল সমস্যা, ভারদার তাণ্ডবের স্মৃতি মুছে দিয়ে যিনি দেশবাসীর মুখে আজ হাসি ফোটাতে সফল হলেন। আর পরাজিত সৈনিকের মতো ভারত থেকে শূন্য হাতেই দেশে ফিরতে হচ্ছে কুক অ্যান্ড কোম্পানিকে।
পঞ্চম টেস্টের শেষ দিনের শুরুতে ইংল্যান্ডের দুই ওপেনার কুক (৪৯) এবং জেনিংস (৫৪) যেভাবে ক্রিজে জাঁকিয়ে বসেছিলেন, তাতে একটা সময় মনে হচ্ছিল ম্যাচ হয়তো ড্রয়ের দিকেই এগোচ্ছে। ভারতীয়দের দুর্বল ফিল্ডিংয়ের সুযোগকেই কাজে লাগাচ্ছিলেন তাঁরা। কিন্তু তারপর যেভাবে চিপকের উইকেটে স্পিন ঝড় উঠল, তাতে তছনছ হয়ে গেল কুকের সাজানো ব্যাটিং অর্ডার। সাত-সাতটা উইকেট তুলে নিয়ে অনেকটা অপ্রত্যাশিতভাবেই দলকে এক ঝটকায় জয়ের সরণিতে এনে দাঁড় করিয়ে দিলেন রবীন্দ্র জাদেজা। ১০৩ রানে এক উইকেট থেকে ২০৭ রানে গুটিয়ে গেল ইংল্যান্ডের দ্বিতীয় ইনিংস। মঈন আলি (৪৪) সামান্য জ্বলে উঠতে চেয়েছিলেন। কিন্তু জাদেজার দাপটের সামনে আত্মসমর্পণ করতে হল সকলকেই। মুম্বই টেস্টের মতো চেন্নাইতেও ফের এক ইনিংস না খেলেই জয় পকেটে পুরল অনিল কুম্বলের বিশ্বস্ত দল।
খালি হাতে চলে গেল ইংল্যান্ড। আর ভবিষ্যতের জন্য টিম ইন্ডিয়াকে দিয়ে গেল অনেক মশলা। এই সিরিজ লোকেশ রাহুল, জয়ন্ত যাদব, করুণ নায়ারের মতো সুপ্ত প্রতিভাকে জাগিয়ে তুলল। খুঁজে বের করে আনল হারিয়ে যাওয়া পার্থিব প্যাটেলকে। শুধু বোলার নয়, ব্যাটসম্যান হিসেবেও নয়া স্বীকৃতি পেলেন রবিচন্দ্রন অশ্বিন। বুঝিয়ে দিল এই টেস্ট দল শুধু বিরাট কোহলি নির্ভর নয়। টপ অর্ডার থেকে টেল এন্ডার, সকলেই ম্যাচ জেতানোর ক্ষমতা রাখে। এবং অবশ্যই এক নেতার জন্ম দিল। যাঁর আগ্রাসন, ধৈর্য, আত্মবিশ্বাস এবং চওড়া ব্যাটে ভর করে ভারতীয় টেস্ট ক্রিকেট সুরক্ষিত থাকবে আগামী বেশ কয়েক বছর।
The post কুকদের ব্রাউনওয়াশ করে বদলার বৃত্তপূরণ বিরাটবাহিনীর appeared first on Sangbad Pratidin.