শান্তনু কর, জলপাইগুড়ি: ধর্ষণের চেষ্টার (Attempt to Rape) পর অপমান ঢাকতে আত্মহত্যার রাস্তা বেছে নিয়েছিল জলপাইগুড়ির (Jalpaiguri) নাবালিকা। গায়ে আগুন লাগিয়ে আত্মঘাতী হওয়ার চেষ্টা করলেও প্রাণ বেঁচে গিয়েছে তাঁর। কিন্তু অত্যন্ত আশঙ্কাজনক অবস্থায় নাবালিকা ভরতি জলপাইগুড়ি মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। ঘটনায় অভিযুক্ত সন্দেহে একজনকে গ্রেপ্তার করা হলেও দ্বিতীয়জন এখনও অধরা। তার খোঁজে চলছে জোর তল্লাশি।
গত ২৮ ফেব্রুয়ারি ময়নাগুড়ির ধর্মপুর এলাকার এক নাবালিকাকে ধর্ষণের চেষ্টার অভিযোগ ওঠে স্থানীয় অজয় রায় নামে এক যুবকের বিরুদ্ধে। তাঁর জামাকাপড় ছিঁড়ে গোপনাঙ্গে হাত দেয় বলে অভিযোগ। নাবালিকার চিৎকার শুনে পালিয়ে যায় অভিযুক্ত। ময়নাগুড়ি থানার দ্বারস্থ হয় নাবালিকার পরিবার। অভিযোগ দায়েরের কয়েকদিনের মধ্যেই আদালত থেকে জামিন নেয় অভিযুক্ত।
এরপর নির্যাতিতা নাবালিকার আত্মহত্যার চেষ্টার ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে জলপাইগুড়িতে। অভিযোগ প্রত্যাহার করতে প্রাণনাশের হুমকি দেওয়া হয়েছিল নির্যাতিতাকে। সেই চাপ সহ্য করতে না পেরে আত্মহত্যার চেষ্টার ঘটনা বলে অভিযোগ পরিবারের। ঘটনায় একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জলপাইগুড়ির পুলিশ সুপার দেবর্ষি দত্ত জানিয়েছেন।
[আরও পড়ুন: কয়েক মিনিটের ঝড়ে লণ্ডভণ্ড তুফানগঞ্জ, নববর্ষে ঘরবাড়ি হারালেন শতাধিক গ্রামবাসী]
নাবালিকার বাবা ঝরিয়াকান্ত রায়ের অভিযোগ, বৃহস্পতিবার দুপুরে বাড়িতে একাই ছিল মেয়ে। সেই সময় মুখ ঢাকা অবস্থায় দুই যুবক বাড়িতে ঢুকে অভিযোগ প্রত্যাহার করে নিতে বলে। অভিযোগ প্রত্যাহার না করলে বাড়ির সকলকে খুন করার হুমকি দিয়ে যায়। বৃহস্পতিবার এই ঘটনার কথা পরিবারের সকলকে জানায় নাবালিকা।
এরপর দুপুরে গায়ে আগুন দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করে। অগ্নিদগ্ধ অবস্থায় নাবালিকাকে জলপাইগুড়ি সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে নিয়ে আসা হলে অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় চিকিৎসকরা তাকে মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে রেফার করেন।
[আরও পড়ুন: শেষ জীবনযুদ্ধ, ৯৪ বছর বয়সে প্রয়াত প্রখ্যাত চিকিৎসক বৈদ্যনাথ চক্রবর্তী]
এদিকে ঘটনার খবরে নড়েচড়ে বসে পুলিশ। রাতে বিজয় রায় নামে এক জনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। ধৃত বিজয় রায়ের দাদা অজয় রায়ের খোঁজ চলছে বলে জানিয়েছেন জলপাইগুড়ি র পুলিশ সুপার দেবর্ষি দত্ত। এদিকে ঘটনায় তৃণমূলকে কাঠগড়ায় তুলেছে বিজেপি। জলপাইগুড়ি জেলা বিজেপির সভাপতি বাপি গোস্বামী বলেন, ”গোটা রাজ্যে যা হচ্ছে এখানেও ঠিক তাই হল। এক মাসের বেশি সময় ধরে পুলিশ অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করেনি। উলটে অভিযুক্ত তৃণমূল নেতাদের ছত্রছায়ায় থেকে গেল। যার জেরে এই ভয়ংকর পরিণতি বলে অভিযোগ করেন তিনি।