সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: পুরনো সমীকরণ ভুলে প্রথা ভেঙে রাজনীতিতে পা দিলেন থাইল্যান্ডের রাজকুমারী উবোলরত্না। কিন্তু শুরুতেই বিপত্তি। রাজপরিবারের প্রথা ভেঙে বোন প্রধানমন্ত্রী পদের জন্য দৌড়বেন দেখে পথের কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছেন তাঁর ভাই মহা বাজিরালঙ্গকর্ন। তবে শনিবার রাজকন্যা তাঁর সমর্থকদের জানিয়েছেন, তিনি তাঁদের সমর্থন পেয়ে আপ্লুত। এবং তিনি তাঁর সমর্থকদের ভালবাসেন। ইনস্টাগ্রামে রাজকুমারী ভাইয়ের নাম না নিলেও জানিয়েছেন, পরিবার থেকেই বাধা আসছে। যা তিনি কল্পনাও করতে পারেননি। এক দিকে, রাজপরিবার ঘনিষ্ট দেশের অভিজাত শ্রেণি। উলটো দিকে, প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শিনাবাত্রার অনুগত গ্রামীণ সম্প্রদায়। একটা সময় সংঘাত এমন পর্যায় পৌঁছয় যে, গদি হারাতে হয় শিনাবাত্রাকে। পরে সেনা অভ্যুত্থান দেশে ঘটে। এই মুহূর্তে থাইল্যান্ডের শাসনভার জুন্টা সরকারের হাতে। আপাতত প্রধানমন্ত্রী পদে রয়েছেন মিলিটারি জুন্টা নেতা প্রয়ুত-চান-ও-চা।
এক সময়ের বিরোধী তথা গদিচ্যুত প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শিনাবাত্রার সমর্থক ‘থাই রক্ষা চার্ট পার্টি’ শুক্রবার ঘোষণা করেছে, তাদের দলের হয়ে আসন্ন সাধারণ নির্বাচনে প্রধানমন্ত্রী পদের জন্য লড়বেন রাজা মহা বাজিরালঙ্গকর্নের দিদি ৬৭ বছরের উবোলরত্না। অর্থাৎ দীর্ঘ ১৫ বছর ধরে টালমাটাল রাজনৈতিক পরিস্থিতিকে সামাল দিতে রাজনীতির ময়দানে এলেন রাজকন্যা। আগামী ২৪ মার্চ ভোট। দেশের ইতিহাস বলছে, থাইল্যান্ডে রাজতন্ত্রের অবসান ঘটে ১৯৩২ সালে। যদিও জনমানসে রাজপরিবারের প্রভাব ভালই। এত কাল সচেতন ভাবে রাজনীতি থেকে দূরত্ব বজায় রেখে এসেছে থাইল্যান্ডের রাজপরিবার। স্বাভাবিকভাবে, নজিরবিহীন এই ঘোষণায় শোরগোল পড়ে গিয়েছে থাইল্যান্ডে। দেশের টালমাটাল রাজনীতিতে ভারসাম্য আনতেই প্রথা ভেঙে এই সিদ্ধান্ত বলে জানান উবোলরত্না। যদিও এখনও স্পষ্ট নয়, উবোলরত্নার প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী হওয়ার পিছনে রাজপরিবারের সায় রয়েছে, নাকি গোটাটাই তাঁর একক সিদ্ধান্ত।
[ যন্ত্রের মাধ্যমে ‘কার্বন শোষণ’, পরিবেশ রক্ষায় বড় পদক্ষেপ ব্রিটেনের ]
উবোলরত্নার দল ‘থাই রক্ষা চার্ট পার্টি’-র শীর্ষ নেতা প্রিচাপোল পঙ্গপানিচ বলেন, “আমাদের দলের একমাত্র প্রার্থী রাজকুমারীই। প্রধানমন্ত্রী পদের জন্য তিনি যোগ্য দাবিদার। বিশ্বাস, ওঁর প্রার্থী হওয়া নিয়ে কোনও আইনি সমস্যা হবে না। তবে নির্বাচন কমিশনের ছাড়পত্র পাওয়ার অপেক্ষায় রয়েছি।” “উবোলরত্নার ভোটে দাঁড়ানোয় উলটেপালটে যেতে পারে থাইল্যান্ডের রাজনীতি,’’ বলছেন সে দেশের কূটনীতিবিদ তিতিনান পংসুধিরাক। তাঁর কথায়, “পরিস্থিতি শান্ত হতে পারে। আবার এখনকার থেকেও বেশি অশান্ত হয়ে উঠতে পারে।” তবে মূল প্রতিপক্ষ রাজকুমারী উবোলরত্নাকে নিয়ে নীরবই থেকেছেন প্রয়ুত। ১৯৭২ সালে মার্কিন নাগরিক পিটার জেনসেনকে বিয়ে করার পরে রাজ-উপাধি ছেড়ে দিতে হয় উবোলরত্নাকে। এমআইটিতে পড়াশোনা করতে গিয়ে আলাপ হয় পিটারের সঙ্গে। বিয়ের পরে ২৬ বছর আমেরিকায় ছিলেন উবোলরত্না। তবে ১৯৯৮ সালে বিয়ে ভেঙে যায়। ২০০১-এ দেশে ফিরে আসেন তিনি। রাজপরিবারের দায়িত্বভার ফের তুলে নেন নিজের কাঁধে। তবে রাজ-উপাধি আর পুরোপুরি ফেরত পাননি।
‘রানির মেয়ে’ হিসেবে সম্বোধন করা হত তাঁকে। বিয়ে ভাঙার ঝড় কাটতে না কাটতেই ২০০৪ সালে সুনামিতে হারান ছেলেকে। এর পর থেকে একাধিক প্রচারমূলক কাজে নিজেকে ব্যস্ত রাখতেন তিনি। তরুণ প্রজন্মের মধ্যে মাদক-বিরোধী প্রচার চালান রাজকন্যা।
[ লাহোরে ভারত বিরোধী মিছিলে হাফিজ, পাকিস্তানকে কড়া হুঁশিয়ারি নয়াদিল্লির ]
The post থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী পদে রাজকন্যা! বাধা সহোদরের appeared first on Sangbad Pratidin.