শ্রীকান্ত পাত্র, ঘাটাল: ফেসবুক ফ্রেন্ড। এক আধ বছরের নয়, চার বছরের। কোথায় চন্দ্রকোনার গোঁসাইবাজার আর কোথায় থাইল্যান্ডের গ্রাম ইয়ুং ওয়াঙ। কয়েক হাজার মাইল পাড়ি দিয়ে শুক্রবার হাজির দুই থাই বান্ধবী। কেউ কারও ভাষা জানেন না। এমনকি কেউই ইংরেজিও নয়। সবই চলছে আকারে-ইঙ্গিতে। দুই থাই বান্ধবী থাই ভাষায় কথা বলছেন, তো চন্দ্রকোনার দম্পতি বলছেন বাংলায়। ফলে সমস্যায় পড়েছেন দুই পক্ষই। না, তাতেও কোনও সমস্যা নেই। কারণ হাতের সামনে রয়েছে মোবাইল অ্যাপস। মোবাইল অ্যাপসের মাধ্যমে দুই পক্ষের ভাষা অনুবাদ হয়ে চলে যাচ্ছে দু’জনের কাছে। সে এক ভারি মজার বন্ধুত্ব।
[ আরও পড়ুন: মোহনবাগানের আদলে উপনয়নের অনুষ্ঠান, চমক সবুজ-মেরুন সমর্থক পরিবারের]
বছর চারেক আগে ফেসবুকের মাধ্যমে পরিচয় হয় থাইল্যান্ডের এক দম্পতির সঙ্গে চন্দ্রকোনার গোঁসাই বাজারের এক দম্পতির। মানিক অধিকারী আর তাঁর স্ত্রী দেবযানী অধিকারী। চন্দ্রকোনার গোঁসাইবাজারে মোবাইল সারানোর দোকান চালান মানিকবাবু। মোবাইলে ফেসবুক হোয়াটসঅ্যাপ তাঁর কাছে জলভাত। তাঁর স্ত্রী দেবযানী অধিকারী সোনারপুর এলাকায় থাকতেন। ফেসবুকেই দু’জনের সঙ্গে আলাপ প্রেমম পিমুব আর ডামং পিমুবের। প্রোমম পিমুবের স্বামী ডামং পিমুব থাইল্যান্ডের এক পদস্থ পুলিশ অফিসার। সময় পেলেই ফেসবুক লাইভে কথা বলেন দুই দম্পতি। মোবাইল অ্যাপসের অনুবাদ পদ্ধতিতে চলে কথোপকথন। এক সময় বন্ধুত্বের টানে মানিকবাবু চলে গিয়েছিলেন সোজা থাইল্যান্ডের ইয়ুং ওয়াঙ গ্রামে। রাজধানী ব্যাংকক থেকে প্রায় আড়াইশো কিলোমিটার দূরে ইয়ুং ওয়াঙ গ্রাম। আটদিন সেখানে ছিলেন চন্দ্রকোনার দম্পতি।
থাই দম্পতির আতিথেয়তায় মুগ্ধ হয়ে মানিকবাবু তাঁদের আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন নিজের বাড়িতে। সেই আমন্ত্রণ পেয়ে শুক্রবার মানিকবাবুর বাড়িতে হাজির হন প্রেমম পিমুব। তাঁর স্বামী ডামং পিমুব অবশ্য আসতে পারেননি। এসেছেন পোমম পিমুব ও তাঁর এক বান্ধবী চুচীপ পুৎসোনা পাকদু। একজনের বয়স ৫৩, আর অন্যজনের বয়স ৬৪। দমদম বিমানবন্দরে তাঁদের আনতে গিয়েছিলেন মানিকবাবু ও তাঁর স্ত্রী দেবযানীদেবী। চন্দ্রকোনা শহরের গোঁসাইবাজারে দুই থাই মহিলা এখন অধিকারী দম্পতির বান্ধবী কাম অতিথি। দুই বিদেশিনির আতিথেয়তায় কোনও ত্রুটি রাখেননি মানিকবাবু ও দেবযানীদেবী। ভারতীয় খাবার তাঁদের না-পসন্দ। ভিনদেশী অতিথিদের জন্য আলাদার রান্নার ব্যবস্থা করেছেন অধিকারি দম্পতি। দুই থাই বান্ধবী চন্দ্রকোনায় থাকবেন চার মে পর্যন্ত। দেবযানীদেবী বলেন, “ সরাসরি কথা বলতে না পারলেও ওঁদের ব্যবহারে আমরা খুবই খুশি। আকার ইঙ্গিতে সবই বুঝতে পারি। তার উপর মোবাইল অ্যাপস তো রয়েইছে।” এদিকে বিদেশিনিদের দেখতে অধিকারি দম্পতির বাড়িতে ভি়ড় জমিয়েছে প্রতিবেশীরাও।
ছবি: সুকান্ত চক্রবর্তী
[ আরও পড়ুন: বিয়ের বেশেই ভোটের লাইনে, দায়িত্ব পালনে অন্যদের উৎসাহ দিলেন দুই নববধূ]
The post বন্ধুত্বের টান! থাইল্যান্ড থেকে চন্দ্রকোনায় হাজির দুই বান্ধবী appeared first on Sangbad Pratidin.