সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বিশ্বের এক নম্বর সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইট ফেসবুকের সহ-প্রতিষ্ঠাতা ও সিইও মার্ক জুকারবার্গকে দ্বিতীয় দফার প্রশ্নোত্তর পর্ব শেষ করেছে মার্কিন সেনেট! ক্যাপিটাল হিলসে সেনেটের প্রায় শ’খানেক সদস্য তাঁকে ১০ ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে একের পর এক প্রশ্নবাণে বিদ্ধ করেছেন। কিন্তু জুকারবার্গ অবিচল। একদা সংবাদমাধ্যমকে এড়িয়ে চলতেই স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করতেন যে জুকারবার্গ, তিনিই বুধবার দু’দফায় ১০ ঘণ্টা লাগাতার প্রশ্নোত্তর পর্বে অভিব্যক্তিহীন মুখে বসে রইলেন। যা দেখেশুনে মার্কিন মিডিয়ারই একাংশের সহাস্য প্রশ্ন, ইনি সত্যি জুকারবার্গ নাকি তাঁর রোবট?
Tonight at 11/10c, Mark Zuckerberg spends four hours explaining Facebook to senior citizens. pic.twitter.com/bQPR1lsMbD
— The Daily Show (@TheDailyShow) April 11, 2018
প্রথমে প্রশ্নটা তুলেছিলেন সে দেশের জনপ্রিয় শো ‘দ্য ডেইলি শো’-এর উপস্থাপক ট্রেভর নোয়াহ। মঙ্গলবার রাতে তিনি তাঁর শোয়ে মন্তব্য করেন, ‘জুকারবার্গকে যতই প্রশ্ন করা হোক না কেন, আমি নিশ্চিত সেখান থেকে কোনও নতুন তথ্যই পাওয়া যাবে না। কারণ, জুকারবার্গ তো নিজে আসেননি। তিনি পাঠিয়েছেন তাঁরই মতো দেখতে এক রোবটকে। ভাল করে দেখুন, আপনিও বুঝতে পারবেন।’ এখানেই না থেমে ফেসবুকের সহ-প্রতিষ্ঠাতাকে নিয়ে হাস্যরসের ঝড় তোলেন নোয়া। বলেন, ‘সেনেটের সামনে মার্কের স্বীকারোক্তি আমাকে ছোটবেলার স্কুলের স্মৃতি ফিরিয়ে দিচ্ছে। যেন প্রিন্সিপাল ডেকেছে, আর অবাধ্য ছাত্রটি মাথা নিচু করে তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগগুলি শুনছে।’ মার্কিন সেনেটকেও কটাক্ষ করতে ছাড়েননি জনপ্রিয় এই উপস্থাপক। বলছেন, ‘জুকারবার্গের সবচেয়ে বড় শাস্তি হয়ে গিয়েছে। গত চারঘণ্টা ধরে সিনিয়র সিটিজেনদের বোঝাতে হয়েছে ফেসবুক আসলে কী? খায় না মাথায় দেয়!’
Facebook unveils new, lifelike Mark Zuckerberg ahead of today’s hearing. pic.twitter.com/OaTTZsgAtD
— The Daily Show (@TheDailyShow) April 10, 2018
তবে দফার প্রশ্নোত্তর আরও কঠিন ছিল মার্কের সামনে। কারণ, এই দফায় বুধবার হাউস এনার্জি অ্যান্ড কমার্স কমিটির সামনে প্রায় পাঁচ ঘণ্টা তাঁকে কেমব্রিজ অ্যানালেটিকার তথ্য চুরির নিয়ে একের পর এক প্রশ্নের উত্তর দিতে হয়। এই দফায় একবার মার্ক স্বীকার করে নেন, তাঁর মস্ত বড় ভুল হয়ে গিয়েছে। তিনি তাঁর দায়িত্ব ঠিকভাবে পালন করেননি। এর আগে প্রথম দফায় সেনেটের ৪৪ জন সদস্যের প্রশ্নোত্তর পর্বেও জুকারবার্গ একই স্বীকারোক্তি দেন। প্রতিবারই তাঁর মুখের অভিব্যক্তি, চোয়ালের নড়াচড়া একইরকম থেকেছে। একবারের জন্যও তাঁকে চিন্তিত বলে মনে হয়নি। কপালের চামড়া কুঁচকে যায়নি, চোখের পাতাও ওঠানামা করেনি। জুকারবার্গের এই বডি ল্যাঙ্গুয়েজ বিশ্লেষণ করেই নেটদুনিয়ার একাংশ তাঁকে রোবট আখ্যা দিয়েছেন। কেউ কেউ টুইটারে লিখছেন, ফেসবুকের সদর দপ্তরে বসে জুকারবার্গ আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স ব্যবহার করে তাঁরই মতো দেখতে রোবটকে জিজ্ঞাসাবাদের মুখোমুখি হয়ে পাঠিয়েছেন। দেখে নিন সেই সব মজাদার টুইট।
তবে সব শেষে বলে রাখা ভাল, জুকারবার্গ আশ্বাস দিয়েছেন, এখন থেকে তাঁর সংস্থা ইউজারদের তথ্য গোপন রাখার বিষয়ে আরও গুরুত্ব দেবে। গ্রাহকদের কাছ থেকে ন্যূনতম তথ্যই চাওয়া হবে ফেসবুক করার সময়। সেই সঙ্গে সংস্থার অন্যান্য অ্যাপ যেমন হোয়াটসঅ্যাপ, ইনস্টাগ্রামেও তথ্য সুরক্ষিত রাখার দিকে বাড়তি নজর দেওয়া হবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন মার্ক। দেখুন সেই ভিডিও:
The post প্রশ্নোত্তর পর্বে সেনেটের মুখোমুখি কি জুকারবার্গের রোবট? জল্পনা ঘিরে তোলপাড় appeared first on Sangbad Pratidin.