সুমিত বিশ্বাস, পুরুলিয়া: ফের তৃণমূলের (TMC) অন্দরে ভাঙন। এবার দল ছাড়লেন পুরুলিয়ার সাধারণ সম্পাদক সমীরচন্দ্র মাহাতো। ভোটের মুখে লাগাতার দলত্যাগ অস্বস্তি বাড়িয়েছে শাসকদলের।
একটা সময়ে কংগ্রেস নেতা নেপাল মাহাতোর অনুগামী ছিলেন সমীরচন্দ্র মাহাতো। ২০১৫ সালের ১৩ ডিসেম্বর অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাত ধরে তৃণমূলে যোগ দেন তিনি। সেই দিনই ঝালদা ১ নম্বর পঞ্চায়েত সমিতি তৃণমূলের হয়েছিল। নেপথ্যে ছিলেন সমীরবাবু। পরবর্তীতে কংগ্রেসের গড় বলে পরিচিত বাঘমুন্ডিতে তৃণমূলের অস্তিত্ব প্রতিষ্ঠা করেন সমীরবাবু। যার পুরস্কার হিসেবে ২০১৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে বাঘমুন্ডি থেকে তাঁকেই প্রার্থী করেছিল দল। কিন্তু ঘাসফুল শিবিরের অন্তর্কলহের কারণে পরাজিত হন তিনি। পরবর্তীতে ঝালদা ১ নম্বর ব্লক তৃণমূলের চেয়ারম্যান করা হয় তাঁকে। গত বছর তৈরি জেলা কমিটিতে সাধারণ সম্পাদক পদে ছিলেন তিনি। প্রশান্ত কিশোর ভোটের কাজ শুরু করে তাঁকেই ‘পয়েন্টস অব কন্টাক্ট’ করেছিলেন। কিন্তু ২ থেকে ৩ দিনের মধ্যেই সমীরবাবুকে সেই দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়। যা থেকে দলের প্রতি ক্ষোভ তৈরি হয় সমীরবাবুর মনে। এরপরই দলত্যাগের সিদ্ধান্ত নেন তিনি। এদিন সমীরবাবু বলেন, “দলের জন্য প্রচুর করেছি। কিন্তু কোনওদিন সম্মান পাইনি, উলটে অপমান করা হয়েছে। তাই আপাতত আমি রাজনীতি থেকে বিরতি নিচ্ছি।” এবিষয়ে জেলা তৃণমূলের সভাপতি গুরুপদ টুডু জানিয়েছেন, তিনি এখনও কোনও ইস্তফাপত্র পাননি।
[আরও পড়ুন: ভোটের আগে বাংলার রেল পরিষেবার উন্নয়নে ‘ঐতিহাসিক বরাদ্দ’, টুইটে দাবি রেলমন্ত্রীর]
শেষ কয়েকমাস ধরে যেন দলত্যাগের হিড়িক পড়েছে তৃণমূলে। প্রথমে দলের প্রতীক ছাড়া সভা করে দলবদলের জল্পনা উসকে দিয়েছিলেন প্রাক্তন পরিবহণ মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari)। পরবর্তীতে মন্ত্রিত্ব, বিধায়ক ও তৃণমূলের প্রাথমিক সদস্যপদ ত্যাগ করে বিজেপিতে যোগ দেন তিনি। তাঁর সঙ্গে এক সাংসদ ও বেশ কয়েকজন বিধায়ক যোগ দিয়েছেন পদ্ম শিবিরে। পরবর্তীতে মন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ও দল ছেড়েছেন। যোগ দিয়েছেন বিজেপিতে। হাওড়া -সহ রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তের তৃণমূলের একাধিক তাবড় নেতা-নেত্রী দলের সঙ্গে সম্পর্কচ্ছেদ করেছেন। যদিও শাসকদল বারবারই জানিয়েছে, দলত্যাগ ভোটে কোনও প্রভাবই ফেলবে না।