রূপায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়: সুপার সাইক্লোন আমফানের থাবায় ক্ষতিগ্রস্ত শিবপুর বোটানিক্যাল গার্ডেনের শতাব্দীপ্রাচীন সেই বটগাছ। ঐতিহাসিক এই উদ্যানের অন্যতম প্রধান আকর্ষণ এই মহা বটবৃক্ষ। আড়াইশো বছরের প্রাচীন এই বটগাছকেও এবার ছাড়ল না অতি শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় আমফান।
আড়াই শতক পেরনো গাছটির পরিধি ৩০০ মিটার। সুবিশাল বটগাছটি দেড় একর জমির উপর শত শত ঝুরি নিয়ে আজও বিরাজমান। সেই গর্বের বটবৃক্ষটির পুরনো অংশের ক্ষতি হয়েছে সবচেয়ে বেশি। বহু প্রাচীন গুঁড়ি, যা কার্যত কাণ্ডের চেহারা নিয়েছে, তার অধিকাংশই ক্ষতিগ্রস্ত। শতাব্দীপ্রাচীন বটগাছের ক্ষতির বিষয়টি স্বীকার করেছেন গার্ডেনের জয়েন্ট ডিরেক্টর কণাদ দাস। তবে শুধু এই বটগাছই নয়, উদ্ভিদ উদ্যানের পাঁচশোর বেশি দেশি-বিদেশি মূল্যবান গাছ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বেসরকারি হিসেব অনুযায়ী, এই সংখ্যা হাজার। ক্ষতির পরিমাণ বিপুল। উদ্যান কর্তৃপক্ষের তরফে কেন্দ্রীয় সরকারের পরিবেশ ও বনমন্ত্রকের অধীন বোটানিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়ার কাছে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নিয়ে শুক্রবার বিস্তারিত রিপোর্ট পাঠিয়েছেন জয়েন্ট ডিরেক্টর।
[আরও পড়ুন: করোনাতঙ্ক ছাপিয়ে আমফানের ছোবলে অনিশ্চিত ভবিষ্যতের মুখে বাদাবনের মানুষ]
পোশাকি নাম আচার্য জগদীশচন্দ্র বসু বোটানিক্যাল গার্ডেন। শিবপুর বি গার্ডেন নামেই অধিক পরিচিত এই বিশাল উদ্যান। ২৭৩ একর জমিতে এই বিশাল উদ্যান। ১৪০০ প্রজাতির প্রায় ১৭ হাজার গাছ রয়েছে। মেহগনি, শাল, সেগুন, অশ্বত্থ, শিমুল, পিয়াল-সহ বহু গাছ এখানকার শোভাবর্ধক। আয়লার থেকেও এবার আমফান ঝড়ের দাপট ভয়ংকর ছিল বলে মনে করছেন উদ্যানের কর্মীরা। মেহগনি, শাল, শিরীষ, গ্রেট বেনিয়ন ট্রি-সহ বহু মূল্যবান গাছ ভেঙে পড়েছে। এখানে রয়েছে দুষ্প্রাপ্য গাছও। শিকড় সমেত উপড়ে গিয়েছে সেসব। গার্ডেনের মধ্যের রাস্তার উপর পড়ে রয়েছে ভেঙে কিংবা উপড়ে যাওয়া গাছের ডালপালা। ক্ষতি অপরিসীম বলে দাবি বোটানিক্যাল গার্ডেন কর্তৃপক্ষের। ক্ষতির পরিমাণ পরীক্ষা করে কেন্দ্রীয় পরিবেশ ও বনমন্ত্রকে রিপোর্ট পাঠানো হয়েছে। গার্ডেনকে আগের অবস্থায় ফিরিয়ে আনার পরিকল্পনাও শুরু হয়েছে। ঝড়ে বহু গাছের ক্ষতি হওয়ায় উদ্বিগ্ন স্থানীয় বাসিন্দারা। একাধিক পরিবেশপ্রেমী সংগঠনও উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।
[আরও পড়ুন: বিশ্বের ২৬ ভয়ঙ্কর ঘূর্ণিঝড়ের উৎপত্তিস্থল বঙ্গোপসাগরই, জানেন কেন?]
The post শতাব্দীপ্রাচীন বটগাছেরও শিকড়ে টান দিল শক্তিশালী আমফান, তছনছ বোটানিক্যাল গার্ডেন appeared first on Sangbad Pratidin.