নন্দিতা রায়: সবচেয়ে বেশি ফৌজদারি মামলা রয়েছে রাজ্যসভার বিজেপি সাংসদদের বিরুদ্ধে। এমনকী, রাজ্যসভার যে দুই সাংসদের বিরুদ্ধে খুনের মতো গুরুতর ফৌজদারি মামলা রয়েছে, তাঁরাও বিজেপিরই সাংসদ। শুক্রবার অ্যাসোসিয়েশন ফর ডেমোক্রেটিক রিফর্মস (এডিআর) এবং ন্যাশনাল ইলেকশন ওয়াচের (এনইডব্লিউ) রিপোর্ট থেকে এই তথ্য উঠে এসেছে।
রাজ্যসভার সাংসদদের জমা দেওয়া হলফনামার উপর ভিত্তি করে ওই দুই সংস্থার তরফে যে রিপোর্ট তৈরি করা হয়েছে, তাতে রাজ্যসভার ২২৫ জন সাংসদের মধ্যে ৭৫ জনের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা রয়েছে। তালিকায় সবচেয়ে বেশি রয়েছেন বিজেপি সাংসদরাই। রাজ্যসভায় বিজেপির ৮৫ জন সাংসদের মধ্যে ২৩ জনের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা রয়েছে। যার মধ্যে ১২ জনের বিরুদ্ধে রয়েছে গুরুতর ফৌজদারি মামলাও। উত্তরপ্রদেশ থেকে নির্পাচিত বিজেপি সাংসদ রাধামোহন দাস আগরওয়াল এবং মহারাষ্ট্রের শ্রীমন্ত ভোসলের বিরুদ্ধে খুনের মামলা রয়েছে। আবার মহারাষ্ট্র থেকে বিজেপি সাংসদ ভি মুরলীধরণ, যিনি আবার কেন্দ্রীয় মন্ত্রীও এবং অনিল শুকদেওয়া বন্দের বিরুদ্ধে খুনের চেষ্টার মতো ফৌজদারি মামলা রয়েছে।
[আরও পড়ুন: আবারও প্রকাশ্যে আপ এবং কংগ্রেসের কাজিয়া, ফের প্রশ্নে INDIA জোটের ভবিষ্যৎ]
পাশাপাশি, বিজেপির বাকি সাংসদদের বিরুদ্ধে যে সমস্ত গুরুত্বপূর্ণ ফৌজদারি মামলা রয়েছে তাতে অপহরণ, জুলুম করে টাকা আদায়ের মতো অভিযোগ রয়েছে। আবার রাজ্যসভার যে চারজন সাংসদের বিরুদ্ধে নারী নির্যাতন সংক্রান্ত মামলা রয়েছে, তার মধ্যে রয়েছে রাজস্থান থেকে নির্বাচিত কংগ্রেস সাংসদ কে সি বেণুগোপালেরও নাম। রাজ্যসভায় কংগ্রেসের ৩০ জন সাংসদের মধ্যে ১২ জনের বিরুদ্ধে এবং তৃণমূল কংগ্রেসের ১৩ জনের মধ্যে চারজনের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা রয়েছে । আবার বিজেপি শাসিত রাজ্য মহারাষ্ট্র থেকে সর্বাধিক সংখ্যক রাজ্যসভা সাংসদের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা রয়েছে। তার পরেই রয়েছে বিহার এবং উত্তরপ্রদেশ।
দুর্নীতি, অপরাধ ইত্যাদি নিয়ে সরব বিজেপি। বারবার বিরোধীদের এই ইস্যুতে তারা আক্রমণ করে। কিন্তু কেন্দ্রের শাসক দলে অপরাধীদের জায়গা পাওয়া অবশ্য নতুন কিছু নয়। কেন্দ্রের নরেন্দ্র মোদির মন্ত্রিসভার ৩৩ জন সদস্যের বিরুদ্ধে অপরাধমূলক কাজে যুক্ত থাকার অভিযোগ রয়েছে। যা মোট মন্ত্রী সংখ্যার ৪২ শতাংশ। সেই তথ্য ২০২১ সালের জুলাই মাসে উপরোক্ত দুই সংস্থার রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছিল। সেখানে আরও বলা হয়েছিল, মন্ত্রীদের মধ্যে ২৪ জনের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ রয়েছে। শতাংশের নিরিখে যা মোট মন্ত্রী সংখ্যার ৩১ শতাংশ । গুরুতর অভিযোগ বলতে খুন, খুনের চেষ্টা এবং ডাকাতির সঙ্গে যুক্ত থাকার মামলাও রয়েছে। সবথেকে বেশি যে চারজন মন্ত্রীর বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে, তাঁরা প্রত্যেকেই বিজেপির সাংসদ। এই তালিকায় প্রথমেই রয়েছেন আলিপুরদুয়ারের বিজেপি সাংসদ জন বার্লা। তার পরেই রয়েছেন রাজ্যের আরেক বিজেপি সাংসদ কোচবিহারের নিশীথ প্রামাণিক। খুনের মামলা রয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে। রাজ্যসভার বর্তমান সংসদদের মধ্যে ১২ শতাংশই কোটিপতি। তালিকায় সর্বাগ্রে রয়েছেন অন্ধ্রপ্রদেশ এবং তেলেঙ্গানার সাংসদরা। তেলেঙ্গানার সাত সংসদের মোট সম্পত্তির পরিমাণ ৫,৫৯৬ কোটি। অন্ধ্রপ্রদেশের ১১ সংসদের মোট সম্পত্তির পরিমাণ ৩,৮২৩ কোটি টাকা।