সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: রূপে যতই মুগ্ধ হোন, চন্দ্রপৃষ্ঠ সম্পর্কে খুঁটিনাটি অঙ্ক কিন্তু মোটেই স্বস্তি দিচ্ছে না। সম্প্রতি চিনা ও জার্মানির মহাকাশ গবেষক দলের একটি রিপোর্ট শোনাচ্ছে বিপদবার্তা। বলা হচ্ছে, চন্দ্রপৃষ্ঠে নাকি প্রতি মুহূর্তে তরঙ্গের বিকিরণ (Radiation) ঘটে চলেছে অতি উচ্চমাত্রায়। পৃথিবীর তুলনায় তা প্রায় হাজার গুণ শক্তিশালী তরঙ্গ আছড়ে পড়ছে চাঁদের (The Moon) বুকে। সুরক্ষা বর্ম ছাড়া চাঁদে কিছুক্ষণ সময় কাটালেই মানুষের শরীরে তার ব্যাপক প্রভাব পড়বে। ভবিষ্যতের চন্দ্র অভিযাত্রীদের এভাবেই সতর্ক করে দিল চিনা ল্যান্ডার চ্যাং’ই ৪।
এই প্রথমবার চ্যাং’ই ৪-এর পাঠানো তথ্য থেকে চন্দ্রপৃষ্ঠের বিকিরণ পরিমাপ করতে সক্ষম হয়েছেন বিজ্ঞানীরা। চিনা এবং জার্মানির বিজ্ঞানীদের সেই অঙ্ক দেখে স্তম্ভিত নাসাও (NASA)। জার্মান মহাকাশ বিজ্ঞানী থমাস বার্জার বলছেন, ”এটা আমাদের কাছে বড় প্রাপ্তি যে প্রথমবার আমরা বিকিরণ মাত্রা ঠিকমতো মাপতে পারলাম।” কখনও ভাবাই হয়নি যে চন্দ্রপৃষ্ঠ এতটা বিপজ্জনক। বিজ্ঞানীদের ব্যাখ্যা, চাঁদকে ঘিরে কোনও বায়ুমণ্ডল না থাকায় সৌর বিকিরণ সরাসরি আছড়ে পড়ে চাঁদের বুকে। কোনও বাধা তৈরি হয় না। আর এই বিকিরণের ঝড়ে ধীরে ধীরে চন্দ্রপৃষ্ঠও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। আরও প্রকট হচ্ছে গহ্বরগুলি।
[আরও পড়ুন: বছর চারেকের মধ্যেই প্রথমবার চাঁদে পা রাখবেন কোনও মহিলা! ঐতিহাসিক ঘোষণা নাসার]
শুধু তাইই নয়, হাতে আসা তথ্য বিশ্লেষণ করে বিজ্ঞানীদের আরও সতর্কবার্তা, শূ্ন্যে থাকা আন্তর্জাতিক স্পেস স্টেশনের (ISS) নভোশ্চরদেরও সেই বিকিরণের ঝাপটা সহ্য করতে হয়। তবে তা কিছুটা কম। এমনকী আটলান্টিক মহাসাগরের উপর দিয়ে যে বিমানগুলি যাতায়াত করে, সেই অঞ্চলেও ভূপৃষ্ঠের চেয়ে বেশি বিকিরণ হয়।
আগামী চার বছরের মধ্যে চন্দ্রাভিযানে নাসা পাঠাচ্ছে এক মহিলাকে। খুব বেশি সময়ের জন্য নয়, অল্প কিছুক্ষণ তিনি চাঁদের মাটিতে ঘুরে বেড়িয়ে কিছু নুড়ি-পাথর ও অন্যান্য নমুনা সংগ্রহ করবেন। তবে তার আগে চাঁদের প্রকৃতির বিস্তারিত জানতে চ্যাং’ই৪-এর সাহায্য নিয়েছিল নাসা। তা থেকে পাওয়া তথ্যে হাতে পেয়ে নতুন করে ভাবতে হচ্ছে তাবড় বিজ্ঞানীদের।
[আরও পড়ুন: রাশিয়ার করোনা ভ্যাকসিনে সমস্যা! ট্রায়ালে অনেকের শরীরেই দেখা গেল পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া]
দেখা যাচ্ছে, চন্দ্রপৃষ্ঠে কিছুক্ষণ থাকলেই ওই তীব্র তরঙ্গের বিকিরণ শরীরের ক্ষতি করতে শুরু করবে। তাতে ক্যানসারে প্রবল আশঙ্কা রয়েছে। এই মুহূর্তে যেসব স্পেসস্যুট ব্যবহৃত হচ্ছে, তার চেয়ে কয়েকগুণ পুরু করে নতুন স্পেসস্যুট তৈরি করতে হবে, যাতে তা ভেদ করে সরাসরি মানবশরীর স্পর্শ করতে না পারে ওই মারণ তরঙ্গ। তাঁদের এসব পরামর্শমতো ২০২৪এ চন্দ্রাভিযানের আগে ফের নতুন করে পরিকল্পনায় বসতে হচ্ছে নাসাকে।
The post রূপ স্নিগ্ধ হলেও বিকিরণের মারাত্মক ঝলকানি চাঁদের বুকে! গবেষণায় উদ্বেগের নয়া তথ্য appeared first on Sangbad Pratidin.