জ্যোতি চক্রবর্তী, বনগাঁ: বেড়েছিল দূরত্ব। প্রেমিকার সঙ্গে সম্পর্ক রাখবেন না বলেই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন যুবক। কিন্তু আদালতের হস্তক্ষেপে জিতে গেল তরুণীর ভালবাসা। ভরা আদালতে সাত পাঁকে বাধা পড়লেন যুগল। আইনজীবীদের সাক্ষী রেখে তরুণীর সিঁথিতে সিঁদুর তুলে দিল প্রেমিক। ঘটনাটি উত্তর ২৪ পরগনার বনগাঁর (Bangaon)।
ঘটনার সূত্রপাত বছরখানেক আগে। সোশ্যাল মিডিয়ায় গোলাপনগরের বাসিন্দা যুবতীর পরিচয় হয়েছিল নদিয়ার রানাঘাটের উত্তর সরকারের। রাজ্য পুলিশে কর্মরত ওই যুবক। জানা গিয়েছে, চ্যাট থেকেই ধীরে ধীরে ওই যুবতীর সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা বাড়ে উত্তমের। প্রেমিকাকে নিয়ে বিভিন্ন জায়গায় ঘুরতে যায় ওই যুবক। অভিযোগ, বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে সহবাসও করে। যার জেরে ওই যুবতী অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ে। উত্তমকে বিষয়টি জানাতেই বিয়েতে বেঁকে বসে উত্তম। এরপরই ২২ মার্চ ওই তরুণী উত্তমের বিরুদ্ধে গোপালনগর থানায় ধর্ষণের অভিযোগ দায়ের করে।
[আরও পড়ুন: অভিনব ব্যাংক প্রতারণা, রাতারাতি উধাও ফিক্সড ডিপোজিটের লক্ষাধিক টাকা, জানেনই না গ্রাহক]
বিষয়টি জানার পরই কর্মস্থল থেকে ছুটি নিয়ে পালিয়ে যায় উত্তম। প্রায় তিনমাস পর্যন্ত বিভিন্ন জায়গায় গা-ঢাকা দিয়ে ছিল। খবর পেয়ে অবশেষে নদিয়ার নবদ্বীপ থেকে অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। ১০ই আগস্ট বনগাঁ মহকুমা আদালতে তোলা হয় তাকে। বনগাঁ আদালতের এডিজে শান্তনু মুখোপাধ্যায়ের এজলাসে বিচার শুরু হয়। এরপরই অভিযুক্ত যুবক ও যুবতী পরস্পরকে বিয়ে করার কথা জানিয়ে আদালতে হলফনামা জমা দেয়।
বনগাঁ মহকুমা আদালতের আইনজীবী প্রদীপ চট্টোপাধ্যায় বলেন, “অভিযুক্তের আইনজীবী আমাদের কাছে আমার মক্কেলকে বিয়ের কথা বলে। তখন আমরা বেশ কিছু শর্ত দিয়েছিলাম। ওরা তা মেনে নিয়েছে। কথা দিয়েছে ওই যুবতীকে সামাজিক ও সরকারিভাবে স্ত্রীর মর্যাদা দেওয়ার। দু’পক্ষের আবেদনে সম্মতি দেয় বিচারক। “বনগাঁ আদালতের সরকারি আইনজীবী সমীর দাস বলেন, “অভিযুক্ত গর্ভস্থ সন্তানের পিতৃত্ব স্বীকার করে নিয়েছেন। পরিবার সন্তানকে অস্বীকার করবে না বলে জানিয়েছে।” বুধবার আদালত চত্বরেই বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হলেন উত্তম ও ওই যুবতী।