শান্তনু কর, জলপাইগুড়ি: গোঁফের আমি গোঁফের তুমি, তাই দিয়ে যায় চেনা। সুকুমার রায় তাঁর 'গোঁফ চুরি'তে তাই লিখেছিলেন। তবে জলপাইগুড়ির এই চোরকে চেনা যাবে অন্য উপায়ে। সে নাকি 'আসামী পার্টি'র লোক। শুধু চুরি করেই ক্ষান্ত নয় সেই চোর বাবাজি। দিয়ে গিয়েছে প্রাণে মারার হুমকিও। যা নিয়ে রীতিমতো আতঙ্কে জলপাইগুড়ির ধূপগুড়ির সরকার পরিবার।
দরজা হাট করে খোলা। ঘরের ভেতর আলমারি, আলনা সব এলোমেলো। নেই টাকাকরি। খোয়া গিয়েছে গহনা। মঙ্গলবার ভোরে ঘুম থেকে উঠে বাড়ির এই অবস্থা দেখেন জলপাইগুড়ির (Jalpaiguri) ধূপগুড়ির দক্ষিণ আলতা গ্রামের বাসিন্দা মাধবী সরকার। বুঝতে পারেন বাড়িতে চুরি হয়েছে। এই পর্যন্ত ঠিক ছিল! তারপরই বিছানার পাশ থেকে উদ্ধার হয় একটি চিঠি। তাতেই আতঙ্কিত হয়ে পড়ে সরকার পরিবার। চিঠিতে লেখা আছে, নির্বাচনে জায়গা মতো ভোট দেননি। শাস্তি হিসেবে গ্রাম ছাড়তে হবে ছেলে ও বউমাকে। না হলে প্রানে মেরে ফেলা হবে। নিজেকে আসামি পার্টির লোক বলে দাবি করে তিন দিন সময় বেধে দিয়েছে চোর।
[আরও পড়ুন: সুস্থ হয়েও হাসপাতালের চারতলা থেকে মরণঝাঁপ যুবকের! উদ্ধার রক্তাক্ত দেহ, চাঞ্চল্য ঝাড়গ্রামে]
আলতা গ্রামের ব্যবসায়ী বিশ্বজিৎবাবু। একঘরে স্ত্রী মাধবীকে নিয়ে থাকেন বিশ্বজিৎবাবু। পাশের ঘরে ছেলে আর বউমা। সকালে প্রথমে ঘুম ভাঙে বিশ্বজিৎ বাবুর স্ত্রী মাধবী সরকারের। দেখেন আলমারির লকার খুলে গয়নার বাস্ক নিয়ে চম্পট দিয়েছে চোর। ঘরের ভেতর এতো বড় কাণ্ড, তার পরেও ঘুম না ভাঙায় ধন্দে পরিবার। তাঁদের অনুমান খাবারের সঙ্গে অথবা ঘরের ভেতর কিছু স্প্রে করে ঘুম পাড়িয়ে চুরি করে পালিয়েছে চোর।
বিশ্বজিৎবাবুর বলেন, "আমরা সাধারণ ব্যবসায়ী পরিবার। সামান্য কৃষি জমি আছে। বাপ ছেলে মিলে সামান্য ব্যবসা করে খাই। কারও সঙ্গে বিবাদ নেই।" স্বাভাবিক ভাবেই হুমকি ভরা এই চিঠি পেয়ে দুশ্চিন্তায় গোটা পরিবার। চিঠিতে ছেলে, বউমাকে বাড়ি ছাড়ার ফতোয়া দেওয়ায় মানসিক ভাবে ভেঙে পড়েছেন মাধবীদেবী। পরিবারের আত্মীয় হীরেন্দ্রনাথ সরকার বলেন, "এক ভরির মতো সোনার গয়না চুরি গিয়েছে। তাতে যতনা ক্ষতি হয়েছে তার চাইতে বেশি প্রভাব বিস্তার করেছে চোরের লেখা ওই চিঠি। মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছে গোটা পরিবার।" ঘটনার তদন্তে নেমেছে ধূপগুড়ি (Dhupguri) থানার পুলিশ।