সুকুমার সরকার, ঢাকা: ফের ভাসানচরে পাঠানো হল ৩ হাজার রোহিঙ্গাকে। ১২ দফায় প্রথম অংশে কক্সবাজার থেকে নোয়াখালির ভাসানচরে ৩ হাজার রোহিঙ্গাকে পাঠানো হল। বুধবার দুপুরে ১৪টি বাসে উখিয়া ডিগ্রি কলেজ মাঠ থেকে ১৪০০ জন ভাসানচরের উদ্দেশে চট্টগ্রামে রওনা দেয়। বিকেলে ৩২টি বাসে আরও ১৬০০ রোহিঙ্গা ভাসানচরের উদ্দেশে রওনা দেয়। বৃহস্পতিবার নৌবাহিনীর জাহাজে করে তাদের ভাসানচরে পৌঁছনোর কথা।
উখিয়ার লম্বাশিয়া ক্যাম্প ছেড়ে স্ত্রী ও চার ছেলেমেয়ে নিয়ে ভাসানচরের পথে রওনা দিয়েছেন রোহিঙ্গা দিল মোহাম্মদ। তিনি বলেন, “উখিয়ায় আশ্রয় শিবিরে খুন, অপহরণের মতো ঘটনা লেগেই আছে। সন্ত্রাসবাদীরা যখন তখন হুমকি দেয়। সে কারণেই স্বেচ্ছায় ভাসানচরে চলে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।” রোহিঙ্গা সাইফুল আলম বলেন, “বর্ষাকালে উখিয়ার লম্বাশিয়া, জুমছড়ি, মধুরছড়া, বালুখালি আশ্রয় শিবিরে পাহাড় ধসের ঘটনা ঘটে। আবার ঘনবসতির কারণে আশ্রয় শিবিরে অগ্নিকাণ্ডও ঘটছে। নিরাপদ আশ্রয়ের জন্য ভাসানচরে যাচ্ছি।”
[আরও পড়ুন: ‘শ্রাবন্তী চালাক, যা দেওয়ার দিয়েছে, যা পাওয়ার পেয়েছে’, কেন এমন খোঁচা তথাগতর?]
অতিরিক্ত ত্রাণ ও শরণার্থী প্রত্যাবাসন কমিশনার শামসুদ্দৌজা নয়ন জানান, “১২ দফায় দুই অংশে ৩ হাজার রোহিঙ্গা ভাসানচরের উদ্দেশে উখিয়া থেকে রওনা দিয়েছে।” এদিকে, গত বছরের ডিসেম্বর থেকে ১১ দফায় প্রায় ২২ হাজার রোহিঙ্গাকে সরকার ভাসানচরে পাঠায়। এছাড়া গত বছর মে মাসে অবৈধভাবে মালয়েশিয়া যাওয়ার চেষ্টা করা ৩০৬ জন রোহিঙ্গাকে সমুদ্র থেকে উদ্ধার করে সেখানে রাখা হয়। স্বেচ্ছায় ভাসানচরে যেতে রাজি হওয়া রোহিঙ্গারা উখিয়া ডিগ্রি কলেজ মাঠ থেকে রওনা হয়।
৮ এপিবিএনের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কামরান হোসেন জানান, এবার তাঁর শিবির থেকে সাড়ে ৪০০ রোহিঙ্গা ভাসানচরে উদ্দেশে যাত্রা শুরু করেছে। অন্যবারের চেয়ে এবারের সংখ্যাটা বেশি। উখিয়া শরণার্থী ক্যাম্পে নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা কক্সবাজারের সশস্ত্র পুলিশ ১৪ ব্যাটেলিয়নের পুলিশ সুপার (এসপি) নাইমুল হক জানান, ১২ দফায় উখিয়া-টেকনাফের বিভিন্ন ক্যাম্প থেকে ৩ হাজার রোহিঙ্গা ভাসানচরে উদ্দেশে চট্টগ্রামের উদ্দেশে পাড়ি দিয়েছে।
প্রসঙ্গত, ২০১৭ সালের আগস্টে মায়ানমার সেনাবাহিনীর গণহত্যা ও নিপীড়নের মুখে ১৭ লক্ষ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে চলে আসেন। বর্তমানে প্রায় ১১ লক্ষ রোহিঙ্গা এখন কক্সবাজারে বসবাস করছে। কক্সবাজার থেকে ১ লক্ষ রোহিঙ্গাকে ভাসানচরে সরিয়ে নেওয়ার লক্ষ্যে একটি প্রকল্প নেয় সরকার। আশ্রয়ণ-৩ নামে প্রকল্পটি বাস্তবায়নের দায়িত্ব দেওয়া হয় বাংলাদেশ নৌবাহিনীকে।