ধ্রুবজ্যোতি বন্দ্যোপাধ্যায়: শুভেন্দুর ‘ডিসেম্বর’ তত্ত্বেই এবার তাঁকে আক্রমণে নামল তৃণমূল (TMC)। ডিসেম্বরে বঙ্গ রাজনাীতিতে চমকপ্রদ অনেক কিছু ঘটবে, বারবারই একথা শোনা গিয়েছিল বিরোধী দলনেতার গলায়। প্রসঙ্গক্রমে তিনি ১২, ১৪, ২১ ডিসেম্বর – এই তিনটি তারিখের কথা উল্লেখ করেছিলেন। আর ঘটনাচক্রে সোমবার অর্থাৎ ১২ ডিসেম্বর সিবিআই হেফাজতে থাকা বগটুই কাণ্ডের অন্যতম অভিযুক্ত লালন শেখের মৃত্যু হয়। এবার এই তারিখ নিয়েই শুভেন্দু অধিকারীর (Suvendu Adhikari) বিরুদ্ধে বড়সড় অভিযোগ তুললেন রাজ্যের মন্ত্রী তথা তৃণমূলের অন্যতম শীর্ষ নেত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য। মঙ্গলবার হাজরার সভা থেকে ‘লাল্টুস বাবু’ বলে কটাক্ষ করে তাঁর দাবি, ”তুমি জানতে ১২-এ কী হবে। জানতে, লালন শেখ মারা যাবে। আবার ১৩ না ১৪ জানুয়ারি বলছে। জানুয়ারিতেও কিছু হবে না, ফেব্রুয়ারিতেও হবে না। লালন শেখের মৃত্যু স্বাভাবিক মৃত্যু না। এর জবাব দিতে হবে। লাল্টুস বাবু জেনে থাকলে তিনিও বাদ যাবেন না।”
কেন্দ্রের বিমাতৃসুলভ আচরণ ও কেন্দ্রীয় টাকা না দেওয়ার প্রতিবাদে এদিন হাজরায় সভা করে তৃণমূল। দক্ষিণ কলকাতা জেলা তৃণমূলের তরফে সভায় বক্তব্য রেখেছেন শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়, চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য (Chandrima Bhattacharya), মালা রায়, ফিরহাদ হাকিম, অরূপ বিশ্বাসরা। সকলেরই নিশানায় সিবিআই, বিজেপি, বিরোধী দলনেতা। তৃণমূলের মুখপাত্র তথা রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ (Kunal Ghosh) সরাসরি শুভেন্দুকে আক্রমণ করে বলেন, ”বগটুইতে তোমরা ইস্যু করছিলে। আজ সে মারা গেল কী করে? সিবিআই-এর ব্যাপার। কিন্তু যে শুভেন্দু বলে, সিবিআই এই তারিখ এই করবে, তাহলে ১২ তারিখ শুভেন্দুর কথামতো এই হত্যাকাণ্ড হয়েছে কিনা, ওই স্কাউনড্রেল শুভেন্দুর কলার ধরে এই হত্যারহস্য তদন্ত করতে হবে।”
[আরও পড়ুন: সাংসদ তহবিলের টাকায় মন্দিরে ভজন-কীর্তন! যোগীরাজ্যের গেরুয়া নেতার নির্দেশে বিতর্ক]
অরূপ বিশ্বাসের বক্তব্য, ”শুভেন্দু আপনাকে চ্যালেঞ্জ করলাম। কাল আবার মিটিং করুন। যে ওয়ার্ড বলবেন সেই ওয়ার্ডের লোক আপনাকে চ্যালেঞ্জ করবে। বিজেপির থেকে বড় চোর কেউ নেই। শিবরাজ সিংয়ের ব্যপম কেলেঙ্কারি, কোথায় সিবিআই। বিজেপিতে গেলেই সব সাধু!সিবিআই, ইডি দিয়ে ভয় দেখালে হবে? আমরা সিপিএম-কে হারিয়েছি। বাংলা দখল হবে না।”
[আরও পড়ুন: ‘লালনের মতো অবস্থা হতে পারে আমার ছেলেরও’, আতঙ্কিত বগটুই কাণ্ডে আরেক ধৃতের পরিবার]
ফিরহাদ হাকিমের নিশানায়ও সিবিআই (CBI)। লালন শেখের মৃত্যুর নেপথ্যে তিনি কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাকেই দায়ী করেছেন। ফিরহাদের বক্তব্য, ”স্ত্রী বলেছেন, হত্যা করা হয়েছে লালনকে। ৫০ লক্ষ টাকা চেয়েছিল সিবিআই। তৃণমূল নেতাদের নাম বলতে বলেছিল। সত্যি ঘটনা বলেছিল। তাই ওকে পিটিয়ে মারা হল। একজন কেউ হত্যা করলে হত্যা, আর সিবিআই হত্যা করলে সেটা হত্যা হবে না কেন?” চব্বিশের লোকসভা নির্বাচন নিয়েও তিনি ভবিষ্যৎবাণী করলেন। আত্মবিশ্বাসের সুরে তিনি বলেন, ”দিদি প্রধানমন্ত্রী হবে। শুভেন্দু বিরোধী দলনেতা থাকবে না। সিবিআই-ইডি নিয়ে ভারতবর্ষ দখল করবেন ভাবছেন? তা তো হবে না।”