রঞ্জন মহাপাত্র, কাঁথি: ভোটের আগে দলবিরোধী কাজ রুখতে বড়সড় পদক্ষেপ নিল পূর্ব মেদিনীপুর জেলা তৃণমূল (TMC) নেতৃত্ব। দলে থেকেও অন্য দলের হয়ে কাজ অর্থাৎ ‘অন্তর্ঘাত’-এর অভিযোগে জেলার ১০ তৃণমূল নেতাকে বহিষ্কার করা হল। শনিবার এই খবর জানিয়েছেন জেলা তৃণমূল সভাপতি সৌমেন মহাপাত্র। তিনি জানিয়েছেন, এই নেতারা দলে থেকেও অন্য দলের হয়ে কাজ করছিলেন, অন্যদেরও প্রভাবিত করছিলেন। তার শাস্তিস্বরূপ তাঁদের বহিষ্কার করা হয়েছে। পরবর্তীতে জেলার অন্যান্য নেতা, কর্মীদের উপরও নজরদারি চলবে। কেউ এ ধরনের কাজের সঙ্গে যুক্ত রয়েছে, সেই প্রমাণ পেলেই ফের শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করবে দল। প্রসঙ্গত, বহিষ্কৃত নেতাদের বেশিরভাগই শুভেন্দু অধিকারী ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত। তাই তৃণমূলের এই পদক্ষেপ অনেকেই রাজনৈতিক পক্ষপাত দেখছেন।
পূর্ব মেদিনীপুরের (East Midnapur) শহিদ মাতঙ্গিনী ব্লক তৃণমূলে বড় ধাক্কা। ভোটের ঠিক আগেই একসঙ্গে ১০ জন নেতাকে বহিষ্কার করে দিল দল। এঁদের মধ্যে পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি দিবাকর জানা, তাঁর স্ত্রী তনুশ্রী জানা-সহ জেলা পরিষদের একাধিক সদস্য। শনিবার বহিষ্কৃতদের নামের তালিকা দিয়ে শাস্তি ঘোষণা করেছেন তৃণমূল জেলা সভাপতি সৌমেন মহাপাত্র। তাঁর কথায়, ”ওঁরা দলে থেকেও অন্য দলের হয়ে কাজ করছিলেন। তাই বহিষ্কার করা হয়েছে। এবার আরও বেশি করে খোঁজখবর নেওয়া হবে। যদি আরও কেউ এমন দলবিরোধী কাজে যুক্ত থাকেন, তাহলে তাঁদেরও এভাবেই বহিষ্কার করা হবে। এ বিষয়ে দল যথেষ্ট কড়া। কোনও দলবিরোধী কাজ বরখাস্ত করা হবে না।”
[আরও পড়ুন: শুভেন্দুর প্রচারে কাঁথিতে প্রধানমন্ত্রীর সভা, শিশির অধিকারীকে আমন্ত্রণ মোদির ‘দূত’ লকেটের]
প্রসঙ্গত, গত নভেম্বরে শুভেন্দু অধিকারী নিজে তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যাওয়ার পর থেকেই জেলা তৃণমূলে ভাঙন শুরু হয়। জেলা পরিষদ, ব্লকের একাধিক গুরুত্বপূর্ণ পদাধিকারীরা একে একে পদ ছাড়েন, যোগ দেন বিজেপিতে। গুঞ্জন, শুভেন্দু অনুগামী আরও অনেকেই তৃণমূলে থেকেও তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করছেন। সম্ভবত তা নজর এড়ায়নি জেলা তৃণমূল নেতৃত্বের। ভাঙন রুখে কড়া বার্তা দিতেই ভোটের আগে পূর্ব মেদিনীপুর জেলা তৃণমূলের এই পদক্ষেপ বলে মনে করা হচ্ছে।