ধ্রুবজ্যোতি বন্দ্যোপাধ্যায়: বিশ্বকাপের মরশুম চলছে। ব্রাজিল-আর্জেন্টিনার সুপার-ক্লাসিকোতে মজে গোটা বাংলা। ফুটবল নিয়ে আলোচনা এখন সর্বত্র। বাদ নেই রাজনীতির ময়দানও। শনিবার কাঁথিতে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Abhishek Banerjee) জনসভাতেও পড়ল বিশ্বকাপের আঁচ। সভা থেকে অভিষেক দলের কর্মীদের বার্তা দিতে গিয়ে টানলেন ফুটবলের উদাহরণ। বললেন,”আমি ব্রাজিলকে সমর্থন করি, তবে এবার মেসির জন্য চাইব আর্জেন্টিনা বিশ্বকাপ জিতুক, সেসব চলবে না।”
আসলে কাঁথির ওই সভা থেকে দলের ‘দো-আঁশলা’ কর্মীদের বার্তা দিয়ে চেয়েছেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক। তৃণমূলে (TMC) থেকে বিজেপির সঙ্গে যোগাযোগ রাখা চলবে না। দলের অনেক কর্মী আছেন, যারা দেওয়ালের উপর থেকে দু’দিকে নজর রাখছেন। অভিষেকের সাফ কথা, দলকে এই ধরনের দো-আঁশলা কর্মীদের হাত থেকে মুক্ত করতে হবে। শুধু তাই নয় অভিষেকের সাফ কথা, গোটা মেদিনীপুর জেলাকে বেইমান মুক্ত করতে হবে। সেই বেইমানের তালিকাটা শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari) থেকে শুরু করে দলের একেবারে নিচুতলা পর্যন্ত ছড়িয়ে। এ প্রসঙ্গে অক্টোপাসের উদাহরণ তুলতে শোনা গিয়েছে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদককে। তাঁর কথায়, অক্টোপাসের মাথা শান্তিকুঞ্জে বসে, আর শুঁড়গুলি ছড়িয়ে রয়েছে। মাথা এবং শুঁড় দুটিকেই সরিয়ে দিতে হবে।
[আরও পড়ুন: ‘ডিসেম্বরে ছোট্ট করে দরজাটা খুলে দেব’, অভিষেকের মন্তব্যে কাঁপুনি গেরুয়া শিবিরে]
ডায়মন্ডহারবারের সাংসদ এদিন কাঁথিতে দাঁড়িয়ে মেনে নিয়েছেন, ২০২০ সাল পর্যন্ত জেলায় অনেক ক্ষেত্রে দুর্নীতি হয়েছে। কিন্তু সেই দুর্নীতির মুলে ছিল অধিকারী পরিবার। এমনকী আমফানের (Amphan) সময় ত্রাণ বিলির ক্ষেত্রেও যে দুর্নীতি হয়েছে, সেটাও মেনে নিয়েছেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক। তাঁর বক্তব্যে ইঙ্গিত মিলেছে, শুভেন্দু (Suvendu Adhikari) বিজেপিতে যাওয়ার পর দুর্নীতি অনেকাংশে কমলেও সেটা পুরোপুরি নির্মূল হয়নি। আগামী দিনে গোটা পূর্ব মেদিনীপুর জেলাকে পুরোপুরি দুর্নীতিমুক্ত করার ডাকও দিয়েছেন তিনি। মেদিনীপুরের সাধারণ নাগরিকদের যদি কোনও অভিযোগ থাকে সেটা সরাসরি শোনার জন্য এই জেলাতেও ‘এক ডাকে অভিষেক’ কর্মসূচি চালু করে দিয়েছেন তিনি।
[আরও পড়ুন: ‘ন্যূনতম মূল্যবোধ থাকলে ইস্তফা দিন, উপনির্বাচনে লড়ুন’, শিশির-দিব্যেন্দুকে চ্যালেঞ্জ অভিষেকের]
পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে নিচুতলার সংগঠনকে বেইমানমুক্ত, ‘দো-আঁশলা’মুক্ত এবং দুর্নীতিমুক্ত করাটাই যে তাঁর উদ্দেশ্য সেটা এদিনের সভা থেকেই স্পষ্ট করে দিয়েছেন অভিষেক। সেই সঙ্গে জানিয়ে দিয়েছেন, পঞ্চায়েত নির্বাচনে তৃণমূলের টিকিট পেতে হলে সাধারণ মানুষের কাজ করতে হবে। অভিষেকের সাফ কথা, কোনও নেতা বা দাদার পিছনে ঘুরে টিকিট পাওয়া যাবে না। টিকিট মিলবে মানুষের সার্টিফিকেট দেখেই।