সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: সামনেই পঞ্চায়েত নির্বাচন। তার আগে ধুপগুড়ির সভা থেকে দলীয় নেতা-কর্মীদের কড়া বার্তা দিলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (Abhishek Banerjee)। তাঁর সাফ কথা, “ব্যাংক ব্যালান্স দেখে নয়, মানুষের সার্টিফিকেট দেখে পঞ্চায়েতে প্রার্থী করা হবে।” গত এক বছরে কোন নেতা ক’টা বুথে গিয়েছেন, তার রিপোর্ট নিয়ে কলকাতায় আসার নির্দেশ দিলেন তিনি। ২১ জুলাই সেই রিপোর্ট নেবেন খোদ অভিষেক।
উনিশের লোকসভা কিংবা একুশের বিধানসভা, পাহাড়ের জেলাগুলিতে আশানুরূপ ফল পায়নি তৃণমূল। স্থানীয় তৃণমূল নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে তৈরি হওয়া ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ ঘটেছিল ভোটবাক্সে। তাই পঞ্চায়েত ভোটের আগে দলীয় নেতা-কর্মীদের কড়া বার্তা দিলেন তৃণমূলের (TMC) সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক। বুঝিয়ে দিলেন দলে থাকতে হলে দলীয় শৃঙ্খলা মেনে চলতে হবে। আর কী কী বললেন অভিষেক?
[আরও পড়ুন: কীটনাশক খাইয়ে একসঙ্গে ৫ কুকুরকে খুন! হাজতে বনগাঁর কৃষক]
পঞ্চায়েতে প্রার্থী পদ: ব্যাংক ব্যালান্স দেখে প্রার্থী করবে না দল। মানুষের সার্টিফিকেট দেখে প্রার্থী করবে তৃণমূল। মানুষের কাছে গ্রহণযোগ্যতা থাকলে তবেই প্রার্থী হওয়া যাবে।
তিন জেলার হেল্পলাইন নম্বর: ডায়মন্ড হারবারের মতো কোচবিহার-আলিপুরদুয়ার-জলপাইগুড়ির জন্য চালু হল ‘এক ডাকে অভিষেক’। হেল্পলাইন নম্বর-7887778877। সকাল ৯টা থেকে সন্ধে ৬টা পর্যন্ত এখানে ফোন করে অভিযোগ জানানো যাবে। প্রয়োজনে নাম-পরিচয় গোপন রাখা যাবে।
দলের শৃঙ্খলা: তৃণমূলে একটাই নেত্রী-মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মানতে না পারলে অন্য দলে যান। দরজা খোলা আছে। কোনও দাদা-দিদি, স্থানীয় নেতাদের পা ধরে কাজ হবে না। দাদাদের ছত্রছায়া থেকে যা ইচ্ছে তাই করব, এটা চলবে না। মানুষের বদলে নিজের কথা ভাবলে চলবে না। হয় ঠিকাদারি করুন, নয় তৃণমূল করুন। সারা বাংলায় এই নীতি কার্যকর করে দেখাব।
রিপোর্ট কার্ড: ২১ জুলাইয়ের অনুষ্ঠানে যোগ দিতে সাতদিন পর তো কলকাতায় আসবেন। কলকাতা আসার আগে হাতে করে রিপোর্ট আনবেন, গত এক বছরে কে কতবার বুথে গিয়েছেন, তার রিপোর্ট নিয়ে আসবেন। বুথে যাওয়ার ছবি নিয়ে আসবেন। আনতে না পারলে মনে রাখবেন, তৃণমূল আর কাউকে তুষ্ট করার জন্য চলবে না। মানুষকে খুশি করার জন্য চলে তৃণমূল।
[আরও পড়ুন: ঠিক যেন ‘ঘরের মেয়ে’, দার্জিলিংয়ে নিজের হাতে ফুচকা বানিয়ে বাচ্চাদের খাওয়ালেন মুখ্যমন্ত্রী]
নেতাদের হোমওয়ার্ক: শুধু বড় মিটিং মিছিল করলেই নেতা হওয়া যায় না। দু’মাসের মধ্যে সব বুথে কর্মসূচি নিতে হবে। জেলার দায়িত্ব পেলে নিজেকে কেউকেটা ভাবা চলবে না। সামনে দু’টো পিছনে চারটে গাড়ি নিয়ে ঘোরা চলবে না। হেঁটে, সাইকেলে ঘুরে মানুষের কাছে যান। তাঁদের কথা শুনুন। আমাদের দলে কোনও অবজারভার নেই। আমরা সবাই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সৈনিক।
আত্মসমালোচনা: কয়েকজনের মুখ দেখে মানুষ ভোট দেয়নি। তাদের চিহ্নিত করেছি। পঞ্চায়েত ভোটে তাদের আর টিকিট দেব না। গণতন্ত্রে গণদেবতার রায় শিরোধার্য।
নিজেদের দোষেই হয়তো ভোট পাইনি। নিশ্চিতভাবে আমাদের গাফিলতি ছিল। মানুষ মান-অভিমান করে বিরোধী দলকে ভোট দিয়েছে। আপনারা যেমন তৃণমূল চান, আগামী ৬ মাসের মধ্যে সেই তৃণমূল তৈরি করব। প্রতি দু’মাসে আমি এই জেলাগুলিতে আসব। হঠাৎ করে রাস্তায় নেমে মানুষের কথা শুনব।