রঞ্জন মহাপাত্র, কাঁথি: খোদ শাসকদলের যুব সভাপতির বিরুদ্ধে নবম শ্রেণীর ছাত্রীকে অপহরণের অভিযোগ। রাতের অন্ধকারে বাবাকে মারধর করে নাবালিকাকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ। পূর্ব মেদিনীপুরের মারিশদা থানা এলাকার ঘটনাকে ঘিরে ইতিমধ্যেই রাজনৈতিক তোলপাড় শুরু হয়েছে।
ঘটনাটি ঘটে বিজয়া দশমীর রাতে। অভিযোগ, ওইদিন দলবল নিয়ে নাবালিকার বাড়িতে যায় এক নম্বর কসবা অঞ্চল যুব সভাপতি আনন্দ দাস। পূর্ব মেদিনীপুরের এগরা থানা এলাকার কৈথড় গ্রামের বাসিন্দা সে। অভিযোগ, ওই রাতেই জোর করে নাবালিকাকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়। তাতে বাধা দেন নাবালিকার বাবা। তাঁকে মারধর করা হয়। নাবালিকার বাবা ও মাকে প্রয়োজনের প্রাণনাশের হুমকিও দেওয়া হয় বলেই অভিযোগ। পূর্ব মেদিনীপুরের মারিশদা থানা এলাকার মশাগাঁ গ্রামের বাসিন্দা নাবালিকার বাবার দাবি, বেশ কয়েকদিন ধরে আনন্দ দাস তাঁর মেয়েকে বিয়ের প্রস্তাব দিচ্ছিল। তবে বারবারই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে নাবালিকা। শুধুমাত্র রাজনৈতিক ক্ষমতাকে কাজে লাগিয়ে তা সত্ত্বেও নাবালিকাকে ওই যুবক উত্যক্ত করত বলেই অভিযোগ।
[আরও পড়ুন: ‘জিন্দেগি তো বেওয়াফা হ্যায়…’, শোকজের জবাব দিয়েই ইঙ্গিতপূর্ণ পোস্ট বড়ঞার ওসির]
অপহরণের পর কেটে গিয়েছে বেশ কয়েকদিন। তবে এখনও নাবালিকার কোনও খোঁজ পাওয়া যায়নি। বাধ্য হয়ে পুলিশের দ্বারস্থ হন নাবালিকার বাবা। অভিযুক্ত যুবকের বিরুদ্ধে মারিশদা থানায় এফআইআর করেন নাবালিকার বাবা। অভিযোগ পাওয়ার পরেও পুলিশ বেশ কয়েকদিন কার্যত হাত গুটিয়ে বসেছিল বলেই দাবি নাবালিকার পরিবারের লোকজনের। তবে শুক্রবার দুপুরে যুব তৃণমূল নেতার বাড়িতে বিরাট পুলিশ বাহিনী যায়। বাড়িতে যদিও কারও দেখা পাননি তদন্তকারীরা। যুব তৃণমূল নেতা এবং তার পরিবারের লোকজন গা ঢাকা দিয়েছে। পুলিশ ইতিমধ্যে অভিযুক্ত নেতার খোঁজে তল্লাশি শুরু করেছে। নাবালিকারও খোঁজ চলছে।
ঘটনাকে কেন্দ্র করে শুরু রাজনৈতিক চাপানউতোর। শাসকদলের নেতার বিরুদ্ধে ওঠা অপহরণের অভিযোগকে হাতিয়ার করে শাসকদলকে বিঁধতে ব্যস্ত বিজেপি। পদ্মশিবিরের দাবি, বাংলায় কোনও নারী যে সুরক্ষিত নন, তা স্পষ্ট। স্বাভাবিকভাবেই এই অভিযোগে যথেষ্ট অস্বস্তিতে রাজ্যের শাসক শিবির। অভিযোগ সত্যি প্রমাণিত হলে যুব নেতার বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করা হবে বলেই জানিয়েছে তৃণমূল। রাজনৈতিক অভিযোগ পালটা অভিযোগ যাই চলুক না কেন চরম দুশ্চিন্তায় নাবালিকার বাবা, মা-সহ গোটা পরিবার।