স্টাফ রিপোর্টার, শিলিগুড়ি: ফের পৃথক রাজ্য অর্থাৎ গোর্খাল্যান্ড (Gorkhaland) ইস্যুকে খুঁচিয়ে তুলতে চাইছে বিমল গুরুং। আর তাতে নাকি সামিল তৃণমূলের নেতাও! ইতিমধ্যে গোর্খাল্যান্ড নিয়ে আন্দোলনের জন্য প্রাথমিক কমিটি তৈরি করেছেন গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা সুপ্রিমো গুরুং। ওই কমিটিতে রয়েছেন তৃণমূলের বিনয় তামাং ও হামরো পার্টির সভাপতি অজয় এডওয়ার্ডও! দেশের বিভিন্ন প্রান্তের গোর্খা নেতাদের নিয়ে ২৫ জনের একটি কমিটি গঠন হয়েছে রবিবার। বিমল বলেন, “এই কমিটির সদস্যরা ২৩ জানুয়ারি বৈঠকে বসে সভাপতি, সম্পাদক ঠিক করবে। ওইদিনই আন্দোলনের রূপরেখা তৈরি করা হবে।” দিল্লিতে দু’দিনের সম্মেলনে আপাতত এই কমিটি গঠন করা হয়েছে।
বিমল গুরুং আগেই ঘোষণা করেছিলেন যে ডিসেম্বরের ১০ ও ১১ তারিখ তিনি দিল্লিতে গোর্খাল্যান্ডের সমর্থনে বৈঠক করবেন। যেখানে গোটা দেশের গোর্খাদের আমন্ত্রণ জানানো হয়। সেইমতই দিল্লিতে তিনি শনিবার ও রবিবার সম্মেলন করেন। আর এই সম্মেলনে চমক ছিল তৃণমুলের বিনয় তামাং এর উপস্থিতি। তিনি কাউকে কিছু না জানিয়েই শনিবার গুরুংয়ের সভায় হাজির হন। সেখানে গিয়ে বক্তব্য রাখতে গিয়ে বলেছিলেন, “গোর্খাদের জন্য এখানে এসেছি। আমিও গোর্খা তাই আমিও গোর্খাদের ভালই চাই।” রবিবার অবশ্য তিনি আর ওই সম্মেলনে যাননি। কিন্তু রবিবার সম্মেলনের শেষদিনে গোর্খাল্যান্ড নিয়ে আন্দোলনের জন্য যে কমিটি ঘোষণা হল তাতে নাম রয়ে গেল বিনয় তামাং-এর।
[আরও পড়ুন: ‘রোজ চরিত্রহনন হচ্ছে, আর কেউ মন্ত্রী হতে চাইবে না’, আদালতে দাঁড়িয়ে বললেন পার্থ]
বিমল গুরুংয়ের নেতৃত্বে এই কমিটি গঠন হয়। তবে কমিটিতে বিনয়কে রেখে তিনি মোক্ষম চাল দিলেন। বার্তা দিতে চাইলেন তৃণমূল তাদের সঙ্গেই রয়েছে। যদিও তৃণমুল বিনয়কে নিয়ে পরিষ্কার জানিয়ে দিয়েছে উনি নিজের মর্জিতে গিয়েছেন দল তাঁকে পাঠায়নি। তবে এদিন কমিটিতে তাঁর নাম দেখার পর হতবাক তৃণমূল নেতৃত্ব৷ এবিষয়ে পার্বত্য তৃণমূল কংগ্রেসের সভানেত্রী শান্তা ছেত্রী বলেন, “এখনই কিছু বলার নেই। আমরা আলোচনায় বসি তারপর যা বলার বলব।” পাহাড়ের অন্যান্য তৃণমূল নেতাও কথা বলতে চাননি। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক নেতা বলেন পাহাড়ের বিষয়টা কলকাতা দেখে তারাই যা বলার বলবে। বিনয়ের এহেন আচরণে খানিকটা বিড়ম্বনায় পড়েছে তৃণমূল। তাই কেউ সেভাবে মুখ খুলতে চাইছে না।
অন্যদিকে এই কমিটিতে স্থান পেয়েছে পাহাড়ের আরেক নেতা অজয় এডওয়ার্ড। তিনি এদিন সম্মেলনে উপস্থিত হয়ে বলেন, “পাহাড়ের স্বার্থে গোর্খাল্যান্ডের জন্য আমি গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার সঙ্গে একযোগে কাজ করতে রাজি। আমিও গোর্খাল্যান্ডের সমর্থক।” এদিকে বিমল গুরুং বলেন, “আমাদের দুদিনের সম্মেলনে খুব ভাল আলোচনা হয়েছে। নানা ইতিবাচক দিক আমরা পেয়েছি। প্রাথমিক কমিটি গড়া হয়েছে এরপর সম্পূর্ণ কমিটি তৈরি হবে। তখনই আমরা ঠিক করব কীভাবে গোর্খাল্যান্ডের জন্য আন্দোলন হবে। তবে পাহাড়ের ক্ষতি করে কিছু করা হবে না।”