রঞ্জন মহাপাত্র, কাঁথি: একুশের লড়াই শুরু হয়ে গিয়েছে। ভোট প্রচারে নেমে পড়েছেন তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। উত্তরবঙ্গে বড় মিছিল করে ফিরেছেন। আজ পা রাখছেন নিজের নির্বাচন ক্ষেত্র নন্দীগ্রামে (Nandigram)। সেই মাটি ছুঁয়ে পরদিন হলদিয়ায় মনোনয়ন। কিন্তু নন্দীগ্রামে মুখ্যমন্ত্রী আসার আগেই বিপত্তি। বিতর্কিত পোস্টার পড়ল ভূমি আন্দোলনের ‘আতুঁরঘর’ নন্দীগ্রামে। লেখা হল, কোনও বহিরাগত নয়, নন্দীগ্রাম তার ভূমি পুত্রকে চায়।
এদিকে আজ নন্দীগ্রামে দলের কর্মিসভায় অংশ নিচ্ছেন তৃণমূলনেত্রী। কৃষিজমি রক্ষার আন্দোলনের সঙ্গে জড়িয়ে তাঁর নাম। স্বাভাবিকভাবেই তাঁর আগমন ঘিরে চূড়ান্ত উন্মাদনায় ফুটছে আন্দোলনের মাটি। দুপুরে তাঁর কপ্টার নন্দীগ্রামের বটতলা হেলিপ্যাড ছোঁয়ার কথা। এদিন রাত পর্যন্ত দলীয় নানা কর্মসূচি রয়েছে তাঁর। হলদিয়া মহকুমাশাসকের দপ্তরে তাঁর মনোনয়ন। নন্দীগ্রাম থেকে মমতা লড়ছেন বলে বাড়তি উচ্ছ্বাস এখানকার মানুষের মধ্যে তৈরি হয়েছে। প্রচারে মমতা নেমে পড়তেই নন্দীগ্রামেও ঝড় তুলেছে তাঁর দল। নন্দীগ্রাম থেকে কলকাতায় ফিরে দলের ইস্তেহার প্রকাশের কথা তৃণমূলনেত্রীর।
[আরও পড়ুন : ‘দিদি’র পালটা ‘মোদি দাদা’, নয়া পোস্টারে ভোট প্রচার শুরু বিজেপির]
কিন্তু নন্দীগ্রামের সেই উচ্ছ্বাসে চোনা ফেলেছে বিতর্কিত ব্যানার। স্থানীয় সুত্রে জানা গিয়েছে, সোমবার সন্ধ্যায় নন্দীগ্রামের ক্ষুদিরাম মোড় বাস স্ট্যান্ডের কাছে এই ব্যানার নজরে আসে। তার পরই এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। প্রসঙ্গত, এবারে নির্বাচনের ‘হটস্পট’ নন্দীগ্রাম। কারণ, এবার এই কেন্দ্রে গুরু-শিষ্যের লড়াই। নিজের পুরনো কেন্দ্র ভবানীপুর ছেড়ে নন্দীগ্রামের প্রার্থী হয়েছেন মমতা। তাঁর বিপরীতে বিজেপির হয়ে লড়ছেন মমতারই ‘প্রাক্তন সৈনিক’ শুভেন্দু অধিকারী। সেই লড়াইকে কেন্দ্র করে ইতিমধ্যে প্রচার শুরু হয়ে গিয়েছে।
[আরও পড়ুন : ভোটের আগে দল ছাড়ার হিড়িক, তৃণমূলের হাতছাড়া মালদহ জেলা পরিষদ]
রাজ্যজুড়ে বিজেপির বিরুদ্ধে বহিরাগত তত্ত্বকে হাতিয়ার করছে তৃণমূল। বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতাদের বহিরাগত বলে দাগিয়ে দিতে চাইছে রাজ্যের শাসকদল। নন্দীগ্রামে তৃণমূলের সেই অস্ত্রকেই হাতিয়ার করতে চাইছে বিজেপি। ওয়াকিবহাল মহলের মতে, মমতা-শুভেন্দুর এই দ্বৈরথকে নন্দীগ্রামে ‘ভূমিপুত্র’ বনাম ‘বহিরাগতের’ লড়াই বলে দেগে দিতে চাইছে গেরুয়া শিবির। সেই ইস্যু উসকে দিতেই এই ব্যানার দেওয়া হল বলে মনে করছে নন্দীগ্রামের বাসিন্দাদের একাংশ।
এ প্রসঙ্গে পূর্ব মেদিনীপুর জেলা পরিষদের সহ সভাধিপতি সেক সুফিয়ান জানান, “শুভেন্দু নন্দীগ্রামের ভূমিপুত্র নয়। দিদি বাংলার ভূমি কন্যা। ওঁকে প্রার্থী পেয়ে খুশি নন্দীগ্রাম।” পালটা দিয়েছেন বিজেপি নেতা কণিষ্ক পন্ডা। তিনি বলেন, “মেদিনীপুরের ভূমিপুত্র শুভেন্দু। তাই নন্দীগ্রামের মানুষ শুভেন্দুকেই চায়। কারণ, যিনি ঘর ভাড়া করে থাকতে আসছেন তিনি ভোট মিটলেই ফিরে যাবেন। এটা মানুষ বুঝে গিয়েছে।”