দেবব্রত মণ্ডল, বারুইপুর: আইএসএফ (ISF) সমর্থকদের হুঁশিয়ারি দিয়ে ফের বিতর্কে জড়ালেন ভাঙড়ের তৃণমূল নেতা মোদাসের হোসেন। তাঁর মন্তব্যের তীব্র নিন্দা করেছেন ভাঙড়ের বিধায়ক। যদিও বিতর্ক জারি থাকলেও নিজের অবস্থানে অনড় ওই নেতা।
বিষয়টা ঠিক কী? মঙ্গলবার দক্ষিণ ২৪ পরগনার কাশিপুর থানার কাঁটালিয়া এলাকায় তৃণমূলের একটি দলীয় কার্যালয়ের উদ্বোধন ছিল। সেই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন আরাবুল ইসলাম (Arabul Islam) এবং ভোগালি-২ গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান মোদাসের। কার্যালয় উদ্বোধনের পর দলীয় অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে প্রকাশ্যেই একের পর এক হুঁশিয়ারি ও বেলাগাম মন্তব্য করতে শুরু করেন মোদাসের। পীরজাদা আব্বাস সিদ্দিকির অনুগামীদের হুঁশিয়ারি দিয়ে মোদাসের বলেন, ”যারা খামে(ISF) ভোট দিয়ে জিতিয়েছে তারা আত্মসমর্পণ করুক। না হলে ফুরফুরায় গিয়ে ১০০ দিনের কাজ করতে হবে। আমরা কাজ, রাস্তাঘাট পরিষেবা সব দেব, আর তোমরা অন্য জায়গায় ঘুরে বেড়াবে, তা আমাদের কর্মীরা মেনে নেবে না।” অর্থাৎ আত্মসমর্পণ না করলে ভাঙড়ে কাজ পাবেন না আইএসএফ সমর্থকরা। পাশাপাশি তিনি আরও বলেন কাজের জন্য বিডিও অফিসে গিয়েও নাকি কোনও লাভ হবে না। তাঁর কথায়, “কেউ কেউ বলছে বিডিওর কাছে যাবো। আমি বলছি, বিডিও অফিসের মুখ অবধি যেতে হবে না। কারণ আমরাই সব।”
[আরও পড়ুন: ৬১ দিন পরে ইলিশ ধরতে যাওয়ার অনুমতি পেলেন মৎস্যজীবীরা, কমতে পারে দাম]
এর আগেও একাধিকবার বিতর্কিত মন্তব্য করে প্রচারে চলে এসেছিলেন মোদাসের হোসেন। এবারের নির্বাচনের আগে “তৃণমূলকে ভোট না দিলে স্বাস্থ্য সাথীর কার্ড দেওয়া হবে না” বলেও হুশিয়ারি দিতে শোনা গিয়েছিল তাঁকে। গত রবিবার ভাঙড়ের পরাজিত তৃণমূল প্রার্থীর বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়েছিলেন আরাবুল। সেই বিতর্ক কাটতে না কাটতে এবার প্রকাশ্যে আইএসএফ কর্মীদের হুঁশিয়ারি দিলেন আরাবুল ঘনিষ্ঠ মোদাসের। কিন্তু প্রকাশ্যে কেন এমন মন্তব্য? প্রশ্ন করতেই মোদাসেরের সাফ উত্তর, “ভুল কিছু বলিনি। সবাই কাজ পাবে। আমি চাই সবাই যাতে একসঙ্গে মিলে কাজ করতে পারে।”
তৃণমূল নেতার মন্তব্যের কড়া সমালোচনা করেছেন ভাঙড়ের আইএসএফ বিধায়ক (ISF MP) তথা আব্বাসের ভাই নওশাদ সিদ্দিকী। তিনি বলেন, “ভাঙড়ে হেরে গিয়ে মানসিক অবসাদে ভুগছে তৃণমূল নেতারা। এখন সাধারণ আইএসএফ কর্মীদের ভয় দেখিয়ে, মারধর করে তৃণমূলে টেনে আনতে চাইছে। কিন্তু ভাঙড়ের মানুষ ওদের অত্যাচার মেনে নেবে না। আর রাজনৈতিক দল নির্বিশেষে এলাকার গরিব মানুষ যাতে কাজের সুযোগ পায় বিধায়ক হিসেবে সেটা দেখার দায়িত্বও আমার। কোনও দুর্নীতি, ধমক, হুঁশিয়ারি এসব একদম চলবে না।”