জ্যোতি চক্রবর্তী, বনগাঁ: তৃণমূলের অন্দরে অভিষেক বিতর্কে সরাসরি নাম করেই কুণাল ঘোষ, সায়নী ঘোষ থেকে শুরু করে ডেরেক ও’ব্রায়ান, ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়কে কড়া ভাষায় আক্রমণ করেছেন প্রাক্তন মন্ত্রী বিধায়ক মদন মিত্র (Madan Mitra)। মদনের নিশানায় বাদ যাননি তাঁর এক সময়ের সতীর্থ প্রাক্তন মন্ত্রী পূর্ণেন্দু বসু, সিদ্দিকুল্লা চৌধুরী বা সাংসদ দোলা সেনও। বনগাঁয় পশ্চিমবঙ্গ পরিবহণ নিগমের টুরে এসে সাংবাদিকদের কাছে বলেন, “এই মুহূর্তে দলের মুখপাত্র কারা? কুণাল ঘোষ, ডেরেক ও’ব্রায়েন, উদয়ন গুহ, সিদ্দিকুল্লা, আমি জানি না এঁরা কবে থেকে তৃণমূল পার্টি করছেন? ২০০৬ সালে দোলা সেন, পূর্ণেন্দু বসু তৃণমূলে এসেছেন। দিদিমণি ওঁদের হাতে দলের দায়িত্ব তুলে দিয়েছেন। আর ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায় কয়েকদিন আগে সিপিএম করতেন এবং সায়নী ঘোষ–এঁরাই এখন পার্টির মুখপাত্র।”
মদন এভাবে আক্রমণ শানালেও শনিবার উলটো দিক থেকে কেউ কোনও প্রতিক্রিয়া দেখাননি। দলের মুখপাত্র কুণাল-ডেরেক বা রাজ্য যুব সভাপতি সায়নীকে আক্রমণের পাশাপাশি মদনবাবু এমনও বলেন, তিনি অবাক হবেন না যদি বারাকপুরের বিজেপি সাংসদ অর্জুন সিং তৃণমূলের মুখপাত্র হয়ে যান। তাঁর কথায়, “কারণ দিদিমণির মনটা অনেক বড়।” অভিষেক প্রসঙ্গ তুলে মদন বলেন, “অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বলতেই পারতেন কোনও প্রোগ্রাম হবে না। সব কিছু বন্ধ আমি বলছি। কিন্তু তিনি এসব কিছু বলেননি। পার্টির মাতব্বরি নিজের হাতে নিয়ে আমি যা বলব তাই হবে এই মনোভাব অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় দেখাননি।”
[আরও পড়ুন: ‘ব্লাউজ পরে আসুন’, অন্তর্বাস পরে আসায় বিমানে উঠতে পারলেন না প্রাক্তন মিস ইউনিভার্স]
মদনের তোপ থেকে বাদ যাননি কল্যাণও। নাম না করে তৃণমূল সাংসদের সমালোচনায় মদন বলেন, “ইদানীং কিছু বয়স্ক নেতা জ্ঞান দিচ্ছেন। সেই সব নেতা আমাদের খারাপ সময়ে আন্দোলনের সময়ে ছিলেন না। তাঁরা হঠাৎ রাতারাতি জ্ঞান দিচ্ছেন।” শনিবার যখন দলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় শৃঙ্খলা রক্ষার কথা বলেছেন, তখন নিজের ফেসবুক পেজে ফের সরব হয়েছেন মদন।
মহাসচিবের উদ্দেশ্যে তিনি বলেছেন, ‘‘আজ শুনছিলাম দলের মহাসচিব বলছিলেন যার যা ক্ষোভ বাইরে বলা যাবে না। দলের মধ্যে বলতে হবে। আমার প্রশ্ন, দলের মধ্যে কোথায় বলতে হবে? কাকে বলতে হবে? তাঁকে কখন, কোথায় পাওয়া যাবে? কর্মীরা বলছেন, তৃণমূল ভবনে একমাত্র সুব্রত বক্সি ছাড়া কাউকে পাওয়া যাচ্ছে না। বলছেন লিখিতভাবে জমা দিন, বিচার হবে। কখন, কোথায় যাব আমরা, সেগুলি যদি একটু ঠিক করে দেন তো ভাল হয়।’’ মদন আরও বলেন, ‘‘পার্টি যদি তাড়িয়ে দেয় মাথা পেতে নেব। কিন্তু কেউ যদি মনে করেন চমকে-ধমকে পার্টিতে জায়গা করবেন, তাহলে অসুবিধা আছে।’’