জ্যোতি চক্রবর্তী, বনগাঁ: সিএএ বা সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন নিয়ে কেন্দ্রের বিজ্ঞপ্তি জারির পর এই আইনের সমালোচনায় আসরে নেমে পড়েছেন তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্ব থেকে জেলার নেতারা। এবার সিএএ আইন নিয়ে কটাক্ষ করলেন উত্তর ২৪ পরগনা জেলার সভাধিপতি নারায়ণ গোস্বামী। তাঁর খোঁচা, “বাবা-মায়ের জন্ম শংসাপত্র খুঁজতে কি শ্মশানে যাব?”
সোমবার তিনি বনগাঁ শহরে এসেছিলেন তৃণমূলের বনগাঁ লোকসভার নির্বাচনী কর্মিসভায়। সেখানে সিএএ(CAA)-এর সমালোচনা করে নারায়ণ গোস্বামী বলেন,”আবেদন করে নাগরিকত্ব নিতে হবে। কেন আবেদন করতে হবে? মুখ্যমন্ত্রী তো বলেইছেন যাঁদের আধার কার্ড, ভোটার কার্ড আছে তাঁরা নাগরিক। আবেদন করলে আপনি আর এ দেশের নাগরিক থাকবেন না। কেন আপনি এ দেশের নাগরিক তা আপনাকেই প্রমাণ করতে হবে।”
[আরও পড়ুন: ‘আমাকে বাধ্য করবেন না’, নির্বাচনী বন্ড মামলায় SCBA প্রেসিডেন্টকে সাফ কথা প্রধান বিচারপতির]
নারায়ণবাবু জানান, “এখানে যাঁরা উপস্থিত রয়েছেন ১৫-২০ বছর আগে জন্মেছেন তাঁদের মা-বাবাদের বেশিরভাগই বাড়িতে জন্মেছেন। ধাই মা কী করে জন্মের শংসাপত্র দেবে? বলছে, বাবা-মায়ের জন্ম শংসাপত্র জমা দিতে হবে। ধাইমাকে কি শ্মশানে খুঁজতে যাব? পোড়া কাঠের মধ্যে থেকে বাবা-মায়ের জন্ম শংসাপত্র খুঁজে আনতে হবে?” এ দিনের কর্মিসভায় জেলা সভাধিপতি ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন সেচমন্ত্রী পার্থ ভৌমিক, তৃণমূল প্রার্থী বিশ্বজিৎ দাস-সহ একাধিক নেতারা। সভায় নিচুতলার কর্মীদের কড়া বার্তা দিয়ে তৃণমূল নেতৃত্ব বলেন, লোকসভা নির্বাচনে বনগাঁ লোকসভায় যে যে জনপ্রতিনিধির এলাকায় তৃণমূলের ফল খারাপ হবে, তাঁদের দলের কাছে জবাব দিতে হবে।
পার্থ ভৌমিক বলেন, “বিজেপি বাংলার মানুষের ভাষা বোঝে না। মন বুঝবে কী করে? স্বাধীনতা সংগ্রামে বাংলার বিপ্লবীরা যে ভাবে অংশগ্রহণ করেছিলেন, তেমন ভাবে বাংলার খেটে খাওয়া মানুষকেও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পতাকার তলায় এসে বিজেপির জমিদারি মনোভাবের বিরুদ্ধে ইভিএমে জবাব দিতে হবে। মতুয়া উদ্বাস্তু মানুষদের হেনস্তা করার জন্যই বিজেপি সিএএ নিয়ে বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে। আগে অসমে এনআরসি, সিএএ কার্যকর করে দেখাক। তার পর তো গোটা দেশে কার্যকর করবে।’’ পার্থ ভৌমিকের কথার সমালোচনা করে বিজেপির বনগাঁ সাংগঠনিক জেলার সভাপতি দেবদাস মণ্ডল বলেন, ‘‘ভোটের পর ঠগ বাছতে গাঁ উজাড় হয়ে যাবে। কার বিরুদ্ধে দল ব্যবস্থা নেবে? তৃণমূলের তো ভরাডুবি হবে। সিএএ নিয়ে তৃণমূলের নেতারা মিথ্যাচার করছে।’’