ধ্রুবজ্যোতি বন্দ্যোপাধ্যায়: ‘ডিসেম্বর প্ল্যান’ নিয়ে উত্তাল রাজ্য রাজনীতি। এবার তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Abhishek Banerjee) গলায় শোনা গেল সেই ডিসেম্বরের কথা। ডিসেম্বর জুড়ে ‘বেইমানমুক্ত; ‘বিশ্বাসঘাতকমুক্ত’ মেদিনীপুর-কর্মসূচি নিচ্ছে তৃণমূল। অধিকারী গড়ে দাঁড়িয়ে এমনই নির্দেশ দিলেন অভিষেক। আগামিকাল অর্থাৎ রবিবার থেকে শুরু হবে এই কর্মসূচি। প্রতিটি বুথ, ব্লক, টাউন, পঞ্চায়েত থেকে গোটা জেলায় এই শিরোনামে হবে মিটিং-মিছিল। তাঁর চ্যালেঞ্জ, “মেদিনীপুরের বেইমানকে বিতাড়িত করতে হবে।”
শনিবার কাঁথিতে জনসভা করলেন তৃণমূলের সেনাপতি। সভামঞ্চ থেকে ডিসেম্বরের ঐতিহাসিক গুরুত্ব তুলে ধরেন অভিষেক। আবার এই ডিসেম্বরেই মেদিনীপুরের এক সন্তান সম্মান ভূলুন্ঠিত করেছে বলে দাবি করেন তিনি। ২০২০ সালের ১৯ ডিসেম্বর অমিত শাহের হাত ধরে বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন শুভেন্দু অধিকারী। এদিন সেই ঘটনাকেই ‘বেইমানি’, ‘বিশ্বাসঘাতকতা’ বলে উল্লেখ করেন অভিষেক। তাঁর কথায়, “যে মাসে তাম্রলিপ্ত সরকার তৈরি হয়েছিল, সেই ডিসেম্বরই বিশ্বাসঘাতক (শুভেন্দু) দল ছাড়ল। ইডি-সিবিআইয়ের ভয়ে, নিজের ঘাড়-পিঠ বাঁচাতে দু’ বছর আগে মেদিনীপুরের সম্মান বিক্রি করে বিজেপিতে যোগ দিয়েছে বিশ্বাসঘাতকরা। মেদিনীপুরের মানুষ তাদের ক্ষমা করবে না। তাঁকে ৫০০ বছর বিশ্বাসঘাতক, মীরজাফর বলে কটাক্ষ করবে সাধারণ মানুষ।” এরপরই স্থানীয় নেতৃত্বকে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদকের নির্দেশ ডিসেম্বর জুড়ে ‘বেইমানমুক্ত; ‘বিশ্বাসঘাতকমুক্ত’ মেদিনীপুর কর্মসূচি নিন।
[আরও পড়ুন: কাঁথির সভার আগে মাঝরাস্তায় গাড়ি থেকে নামলেন অভিষেক, গ্রামে ঘুরে শুনলেন অভিযোগ]
এদিনের সভামঞ্চে দাঁড়িয়ে রাজ্যের বিরোধী দলনেতার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ করেন অভিষেক। তাঁর বিরুদ্ধে হস্টেল তৈরিতে দুর্নীতি-সহ একাধিক অভিযোগ আনেন তিনি। অভিষেকের কথায়, “কথায় কথায় বলে সরকারের ৮০ শতাংশ মানুষ ওর সঙ্গে যোগাযোগ রাখছে। যারা দুর্নীতি করেছে তারা ওর সঙ্গে যোগাযোগ রেখেছে। চোরেরা যোগাযোগ রেখেছে।” এরপরই তাঁর চ্যালেঞ্জ, “১৫ দিন পর আমি আবার কাঁথিতে আসব। উনিও আসুন। উনিও নিজের খাতা নিয়ে আসুন। আমিও আনব। চ্যালেঞ্জ করছি, ওকে উলঙ্গ করে ছাড়ব। মানুষের সামনে উলঙ্গ করতে যদি না পারি, তাহলে আমি রাজনীতি ছাড়ব।”
অভিষেকের কটাক্ষ, “ভেবেছিলাম এখানে আসব, রাজনৈতিক তরজা হবে। কিন্তু একজন তো ভয়ে ল্যাজ গুটিয়ে ডায়মন্ড হারবার পালিয়েছে।” একইসঙ্গে তাঁর চ্যালেঞ্জ, “এবার ২০০ মিটারের মধ্যে সভা করেছি, পরেরবার ২০ মিটারের মধ্যে সভা করব।”উল্লেখ্য, এদিন নন্দীগ্রামের সবুজ প্রধান বিশ্বজিৎ পাল বিজেপি থেকে তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন।