ক্ষীরোদ ভট্টাচার্য: মেডিক্যাল পড়ুয়াদের কাজ শুরুর আগে হিপোক্রেটিসের বদলে চরকের নামে শপথগ্রহণের নির্দেশিকা জারি করেছে ন্যাশনাল মেডিক্যাল কাউন্সিল (NMC)। তা নিয়ে বিতর্ক এখনও চলছে। তার মধ্যেই নতুন আবেদন জানিয়ে এবার সংসদের দ্বারস্থ তৃণমূল সাংসদ ডাক্তার শান্তনু সেন (Santanu Sen)। রাজ্যসভায় বিশেষ নোটিস দিলেন তিনি। তাঁর আবেদন, চরক শপথের জন্য যেন হিপোক্রেটিক শপথ সম্পূর্ণ বাদ না দেওয়া হয়। বরং আয়ুর্বেদ চিকিৎসকরা চরকের নামে শপথ নিয়ে কাজ শুরু করুন। বাকিদের জন্য হিপোক্রেটিক শপথ যেমন ছিল, তেমনই থাকুক।
ফেব্রুয়ারিতে ন্যাশনাল মেডিক্যাল কাউন্সিলের তরফে একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করে বলা হয়, এবার থেকে হবু ডাক্তারদের সার্টিফিকেট নেওয়ার সময় ‘মহর্ষি চরক শপথ’ নিতে হবে। আর তা নিয়ে বিতর্ক শুরু হয় স্বাস্থ্যমহলের একাংশে। এর একটা ইতিহাস আছে অবশ্য। নামে ‘হিপোক্রেটিক ওথ’ হলেও এখন যে শপথবাক্য পাঠ করা হয়, তার সঙ্গে গ্রিক চিকিৎসকের লেখার তেমন যোগ নেই। আধুনিক শপথের রচয়িতা আমেরিকার টাফ্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসাবিজ্ঞানের অধ্যাপক লুই লাসাগ্না। আধুনিক সময়ের উপযোগী করে ১৯৬৪ সালে নতুন শপথবাক্য তৈরি করেন তিনি। তবু, ‘হিপোক্রেটিক ওথ’ কথাটা চিকিৎসাবিজ্ঞানের শপথের সঙ্গে ওতোপ্রোতভাবে জড়িয়ে গিয়েছে। সেই শপথের নির্যাস হল, “চিকিৎসা করার নামে আমি কারও ক্ষতি করব না। রোগীর স্বার্থকে অগ্রাধিকার ও তাঁর ব্যক্তিগত বিষয়কে গোপন রেখে জীবনরক্ষার চেষ্টা চালিয়ে যাব।” তবে এই শপথ বাধ্যতামূলক নয়।
[আরও পড়ুন: লন্ডনে বাংলায় খোদাই করা মেট্রো স্টেশনের নাম, টুইটে উচ্ছ্বাস প্রকাশ বাংলার মুখ্যমন্ত্রীর]
চলতি বছর মেডিক্যালের নতুন শিক্ষাবর্ষ শুরু হওয়ার আগে মেডিক্যাল কাউন্সিল একগুচ্ছ প্রস্তাব দেয়। তার মধ্যে অন্যতম চরকের নাম শপথ, বাদ পড়ে ‘হিপোক্রেটিক ওথ’। এর বিরোধিতায় সেসময় গর্জে উঠেছিলেন ইন্ডিয়াল মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন বা IMA’র একাংশ। যার মধ্যে অন্যতম IMA’র প্রাক্তন সর্বভারতীয় প্রেসিডেন্ট তথা তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ ডাক্তার শান্তনু সেন। NMC’র প্রস্তাবকে শিক্ষায় গৈরিকীকরণের অভিযোগও তুলেছিলেন তাঁরা। এ নিয়ে বিতর্ক এখনও রয়েছে। এবার তা নিয়ে সংসদের দ্বারস্থ হল তৃণমূল। রাজ্যসভায় আনা নোটিসে শান্তুনু সেন লেখেন, আয়ুর্বেদ চিকিৎসকরা চরকের নামে শপথ নিক। তবে সনাতন আবেগের কথা মনে রেখে MBBS-দের জন্য হিপোক্রেটিক শপথ চালু থাকুক।