সোমনাথ রায় ও নন্দিতা রায়, নয়াদিল্লি: আসন্ন বাদল অধিবেশনে (Monsson Session) সংসদ চত্বরে কোনওরকম বিক্ষোভ, ধরনা বা অনশন করা যাবে না। গত শুক্রবারই নয়া বিজ্ঞপ্তিতে এমনটাই জানিয়েছে রাজ্যসভার সচিবালয়। ‘অসংসদীয়’ শব্দ বিতর্কের মধ্যেই এহেন নির্দেশিকা ঘিরে বিতর্ক তুঙ্গে। এই পরিস্থিতিতে সেই নির্দেশকে কার্যত চ্যালেঞ্জ জানাতে চায় তৃণমূল। রবিবার সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় জানালেন, আগামী ২৫ জুলাই সংসদ চত্বরে ধরনায় বসার পরিকল্পনা রয়েছে ঘাসফুল শিবিরের।
সংসদের বাদল অধিবেশনের আগে লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লার ডাকা সর্বদলীয় বৈঠকে যায়নি তৃণমূল কংগ্রেস (TMC)। কিন্তু রবিবার সংসদীয় মন্ত্রী প্রহ্লাদ জোশীর ডাকা বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন তৃণমূল সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় (Supdip Banerjee)। বৈঠকের পরে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে বর্ষীয়ান সাংসদ জানিয়েছেন, এদিনের বৈঠকে তিনি একশো দিনের কাজ ও জিএসটি বাবদ রাজ্য়ের বকেয়া নিয়ে সরব হয়েছিলেন। পাশাপাশি বেকারত্ব থেকে অগ্নিবীরের মতো নানা ইস্যু নিয়ে কথা বলেছেন তিনি। আর সেই সঙ্গেই সুদীপ জানিয়েছেন, সংসদ চত্বরে ধরনায় নিষেধাজ্ঞাকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে এবারের অধিবেশনেই ধরনায় বসতে চায় ঘাসফুল শিবির। তবে কোন ইস্যুতে ওই ধরনা, তা পুরোপুরি জানাননি তিনি। তবে মেঘালয় সংক্রান্ত কোনও ইস্যু নিয়েই যে ধরনায় বসার পরিকল্পনা রয়েছে, তা জানিয়েছেন তিনি।
[আরও পড়ুন: সীমান্ত পেরিয়ে ভারতের দুই জায়গায় ঢুকে পড়ল পাক ড্রোন, বিএসএফের তৎপরতায় রক্ষা]
এদিন সুদীপকে বলতে শোনা গিয়েছে, একশো দিনের কাজে কেন্দ্রে রাজ্যের বরাদ্দ নিয়ে আলোচনাতেই বসছে না কেন্দ্র। এর আগে রাজ্যের ১০ জন সাংসদ কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেছিলেন। সেই সময় তাঁদের আশ্বাসও দেওয়া হয়েছিল, ৪৮ ঘণ্টার মধ্যেই এই আবেদনে সাড়া দেবে কেন্দ্র। কিন্তু এরপর ১ মাস পেরিয়ে গেলেও এখনও এই নিয়ে কোনও কথাই বলেনি কেন্দ্র।
পাশাপাশি সুদীপের দাবি, ”বেকারত্ব নিয়ে কোনও আলোচনা গত ৮ বছরে এই সরকার সংসদে হতে দেয়নি। এবার যাতে সেই নিয়ে আলোচনা হয় সেই আরজি জানানো হয়েছে। পাশাপাশি বিধানসভা ও লোকসভায় মহিলাদের আসন সংরক্ষণ নিয়েও এবারের অধিবেশনে আলোচনা করার আরজি জানিয়েছি। বিভিন্ন রাজনৈতিক দলগুলির এই বিষয়ে ভাবনাচিন্তা কী, তা দেশের মানুষের কাছে পরিষ্কার হোক। এবং এই সংক্রান্ত বিল এবার আনা উচিত।” পাশাপাশি রাজ্যের প্রতি কেন্দ্রে আচরণের কড়া নিন্দা করে তৃণমূল সাংসদ দাবি করেন, দেশে যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামো বিপন্ন। তিনি বলেন, ”সংসদীয় গণতন্ত্রের মূল আদর্শ হচ্ছে হাউস বিলংস টু অপোজিশন। কিন্তু কেন্দ্র সেটা হতে দিচ্ছে কই?”
[আরও পড়ুন: শাশুড়িকে খুন করার জন্য বউমাকে ‘সুপারি’ দিল শ্বশুর, চাঞ্চল্য মধ্যপ্রদেশে]
প্রসঙ্গত, আগামী সোমবার থেকে শুরু হচ্ছে এবারের বাদল অধিবেশন। কিন্তু প্রথম কয়েক দিনে রাজ্যসভা ও লোকসভায় প্রতিদিন দু’জন করে প্রতিনিধি উপস্থিত থাকবেন। ২১ জুলাইয়ের শহিদ দিবসের কারণেই প্রথম কয়েকদিন সেভাবে তৃণমূল সাংসদদের সংসদে দেখা যাবে না। তবে ২৫ জুলাই থেকে অবশ্য তৃণমূল সাংসদরা সবাই উপস্থিত থাকবেন সংসদের অধিবেশনে, এমনটাই জানিয়েছেন সুদীপ।
উল্লেখ্য, রবিবারই রাজ্যসভার চেয়ারম্যান বেঙ্কাইয়া নাইডুর ডাকা বৈঠকে থাকছে না তৃণমূল। ওই বৈঠকেই উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচনে বিরোধীদের প্রার্থী ঘোষিত হবে। শনিবারই লোকসভায় তৃণমূলের দলনেতা ডেরেক ও’ব্রায়েন একথা জানিয়েছিলেন।