সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: হুগলি তুমি কার? চব্বিশের লোকসভা ভোটের প্রার্থী ঘোষণা হওয়ার পর থেকেই রচনা বন্দ্যোপাধ্যায় (Rachna Banerjee) বনাম লকেট চট্টোপাধ্যায়ের (Locket Chatterjee) ‘মেগা ফাইটে’ নজর ছিল। শেষমেষ হুগলির 'কুর্সি'তে বসতে চলেছেন রচনা বন্দ্যোপাধ্যায়। রাজনীতির ইনিংস শুরু করেই পয়লা ব্যাটিংয়ে ছক্কা হাঁকিয়েছেন অভিনেত্রী। গতবারের সাংসদ তথা বিজেপি প্রার্থী লকেট চট্টোপাধ্যায়কে ৭০ হাজারেরও বেশি ভোটে হারিয়ে হুগলির 'দিদি নম্বর ১' রচনা। তবে দুঁদে রাজনীতিক লকেটকে হারানো কিন্তু সোজা ছিল না। পদ্ম-পুকুরে ঘাসফুল ফুটিয়ে এখন তৃপ্তির হাসি হাসছেন রচনা। তবে সৌজন্য ভুলে যাননি।
সিঙ্গুরের যে দইয়ের প্রশংসা করে প্রতিদ্বন্দ্বী লকেট চট্টোপাধ্যায়ের কাছে খোঁচা খেয়েছিলেন, সেই রচনা বন্দ্যোপাধ্যায়ই এবার ভোটে জিতেই ইন্ডাস্ট্রির এককালীন সতীর্থকে এক হাঁড়ি দই পাঠাবেন বলে জানিয়েছেন। নির্বাচনী মার্কশিটে ব্লকবাস্টার নম্বর পেয়ে বুধবারই চুঁচুড়ার ওলাইচণ্ডীতলা মন্দিরে ঈশ্বর দর্শন করতে গিয়েছিলেন ভাবী সাংসদ। দিন কয়েক আগে শাশুড়ি গত হওয়ায় পুজো দিতে পারেননি ঠিকই তবে দূর থেকে দেবীদর্শন করে আসেন তিনি। সেখান থেকে বেরিয়েই ধন্যবাদ জানালেন তাঁদের, যাঁরা রচনাকে নিয়ে সোশাল মিডিয়ায় মিমের পাহাড় তৈরি করেছিলেন। তৃণমূলের হবু সাংসদের কথায়, ওঁরাই আমাকে অনেক পাবলিসিটি দিল। আবার রচনা এও সাফ জানালেন যে, তিনি হুগলি নম্বর ওয়ান, আর দিদি নম্বর ওয়ান একজনই, তিনি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
নিজস্ব চিত্র।
[আরও পড়ুন: বিশ্ববাংলা গেটে চমক ঋতুপর্ণা-প্রসেনজিতের, ‘অযোগ্য’র অভিনব প্রচার]
তারকারা সাংসদ কিংবা বিধায়ক পদে বসলে নাকি কাজ হয় না! এই বদনাম কিংবা অপপ্রচার বহুদিনের। এদিন এপ্রসঙ্গেও মুখ খুললেন রচনা। সাফ বললেন, "এবার দেখুন সেলেব সাংসদরা কী কাজ করে। হুগলিবাসী জন্য প্রচুর কাজ করব। প্রতিশ্রুতি তাঁর।" ভোটের টিকিট পাওয়ার পর থেকেই হুগলির প্রায় মাটি আঁকড়ে পড়েছিলেন রচনা। কখনও জনসভা, রোড শো করে গিয়েছেন। বাড়ি বাড়ি ঘুরে সেরেছেন জনসংযোগ।
কোন অঙ্কে দুঁদে নেত্রী লকেটকে টেক্কা দিয়ে কিস্তিমাত করলেন রচনা বন্দ্যোপাধ্যায়?
বিজেপি প্রার্থী লকেট চট্টোপাধ্যায় গত ভোটে জেতার পর থেকেই তাঁকে আর তাঁর সংসদীয় কেন্দ্রে তেমনভাবে দেখা যায়নি বলে একটা ক্ষোভ জমেছিল সাধারণ মানুষের মধ্যে। এমনকী পঞ্চায়েত ভোটের প্রচারে এসে ক্ষোভের মুখেও পড়তে হয়েছিল লকেটকে। তাঁর নামে নিখোঁজ পোস্টারও পড়ে বহু জায়গায়। এছাড়াও বিজেপির আরও বড় মাথা ব্যাথার কারন গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব। হুগলি লোকসভা কেন্দ্রে লকেট নিজের নাম নিজেই ঘোষণার পরেই দলের কর্মীরা ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন। তাই এবার রচনা বন্দোপাধ্যায়কে তৃণমূল প্রার্থী ঘোষণা করার পর থেকেই কিছুটা হলেও হুগলিতে পদ্মপ্রার্থী লকেট চট্টোপাধ্যায় ব্যাকফুটে ছিলেন। তবে প্রচারের ময়দানে এককালের সিনে ইন্ডাস্ট্রির সতীর্থ বা প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী রচনাকে ঝাঁজালো কথায় বিঁধতে ছাড়েননি লকেট। শেষমেষ ‘জনতা জনার্দন’-এ বিশ্বাসী রচনাই জয়ের হাসি হাসলেন। “জয়ই জবাব। নতুন করে কিছু বলার নেই”, লকেটকে হারানোর পর প্রথম প্রতিক্রিয়া রচনার।