রুপায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়: শুভেন্দু অধিকারীর মুখে ফের ‘সময়ের তত্ত্ব’। অমিত শাহকে বিদায় জানাতে বিমানবন্দরে গিয়ে বিরোধী দলনেতা বললেন, ‘টাইম হো গয়া।’ দলের চাপে পড়ে ‘ডিসেম্বর তত্ত্ব’ নিয়ে নতিস্বীকার করেছিলেন শুভেন্দু (Suvendu Adhikari)। বলেছিলেন, এটা তাঁর নিজস্ব বক্তব্য ছিল। কিন্তু রাজ্য বিজেপি দপ্তরে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহর (Amit Shah) সঙ্গে বৈঠকের পর ফের সেই ‘সময়ের তত্ত্ব’ সামনে এনে জল্পনা উসকে দিলেন শুভেন্দু।
নবান্নে বৈঠকের পর শনিবার দুপুরে অমিত শাহ শহর ছাড়ার পর কলকাতা বিমানবন্দরে শুক্রবার রাতে দলীয় দপ্তরে বৈঠকের প্রসঙ্গ উঠে আসে শুভেন্দুর মুখে। যে বৈঠকে হাজির ছিলেন অমিত শাহ। শুভেন্দু এদিন দাবি করেন, ‘‘বৈঠকের একটা কথা আমি শুধু বলতে পারি। কে বলেছে আমি বলবো না। সেটা হচ্ছে, টাইম হো গয়া।’’ নিজের এই দাবির ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে বলেন, ‘‘বড় বড় ডাকাত-চোরেদের বিরুদ্ধে সংবিধান-আইন মেনে যা যা ব্যবস্থা করা উচিত সেটা করা হবে। বৈঠকের পর এটা আমরা আশ্বস্ত এবং উৎসাহিত।’’ শুভেন্দু ফের এইধরণের দাবি করে যখন জল্পনা উস্কে দিলেন তখন তাঁর পাশে ছিলেন রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারও। সংবাদমাধ্যমের সামনে শুভেন্দুর কথা নিয়ে কোনও মন্তব্য না করলেও শাহর বৈঠক প্রসঙ্গে সুকান্ত নিজে কিন্তু এইধরণের ‘টাইম হো গয়া’র দাবি করেননি।
[আরও পড়ুন: হুমকি দিয়েছিলেন মেসিকে, ‘এলএম ১০’-এর কাছে এবার হার স্বীকার করে নিলেন মেক্সিকোর সেই বক্সার]
আবার এই মন্তব্যটি বৈঠকে কে করেছেন তা নিয়ে ধোঁয়াশা রাখলেও রাজনৈতিক মহলের মতে অমিত শাহ এই কথা বলেছেন বলেই ইঙ্গিত করতে চেয়েছেন বিরোধী দলনেতা। পাশাপাশি শুভেন্দু এদিন বলেন, মঙ্গলবার সংসদে অমিত শাহ নিজের অফিসে তাঁকে ও সুকান্ত মজুমদারকে (Sukanta Majumdar) দেখা করতে বলেছেন। তারিখ রাজনীতি খারিজ হয়ে যাওয়ার পর ফের এদিন শুভেন্দুর এইধরণের দাবি নিয়ে তীব্র কটাক্ষ করেছে তৃণমূল কংগ্রেস। তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ (Kunal Ghosh) শুভেন্দুর এইধরণের দাবিকে পাগলের কথা বলে কটাক্ষ করেছেন। কুণাল বলেন, ‘‘১২ পার, ১৪ পার, ডিসেম্বরে নাকি সরকার পড়ে যাবে। পাগলের কথার প্রতিক্রিয়া নিতে গেলে ওঁকে জিজ্ঞেস করুন।’’ কুণালের বক্তব্য, ‘‘কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সম্পূর্ণ সরকারি ও প্রশাসনিক কাজে নবান্নে (Nabanna) এসেছিলেন। অনুমান করা যাচ্ছিল, এটা দেখে মানসিক চাপ অনুভব করবে শুভেন্দু এবং ওদের লোকজন। আমি তো সকালে বলেছিলাম পাগলামি শুরু হবে। আসলে আইডেন্টিটি ক্রাইসিস। দেখাতে হবে আমিও ভেসে আছি। আমাদেরও ডেকেছে। সংসদে মন্ত্রীরা বসে থাকলে ইচ্ছে মতো ঢোকা বেরনো যায়। শুভেন্দুকে একাও সময় দেননি।’’
[আরও পড়ুন: লাতিন ফুটবল ভাল না! এমবাপের মন্তব্যে রোষ, ফ্রান্স শিবিরে অশান্তি বেঞ্জেমাকে নিয়ে]
শুভেন্দু এদিন জানান, সোমবার বাংলার সাংসদদের নিয়ে দিল্লির বৈঠকে তাঁকে থাকতে বলেছেন অমিত শাহ। এবং মঙ্গলবার সংসদের অফিসে তিরিশ মিনিট আমাকে ও সুকান্ত মজুমদারকে সময় দিয়েছেন। গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে কথা বলবেন বলেছেন। আমিও অনুপ্রবেশ-সহ রাজ্যের বিরুদ্ধে বিভিন্ন বিষয়ে জানাবো।’’ তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষের দাবি, ‘‘অমিত শাহ বলে গিয়েছেন সুকান্তকে মেনে চলতে হবে। অমিত শাহ এবার সফরে শুভেন্দুকে সেন্সর করেছেন। গাড়িতে বসে বলেছেন সুকান্ত-দিলীপ ঘোষকে মেনে চলতে হবে। আসলে শুভেন্দু আইডেন্টিটি ক্রাইসিস ও মানসিক অবসাদ থেকে চিৎকার করছেন।’’ এদিকে, রানাঘাটে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক তথা সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Abhishek Banerjee) সভার পর ফের রানাঘাটে পালটা সভা করতে চান শুভেন্দু অধিকারী। ২৩ ডিসেম্বর রানাঘাটে বিজেপির সভা হতে পারে। এ প্রসঙ্গে তৃণমূল মুখপাত্র বলেন, ‘‘আবার শুভেন্দুর শয়নে স্বপনে অভিষেক। রাজনৈতিক দেউলিয়াপনা। ওকে শাহ সাবধান করে গিয়েছে। এখন তাই শুভেন্দুর পাগল পাগল অবস্থা।’’