সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ৬ জুলাই, শনিবার চল্লিশের দোরগোড়ায় কড়া নাড়লেন রণবীর সিং। তাঁর মতো রসিক, খোলা মনের মানুষের জুড়ি মেলা যে ভার! সেকথা বারবার সহকর্মীদের আলাপচারিতায় উঠে এসেছে। এবার বলিউড সুপারস্টারের ৩৯তম জন্মদিনে শুভেচ্ছা জানিয়ে কলম ধরলেন তাঁর পর্দার 'শ্বশুরমশাই' টোটা রায়চৌধুরী।
রণবীর সিংয়ের প্রশংসায় পঞ্চমুখ টোটা। তাঁর কথায়, "ছেলেটা বড্ড ভালো। এই নির্দয় সময়ের প্রেক্ষিতে অপ্রয়োজনীয় রূপে ভালো। সর্বদা একটি স্মিত হাসি মুখে লেগেই আছে। আর সেই হাসিটা শুধু মুখ থেকে নিঃসৃত নয়, হৃদয় থেকে। দেখা হলেই কষে জড়িয়ে ধরেই প্রশ্ন- 'স্যর, কেমন আছেন?' রণবীরকে পালটা একই প্রশ্ন করলেই উত্তর দেবে, 'আমি সবসময়েই হাসিখুশি থাকি!' বলেই হা হা করে ওর সিগনেচার হাসিটা হাসবে। সেটে ওঁর প্রবেশমাত্রই পরিবেশ বদলে যায়। পোড়খাওয়া গম্ভীর টেকনিশিয়ানদের মুখেও দেখতাম, একটা হালকা হাসি। যেন ওঁদের আপন কেউ এসেছে। ড্যান্সাররা থাকলে তো কথাই নেই। হইহই করে ওকে ছেঁকে ধরবে আর রণবীর মুম্বাইয়া ভাষায় বলবে- "কেয়া রে পান্টার লোগ। কেয়া চল রহা হ্যায়? আজ ফোড় দেতে হ্যায়, চল।" ওঁর জন্য টেকনিশিয়ান থেকে ড্যান্সার থেকে আ্যক্টর, সবাই দুশো শতাংশ দেয়।"
পাশাপাশি কাজের প্রতি রণবীর সিংয়ের নিষ্ঠার কথাও উল্লেখ করতে ভুললেন না টোটা রায়চৌধুরী। এত মজার মানুষ হয়েও ক্যামেরা চললেই কীভাবে নিজের চরিত্রে মধ্যে ঢুকে পড়েন, 'রকি অউর রানি'র স্মৃতি হাতড়ে টোটা বললেন, "ভোজবাজির মতো তাঁর পরিবর্তন হয় পরিচালকের 'অ্যাকশন' ঘোষণা শুনেই। মুহূর্তের মধ্যে চরিত্রে রূপান্তরিত হয়। সেটা এতটাই আকস্মিক, অস্বাভাবিক এবং নিখুঁত যে বহুবার প্রত্যক্ষ করার পরও চমকে যাই আমি, মুগ্ধ হই। শটের বিরতিতে একবার একা পেয়ে আচমকা প্রশ্ন করেছিলাম- "তুমি দুঃখ পাওনা?" মুহূর্তের বিহ্বলতা কাটিয়ে চোখে চোখ রেখে জবাব দিয়েছিল, "কাউকে দেখতে দিই না, জানতে দিই না।" বলেই একটি চওড়া হাসি।
[আরও পড়ুন: সোনাক্ষীর শ্বশুরের কেচ্ছা নিয়ে অপমান! ‘মুখ বন্ধ করা শেখ’, ভাইকেই বিঁধলেন অভিনেত্রী?]
এমনকী বলিউডি তারকাদের ভিড়ের মাঝেও কীভাবে রণবীর সিং নিজের মা-বাবার সঙ্গে বাঙালি অভিনেতাকে পরিচয় করিয়ে দিয়েছিলেন? সেকথাও শেয়ার করলেন টোটা রায়চৌধুরী। "'রকি অউর রানি কি প্রেম' কাহানি ছবির প্রিমিয়ারে শো শেষের পর এক কোণায় দাঁড়িয়ে রয়েছি। চারিদিকে এত তারকা যেন নক্ষত্রমণ্ডল নেমে এসেছে। চোখধাঁধানো এই গ্ল্যামারে অনভ্যস্ত তাই নীরবে পলায়ন-পথ অনুসন্ধান করছি। হঠাৎ সুনামির মতো এসে, ভীম-শক্তিতে আলিঙ্গন করে, গালে একটা চুম্বন এঁকে দিয়ে, হাত ধরে হিড়-হিড় করে টানতে টানতে ওঁর মা-বাবার সঙ্গে আলাপ করাতে নিয়ে গেল। আজীবন রণবীরের এই আন্তরিকতা মনে রাখব", জানালেন টোটা।
শেষপাতে রণবীরকে শুভেচ্ছা জানিয়ে টোটার সংযোজন, "আজ ছেলেটির জন্মদিন। ওঁকে দেওয়ার মত সত্যিই আমার কিছু নেই। শুধু দু' হাতে আশীর্বাদ করতে পারি আর সেই দু' হাত জোড় করে ঈশ্বরের কাছে ওঁর মঙ্গলকামনা করতে পারি। আজীবন ঠিক এমনটাই থেকো, রণবীর।"