সঞ্জয় লাহিড়ি: গঙ্গার উৎপত্তিস্থল গোমুখ অতিক্রম করে ঊর্ধ্বমুখী পথে চারিদিকে তুষারশৃঙ্গে ঘেরা তপোবন প্রকৃতির অপূর্ব নৈসর্গিক দৃশ্য সম্বলিত এক মনোমুগ্ধকর স্থান৷ এই অঞ্চলটি দেখার ইচ্ছায় প্রথমে চলুন হরিদ্বার থেকে বাসে উত্তরকাশী৷ পরের দিন শেয়ার জিপে চলুন এক মনোরম যাত্রাপথে হরশিল হয়ে গঙ্গোত্রী৷
ভাগীরথীর তীরে এই জনপদটি দেখে আপনি হবেন অভিভূত৷ প্রথমে কোনও হোটেলে বা ধর্মশালায় উঠুন এবং তপোবন যাওয়ার জন্য গাইড বা পোর্টার ঠিক করুন৷ অবশ্যই ফরেস্ট ডিপার্টমেন্টের অফিস থেকে তপোবন যাওয়ার পারমিট সংগ্রহ করবেন৷ সময় কাটান গঙ্গামাতার মন্দিরে৷ মন্দির থেকে সিঁড়ির ধাপ নেমে গিয়েছে সগর্জনে প্রবহমান ভাগীরথীর ঘাট পর্যন্ত৷ সন্ধেয় উপভোগ করতে পারেন গঙ্গামাতার মন্দিরের সন্ধ্যারতি৷ পরের দিন ভুজবাসার উদ্দেশে বেরিয়ে পড়ুন৷ গঙ্গোত্রী জনপদ ও মন্দির ছাড়িয়ে ধাপে ধাপে রাস্তা ঊর্ধ্বমুখী হালকা জঙ্গলের ভিতর দিয়ে৷ গঙ্গোত্রী ন্যাশনাল স্যাংচুয়ারির চেকপোস্টে নির্দিষ্ট ফি জমা দিয়ে সংগ্রহ করুন প্রবেশপত্র৷ এবার পথচলা শুরু৷ দেখবেন তুষারমুকুটের হাতছানি, পথের ধারে বেশ কিছুটা নিচ দিয়ে ভাগীরথীর সগর্জনে বয়ে চলা, পাহাড়ের ওপর থেকে ঝরনার ঝরে পড়া৷
চায়ে চুমুক দিতে দিতে ভাগীরথীর তীর থেকে উপভোগ করতে পারেন দূরে তুষারমুকুটের কোলে সূর্যাস্তের অনবদ্য দৃশ্য৷ চড়াইপথে উঠে গোমুখগামী রাস্তা ধরুন৷ প্রায় ঘণ্টা আড়াই চলার পর ডানদিকের পথ নেমে গিয়েছে গোমুখের পথে এবং বাঁ-দিকে বোল্ডারপূর্ণ চড়াই পথ চলে গিয়েছে তপোবন অভিমুখে৷ পাঁচ কিলোমিটার বিস্তৃত এই পথের কিছুটা এগোনোর পর দেখতে পাবেন গোমুখ হিমবাহ থেকে জলধারা বেরিয়ে আসার দৃশ্য৷ গোমুখের কাছের অঞ্চলটিতে কিছুক্ষণ পর পরই ভেঙে পড়ছে বরফের চাঁই৷ এরপর আপনাকে বোল্ডার ও গ্লেসিয়ারের উপর দিয়ে চলতে হবে সাবধানে৷ শেষ দুই কিলোমিটার ঝুরো পাথরের খাড়াই রাস্তা অতিক্রম করে আপনি পৌঁছে যাবেন তপোবনের স্বর্গীয় পরিবেশে৷ তপোবনের সোনালি ঘাসে ছাওয়া বিস্তৃত উপত্যকাকে ঘিরে রয়েছে শিবলিঙ্গ, মেরু পর্বত, কেদারনাথ শৃঙ্গ, সুদর্শন এবং ভাগীরথী ১, ২ এবং ৩ নং শৃঙ্গ৷ স্বচ্ছ জলের ধারার পাশে রয়েছে টেন্টিং গ্রাউন্ডও৷ চাইলে খানিকক্ষণের জন্য ঘুরে আসুন মৌনিবাবার আশ্রম৷ পরদিন ঘুরে দেখুন খাড়াপাথর৷ এখান থেকে তুষার কিরীটের সৌন্দর্য অপরিসীম৷ তপোবন থেকে নন্দনবন ও বাসুকিতালও ঘুরে আসা যায়৷
কীভাবে যাবেন
ট্রেনে হরিদ্বার৷ হরিদ্বার থেকে বাস বা জিপে উত্তরকাশী৷ হৃষীকেশ থেকে বাস বা জিপে উত্তরকাশী যেতে পারেন৷ উত্তরকাশীতে একটি রাত কাটিয়ে পরদিন শেয়ার জিপে বা ভাড়া গাড়িতে গঙ্গোত্রী৷
কোথায় থাকবেন
উত্তরকাশীতে থাকার জন্য রয়েছে হোটেল৷ গঙ্গোত্রীতেও থাকার জন্য রয়েছে বিভিন্ন মানের হোটেল, গেস্ট হাউস ও ধর্মশালা৷
The post যেখানে হাতছানি তুষারমুকুটের appeared first on Sangbad Pratidin.