সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: আর একটু দেরি হলেই হয়তো এক নারী হারিয়ে যেত পতিতাপল্লির অন্ধকারে৷ কিন্তু তিনি দেরি করেননি৷ রাতবিরেতে যুবতীর আর্তনাদ শোনা মাত্র দৌড়ে গিয়েছিলেন৷ হাতে ধরা সার্ভিস রিভলবার৷ আর তার জেরেই পতিতাপল্লির প্রায় দোরগোড়া থেকে জীবনের পথে ফিরলেন এক কলেজছাত্রী৷
ঘটনা শনিবার রাতের৷ চিৎপুর রোডের উপর ট্রাফিক সামলানোর দায়িত্বে ছিলেন সার্জেন্ট রণবীর দাস৷ বেশি গতিতে একটা বাইককে দৌড়ে আসতে দেখেই তিনি আটকান৷ সম্প্রতি রাজ্য সরকারের ‘সেভ লাইফ, সেফ ড্রাইভ’ প্রকল্পের জেরে মদ্যপ বাইক আরোহীদের ধরতে ব্যাপক ধরপাকড় শুরু হয়েছে৷ জোড়াবাগান এলাকায় একাধিক এই ধরনের অভিযোগ জমা পড়ায়, কড়াকড়ির মাত্রা বাড়ানোও হয়েছিল৷ ওই বাইক আরোহীকে আটক করার সময়ই তিনি এক যুবতীর চিৎকার শুনতে পান৷ মুহূর্তমাত্র দেরি না করে তিনি দৌড়ে যান৷ দেখেন কয়েকজন যুবক এক যুবতীকে জোর করে কোথাও নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছে৷ তুখোড় সার্জেন্টের বুঝতে অসুবিধা হয় না যুবকরা কারা৷ কেননা এই এলাকায় রাতে সোনাগাছির দালাল ছাড়া আর কারও ঢোকার সাধ্য নয়৷ যুবতীকে যে জোর করে সোনাগাছিতে ঢোকানোর চেষ্টা হচ্ছে বুঝতে পারা মাত্রই হাতের রিভলবার উঁচিয়ে তিনি দৌড়ে যান৷ পুলিশকে দেখেই চম্পট দেয় যুবকরা৷ রক্ষা পায় ওই যুবতী৷
পুলিশ তাঁকে উদ্ধার করার পর প্রথম মিনিট দশেক কথাই বলতে পারেননি ওই যুবতী৷ পরে তিনি জানান, তাঁর বাড়ি খড়দহে৷ পড়াশোনা করেন উত্তর কলকাতারই এক কলেজে৷ বাড়িতে অশান্তির কারণে সকালে বাড়ি ছেড়েছিলেন৷ দিনভর ধর্মতলা চত্বরেই ঘোরাঘুরি করেন৷ রাত নামলে উপায়ন্তর না দেখে নিজের কলেজের দিকেই হাঁটা দেন৷ কলেজ থেকে সোনাগাছি খুব দূরে নয়৷ একটু বেশি রাতের দিকে তাঁকে একলা ঘুরতে দেখেই কবজা করার চেষ্টা করে দালালরা৷ ঠিক সময় সার্জেন্ট রণবীর দাস হাজির না হলে ওই কলেজ ছাত্রীকে যৌন পেশাতেই নামিয়ে দিত তারা৷ তবে পুলিশ অফিসারের সাহসিকতায় শেষমেশ তা সম্ভব হয়নি৷ ওই ছাত্রীকে বাড়িতে পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে৷
এ শহরেই নারীর সম্ভ্রম বাঁচাতে গিয়ে প্রাণ দিয়েছিলেন ট্রাফিক সার্জেন্ট বাপি দাস৷ মাঝেমধ্যে দুর্ঘটনা ঘটলেও শহরকে নিরাপদ রাখতে সবরকম চেষ্টা করে চলেন পুলিশরা৷ আরও এক ট্রাফিক সার্জেন্ট জীবনের ঝুঁকি নিয়ে যুবতীকে উদ্ধার করে সে কথাই যেন প্রমাণ করে দিলেন৷
The post সার্জেন্টের সাহসিকতায় পতিতাপল্লির দালালদের হাত থেকে বাঁচল ছাত্রী appeared first on Sangbad Pratidin.