স্টাফ রিপোর্টার: বর্ধমানের সীতাভোগ-মিহিদানা, শক্তিগড়ের ল্যাংচা-কলকাতার রসগোল্লা-রানাঘাটের পান্তুয়া। সমুদ্রের নোনতা হাওয়া গায়ে মেখে চেখে নেওয়া যাবে এই শীতে। এক ছাদের তলায় বঙ্গের হরেক মিষ্টির সম্ভার বসতে চলেছে বাঙালির অন্যতম প্রিয় সমুদ্র সৈকতে। এই প্রথম নতুন বছরে বঙ্গোপসাগরের তীরে মিষ্টি উৎসব।
ফাইল ছবি
বৃহস্পতিবার নবান্নে সাংবাদিক বৈঠকে দিঘায় মিষ্টি উৎসবের কথা জানান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বছরশেষের এই সময়টায় দিঘায় উপচে পড়া ভিড়। কাতারে কাতারে পর্যটক। দিঘাকে কেন্দ্র করে আশপাশের মন্দারমণি-তাজপুরেও পর্যটক সমাগম ব্যাপক। মুখ্যমন্ত্রীর মাস্টার স্ট্রোক ‘মিষ্টি উৎসব’-এ সেই ভিড় তিনগুণ হবে বলে মনে করছেন হোটেল মালিকরা। আগামী ৭ থেকে ৯ জানুয়ারি দিঘায় মিষ্টি উৎসবের দায়িত্ব মুখ্যমন্ত্রী তুলে দিয়েছেন বিধায়ক অখিল গিরি, মন্ত্রী মানস ভুঁইয়ার হাতে। বাংলার প্রতিটি জেলা থেকে ৬ হাজারের বেশি মিষ্টি ব্যবসায়ী অংশ নেবেন এই উৎসবে।
মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ আসতেই কোমর বেঁধে নেমে পড়েছে জেলা প্রশাসন। শুক্রবার মিষ্টি উৎসব নিয়ে বিশেষ বৈঠক করেছেন জেলা প্রশাসনের আধিকারিকরা। জায়গা বাছতে জেলাশাসক সরেজমিনে খতিয়ে দেখছেন দিঘার সমুদ্রতীর। বিধায়ক অখিল গিরি জানিয়েছেন, বিলেতের ফুড ফেস্টিভ্যালের ধাঁচে এই উৎসব হবে দিঘার সমুদ্রতীরে। যেখানে পেটপুজোর পাশাপাশি সঙ্গীতানুষ্ঠানের বিশেষ ব্যবস্থা থাকবে। অখিল গিরির কথায়, "যেখানে মিষ্টি উৎসব হবে তার পাশে পেল্লায় সাংস্কৃতিক মঞ্চ তৈরি করা হবে। সেখানে বাংলার আধুনিক-বাউল গান-ব্যান্ডের গান পরিবেশন করবেন শিল্পীরা।
পর্যটক টানতে ঢেলে সাজানো হয়েছে দিঘাকে। অ্যাডভেঞ্চার স্পোর্টস দিয়ে তৈরি হয়েছে নতুন ঢেউ সাগর পার্ক। সেখানেই দিঘার নতুন আকর্ষণ হতে চলেছে শীতকালীন এই মিষ্টি উৎসব। কোথায় বসবে মিষ্টি খাওয়ার আসর? প্রাথমিকভাবে দুটো জায়গা বেছে নেওয়া হয়েছে মিষ্টি উৎসবের জন্য। একটি নতুন দিঘায় অন্যটি পুরনো দিঘায়। বিধায়ক অখিল গিরি জানিয়েছেন, দ্রুত এর মধ্যে একটি জায়গা চূড়ান্ত করা হবে। নিউ দিঘায় সমুদ্রতীরের পাশে যে বড় মার্কেট রয়েছে তার ভেতরে প্রশস্ত জায়গা রয়েছে মিষ্টি উৎসবের জন্য। এছাড়াও ওল্ড দিঘায় বিশ্ব বাংলা উদ্যানের সামনে কিংবা সৈকতাবাসের পাশেও যথেষ্ট জায়গা রয়েছে মিষ্টি উৎসবের জন্য।
ফাইল ছবি
এখানে একটি আগে থেকে তৈরি করা একটি ওপেন এয়ার স্টেজ রয়েছে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের জন্য। অখিল গিরি জানিয়েছেন, যদি ওল্ড দিঘায় অনুষ্ঠান হয় তাহলে আলাদা করে স্টেজ তৈরি করার প্রয়োজন নেই। জেলাশাসক নিজে দুটি জায়গা সরেজমিনে দেখে সরকারের সঙ্গে কথা বলে বিষয়টি চূড়ান্ত করবেন। দু’টি জায়গার মধ্যে কোন জায়গায় সর্বাধিক মিষ্টির স্টল দেওয়া যায় সেটা দেখছেন মানস ভুঁইয়াও। মন্ত্রী মানস ভুঁইয়া জানিয়েছেন, গোয়া ফুড অ্যান্ড কালচারাল ফেস্টিভ্যালের আদলেই দিঘায় এই উৎসবের পরিকল্পনা চলছে। যেখানে খাওয়া দাওয়ার পাশাপাশি ভিন্ন ধারার সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান উপভোগ করতে পারবেন পর্যটকরা।