সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: জীববৈচিত্র্যে ভরা আমাদের এই পৃথিবী। কত ধরনের পশু, পাখি, প্রাণীর বাস এই ধরণীতে! কিন্তু, কীভাবে তৈরি হল এই জীবজগৎ? এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজে বের করেছিলেন বিখ্যাত ব্রিটিশ জীববিজ্ঞানী চার্লস ডারউইন। তাঁর সেই মতবাদ ‘বিবর্তনবাদ’ নামে পরিচিত। জীববিজ্ঞানের ইতিহাসে এই মতবাদকে অন্যতম শ্রেষ্ঠ আবিষ্কার বলে মনে করা হয়। কিন্তু ডারউইনের এই বিখ্যাত মতবাদটিকেই এবার স্কুলের সিলে্বাস থেকে বাদ দিয়ে দিল তুরস্ক সরকার। সরকারের এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে সরব হয়েছে সেদেশের বিরোধী দলগুলি।
[মোদি ‘সত্যিকারের বন্ধু’, বৈঠকের আগে উচ্ছ্বসিত ট্রাম্প]
সম্প্রতি স্কুল পড়ুয়াদের জন্য নয়া সিলেবাস তৈরি করেছে তুরস্ক সরকার। নতুন সিলেবাসে বির্বতনবাদ সংক্রান্ত ‘The begining fo Life and Evolution’ অধ্যায়টি বাদ দেওয়া হয়েছে। তুরস্ক শিক্ষা দপ্তরের যুক্তি, ‘বিতর্কিত’ এই বিষয়টি বুঝতে স্কুলের সাধারণ ছাত্রদের সমস্যা হচ্ছে। তাই শুধুমাত্র কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘বিবর্তনবাদ’ পড়ানো হবে। চলতি শিক্ষাবর্ষ থেকেই তুরস্কে হাই স্কুলের এই নয়া সিলেবাস কার্যকর হবে বলে জানা গিয়েছে। এদিকে, স্কুলের সিলেবাস থেকে ‘বিবর্তনবাদ’ বাদ দেওয়ার সিদ্ধান্তের সমালোচনার সরব হয়েছে তুরস্কের বিরোধী দলগুলি। তাদের অভিযোগ, সাধারণ পড়ুয়াদের অন্ধকারে ঠেলে দিতে চাইছে সরকার।
[দুর্ঘটনাগ্রস্ত ট্যাঙ্কার থেকে তেল চুরির হিড়িক, বিস্ফোরণে পাকিস্তানে মৃত্যুমিছিল]
বস্তুত, তুরস্কে স্কুল বা কলেজের সিলে্বাসে আদৌও বিবর্তনবাদ রাখা হবে কি না ,তা নিয়ে বিতর্ক দীর্ঘদিনের। উপপ্রধানমন্ত্রী নুম্যান কুর্টুমাস একসময়ে বলেছিলেন, ডারউইনের বিবর্তনবাদ একটি বস্তাপচা মতবাদ। স্কুল বা কলেজে এই মতবাদ পড়ানোর কোনও প্রয়োজন নেই। বস্তুত, ৬-৭ বছর আগেও তুরস্কের বিজ্ঞানের পাঠ্যবইতে বিবর্তনবাদের পাশাপাশি ক্রিয়েটিজমের তত্ত্বও সমান গুরুত্ব পেত। ২০০৯ প্রচ্ছদে চার্লস ডারউইনের ছবি থাকায় সংগঠনের মুখপাত্রের সম্পাদককে বহিষ্কার করেছিল সায়েন্টিফিক অ্যান্ড টেকনোল়জিক্যাল রিসার্চ কাউন্সিল অব টার্কি বা TUBITAK কর্তৃপক্ষ। ২০১৩ সাল থেকে বিবর্তনবাদ নিয়ে বই ছাপাও বন্ধ করে দেওয়া হয়। প্রসঙ্গত, এই ক্রিয়েটিজম হল বাইবেলের এক তত্ত্ব। এই তত্ত্ব অনুযায়ী, পৃথিবীর যাবতীয় জীববৈচিত্র্য ভগবানই তৈরি করেছেন। তুরস্কের রক্ষণশীলরা বরাবরই এই ক্রিয়েটিজম তত্ত্বের পক্ষে সওয়াল করে আসছেন। তাঁদের মতে, ডারউনের বিবর্তনবাদ ইসলাম বিরোধী। তাই এই মতবাদ যাতে স্কুল পড়ুয়াদের মনে প্রভাব ফেলতে না পারে, সরকারকেই তার ব্যবস্থা করতে হবে।