সুমিত বিশ্বাস, পুরুলিয়া: তখন বেলা এগারোটা। সকালের দোকান–বাজার সেরে শহর পুরুলিয়া প্রায় ঘরবন্দি। পুরুলিয়া জেলা পুলিশ কার্যালয় তথা হাসপাতাল মোড়ের সামনে গুটিকয়েক লোকের যাওয়া আসা। সেখানে থাকা একটি পেট্রোল পাম্পে অবশ্য সামান্য ভিড়। হঠাৎই দুই ষাঁড় লড়তে লড়তে ওই পেট্রোল পাম্পের কাছে চলে আসে। দুই ষাঁড়ের লড়াইয়ে প্রায় খালি হয়ে যায় পাম্প।
কিন্তু লড়াই থামে না। বরং পাম্পের ভেতরে ঢুকে চলে শক্তি প্রদর্শন। আর শক্তি দেখানোর লড়াইয়ে ভাঙতে থাকে পেট্রোল পাম্পের কাঁচের দরজা। ভাঙে কম্পিউটর। চুরমার হয়ে যায় কাচের টেবিল। এভাবেই শুক্রবার শহর পুরুলিয়ার রাজপথে লকডাউনের মধ্যেও এই ‘বুল ফাইট’ দেখতে ভিড় জমে যায়। হিমশিম অবস্থা হয় পাম্প কর্মীদের। প্রায় পনেরো মিনিট লড়াইয়ে ত্রস্ত হয়ে যায় সমগ্র এলাকা।
[ আরও পড়ুন: বিদেশফেরতদের চিহ্নিতকরণ শুরু উত্তরপাড়ায়, বাড়ির বাইরে দেওয়া হল নোটিস ]
লকডাউনের জেরে সারা দেশের সঙ্গে পুরুলিয়াও প্রায় শুনশান। তাই এখন এই শহরের রাস্তা দখল করেছে সারমেয়, গরু আর ষাঁড়। শুক্রবার বেলা এগারোটা নাগাদ প্রায় আচমকাই পুরুলিয়া জেলা পুলিশ কার্যালয়ের সামনে দু’টি ষাঁড় লড়তে শুরু করে। তারপরই সেখান থেকে পঞ্চাশ মিটার দূরে লাগোয়া পেট্রোল পাম্পের কাছে চলে আসে। ওই পেট্রোল পাম্পের কর্মী গুরুপদ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “তখন পাম্পে কিছুটা ভিড় ছিল। আমি পেট্রোল, ডিজেল দিতে ব্যস্ত ছিলাম। হঠাৎই দুটি ষাঁড় লড়াই করতে করতে আমাদের পাম্পের দিকে এগিয়ে আসে। আমরা সাবধান হয়ে যাই। ষাঁড় দুটি যেভাবে আক্রমণাত্মক হয়ে ওঠে তাতে বেশ খানিকটা জায়গা ফাঁকা হয়ে যায়। এরপর ষাঁড় দুটি লড়তে লড়তে একেবারে অফিসে ঢুকে পড়ে। অফিসে থাকা কর্মীরা পেছনের দরজা দিয়ে পালিয়ে প্রাণে বাঁচেন।”
[ আরও পড়ুন: লকডাউনে স্তব্ধ রোজগারের রাস্তা, ড্রামভরতি দুধ পুকুরে ফেলে প্রতিবাদে দুগ্ধ ব্যবসায়ীরা ]
এদিকে এই ‘বুল ফাইট’ থামাতে বালতি-বালতি জল ঢালা হয় দুই ষাঁড়ের গায়ে। কিন্তু লড়াই থামে না। ভাঙতে থাকে পাম্পের নানান জিনিসপত্র। পরে একটি ষাঁড় ক্লান্ত হয়ে অফিসের ভেতরের দরজা দিয়ে পালিয়ে যায়। তখন হাঁফ ছেড়ে বাঁচে ওই পাম্প কর্মী-সহ এলাকার মানুষ।
ছবি: সুনীতা সিং।
The post লকডাউনের সকালে রাস্তায় ‘বুল ফাইট’! পেট্রল পাম্পে ঢুকে ভাঙচুর চালাল দুই ষাঁড় appeared first on Sangbad Pratidin.