অভিরূপ দাস: এক জায়গায় ৬১ হাজার, অন্যত্র ১ লক্ষ ৪৫ হাজার! বেসরকারি দুই হাসপাতালকে করোনার চিকিৎসা বাবদ মূল বিল থেকে এই টাকা রোগীর পরিবারকে ফেরতের নির্দেশ দিল স্বাস্থ্য কমিশন (Health Commission)।
কোভিড চিকিৎসার নামে লাগামছাড়া বিল তৈরিতে বারবার কাঠগড়ায় উঠছে বেসরকারি হাসপাতালগুলি। অপ্রয়োজনীয় পরীক্ষা করিয়ে বিলের অঙ্ক বাড়িয়ে দেওয়ার ভুরি ভুরি অভিযোগ জমা পড়েছে কমিশনের দফতরে। শহরের উত্তর থেকে দক্ষিণ একাধিক হাসপাতালের নাম জড়িয়েছে “অযথা বিল”-এর তালিকায়। এবার সেখানেই যুক্ত হল আরও দুই বেসরকারি হাসপাতাল। তপসিয়ার আর ফ্লেমিং হাসপাতাল আর নিউ আলিপুরের বিপি পোদ্দার হাসপাতাল।
[আরও পড়ুন: লোকাল ট্রেন চলাচল অনিশ্চিতই, বাড়তে পারে দূরপাল্লার ট্রেনের সংখ্যা]
করোনা সংক্রমণ (Coronavirus) এবং কিডনির সমস্যা নিয়ে ফ্লেমিং হাসপাতালে ভরতি ছিলেন এক ব্যক্তি। ৬ দিনে তাঁর বিল হয় ৩ লক্ষ ৪৫ হাজার। অভিযোগকারীর দাবি, এর মধ্যে মাত্র দুটো ডায়ালিসিস করেছিল হাসপাতাল। তিনি জেনারেল বেডেই চিকিৎসাধীন ছিলেন। সেখানেই কিনা বিল চার লক্ষ ছুঁইছুঁই! “কী করে এত বিল হল?” ফ্লেমিং কর্তৃপক্ষকে প্রশ্ন করে স্বাস্থ্য কমিশন। গোটা বিলে কোথায় কত খরচ নেওয়া হয়েছে, তাও জমা দিতে বলা হয়। কিন্তু সেই খরচখাত না দেখিয়ে ফ্লেমিং জানায়, এটাই তাদের প্যাকেজ। এতে ক্ষুব্ধ স্বাস্থ্য কমিশন টাকা ফেরতের নির্দেশ দিয়েছে ফ্লেমিং হাসপাতালকে। স্বাস্থ্য নিয়ন্ত্রক কমিশনের চেয়ারম্যান প্রাক্তন বিচারপতি অসীমকুমার বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, ৩ লক্ষ ৪৫ হাজারের মধ্যে ১ লক্ষ ৪৫ হাজার টাকা অবিলম্বে ফেরত দিতে বলা হয়েছে। তদন্ত করে দেখা হবে ঠিক কত টাকা বিল হওয়া উচিৎ ছিল।
একইভাবে কমিশনের কোপে পড়েছে নিউ আলিপুরের বিপি পোদ্দার হসপিটাল অ্যান্ড মেডিক্যাল রিসার্চ ইনস্টিটিউট। সেখানেও এক কোভিড রোগীর কাছ থেকে চারদিনে ১ লক্ষ ৫১ হাজার ২৬৯ টাকার বিল নেওয়ার অভিযোগ করেছে। সেই ‘মাত্রাতিরিক্ত’ বিল নিয়ে স্বাস্থ্য কমিশনে অভিযোগ করেন এক ব্যক্তি। দেখা যায়, বিলে একই টেস্ট একাধিকবার করা হয়েছে। স্বাস্থ্য কমিশনের প্রতিনিধিরা সেই বিল নিয়ে হাজির হয় শহরের দুই খ্যাতনামা প্যাথলজিক্যাল সেন্টারে। যাচাই করে দেখা যায়, কোনওভাবেই বিলের সীমা ৯০ হাজার অতিক্রম করা উচিৎ নয়। এরপরেই বিপি পোদ্দার হাসপাতালকে রোগীর পরিবারের হাতে অতিরিক্ত ৬১ হাজার টাকা ফেরতের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
[আরও পড়ুন: বাংলাদেশের মুসলিমদের মিছিলের ভিডিও কলকাতার বলে টুইট, আইনি বিপাকে তারেক ফাতেহ]
গত শনিবারই স্বাস্থ্য কমিশন তাদের নয়া সুপারিশে জানিয়েছে, করোনা রোগীর জন্য বেসরকারি হাসপাতালের বেড চার্জ ১ মার্চ অবধি যা ছিল, তাই রাখতে হবে। শুক্রবার কমিশনের চেয়ারম্যান বললেন, “অনেক ক্ষেত্রেই আমরা অভিযোগ পাচ্ছি। তবে রোগীর মূল অভিযোগ বিল নিয়ে। চিকিৎসা সংক্রান্ত কোনও সমস্যা নিয়ে নয়। অতিরিক্ত বিল সংক্রান্ত অভিযোগ পেলেই দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” এদিকে দমদম ILS হাসপাতালের বিরুদ্ধে পিপিই কিট বাবদ অতিরিক্ত ১৫ হাজার টাকা নেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল। সেই অভিযোগ আসার পরেও ILS কর্তৃপক্ষকে সেই টাকা ফেরত দিতে বলা হয়েছে। পিপিই কিট বাবদ কত টাকা নেওয়া তার জন্য আগেই অ্যাডভাজরি প্রকাশ করেছে স্বাস্থ্য নিয়ন্ত্রক কমিশন। তাও কেন নেওয়া হল অতিরিক্ত টাকা? ILSকর্তৃপক্ষের যুক্তি, “অ্যাডভাইজরি প্রকাশের আগেই এই টাকা নেওয়া হয়েছিল।”
The post করোনা চিকিৎসায় মোটা অঙ্কের বিল! দুই হাসপাতালকে দ্রুত টাকা ফেরানোর নির্দেশ স্বাস্থ্য কমিশনের appeared first on Sangbad Pratidin.