তারক চক্রবর্তী, শিলিগুড়ি: পুর প্রশাসক হিসেবে দায়িত্ব নিয়েই শিলিগুড়িতে বাম শিবিরে বড়সড় ভাঙন ধরালেন রাজ্যের প্রাক্তন পর্যটনমন্ত্রী গৌতম দেব (Goutam Deb)। শিলিগুড়ি পুরনিগমের প্রাক্তন মেয়র তথা বিদায়ী পুরপ্রশাসক অশোক ভট্টাচার্যের ঘনিষ্ঠ দুই বাম নেতাকে দলে টানলেন তিনি। বুধবার সিপিএম (CPM) ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দিলেন বিদায়ী কাউন্সিলর কমল আগরওয়াল এবং আরএসপি থেকে শাসকদলে যোগ দিলেন রামভজন মাহাতো। গৌতম দেবের পাশাপাশি এই যোগদান অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন তৃণমূলের দার্জিলিং জেলা সভাপতি রঞ্জন সরকার (Ranjan Sarkar)।
একসময়ের লালদুর্গ হিসেবে পরিচিত শিলিগুড়িতে বামেরা এখন দ্রুত জমি হারাচ্ছে। সদ্য শেষ হওয়া বিধানসভা নির্বাচনেও বাম প্রার্থী তথা বিদায়ী পুরপ্রধান অশোক ভট্টাচার্য (Ashok Bhattacharya) শেষ করেছেন তৃতীয় স্থানে। আসলে শিলিগুড়িতে বাম শিবিরে ভাঙন ভোটের আগেই শুরু হয়েছিল। সিপিএম ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন অশোক ভট্টাচার্যের একসময়ের ‘ছায়াসঙ্গী’ শংকর ঘোষ। এই প্রাক্তন মেয়র পারিষদই এবার বিজেপির টিকিটে শিলিগুড়ির বিধায়ক নির্বাচিত হয়েছেন। বিধানসভায় অশোক ভট্টাচার্যের হারের পর বামেদের ভাঙন আরও তরান্বিত হল। কমল আগরওয়াল এবং রামভজন মাহাতো দু’জনেই শিলিগুড়ির পুর রাজনীতিতে খুবই গুরুত্বপূর্ণ নাম। তাঁদের দলত্যাগে বামেরা যে আরও খানিকটা কোণঠাসা হল, সেটা বলার অপেক্ষা রাখে না। গৌতম দেবের দাবি, এবছর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যেভাবে বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াই করেছেন, তা দেখে অনুপ্রাণিত হয়েই তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন ওই দুই বিদায়ী কাউন্সিলর। এই মুহূর্তে করোনা মোকাবিলাই তাঁদের প্রধান লক্ষ্য।
[আরও পড়ুন: অনেক আসনেই দু’হাজারের কম ভোটে হার, পুনর্গণনা চেয়ে কোর্টে যাবে বিজেপি]
প্রসঙ্গত, এবছর বিধানসভায় দার্জিলিং জেলায় ভাল ফল করেছে বিজেপি (BJP)। শিলিগুড়ির পাশাপাশি গৌতম দেবের নিজের বিধানসভা কেন্দ্র ডাবগ্রাম ফুলবাড়িও গিয়েছে বিজেপির দখলে। ডাবগ্রাম ফুলবাড়িতে হারলেও গৌতম দেবকে শিলিগুড়ির পুরপ্রশাসক হিসেবে নিয়োগ করে রাজ্য সরকার। সামনেই রাজ্যে পুর নির্বাচন। রাজনৈতিক মহলের ধারণা, শিলিগুড়ির মতো মহাগুরুত্বপূর্ণ পুরনিগমে বিজেপিকে হারানোর দায়িত্ব গৌতম দেবকেই দিতে চলেছে তৃণমূল। আর সম্ভবত সেকারণে পুরপ্রশাসক পদে বসেই ‘খেলা’ দেখানো শুরু করলেন গৌতম।