ধীমান রায়, কাটোয়া: মদ্যপবস্থায় নার্সিং হস্টেলে ঢুকে নার্সদের উদ্দেশ্যে অশ্লীল অঙ্গভঙ্গি। এর পর বাইরে শুকোতে দেওয়া কয়েকটি অন্তর্বাস চুরি করে নিয়ে পালাল অ্যাম্বুলেন্স চালক! অভিযুক্ত হাসপাতালের চতুর্থ শ্রেণির এক কর্মীর ছেলে। পূর্ব বর্ধমান জেলার কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালের ঘটনায় নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন নার্সরা। হাসপাতাল সুপারের অভিযোগের ভিত্তিতে অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করেছে কাটোয়া থানার পুলিশ।
পুলিশ জানায়, ধৃতের নাম শেখ মুন্না। ধৃতের বাবা মহসিন শেখ কাটোয়া হাসপাতালের চতুর্থ শ্রেণির কর্মী। অভিযুক্তের বিরুদ্ধে উপযুক্ত ধারায় মামলা দায়ের করে ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। কাটোয়া মহকুমা হাসপাতাল চত্বরেই রয়েছে নার্সদের হস্টেল। দোতলার উপরের ঘরে হাসপাতালে কর্মরত নার্সরা থাকেন। ঘটনাটি ঘটে সোমবার দুপুর পৌনে তিনটে নাগাদ। মঙ্গলবার ধৃতকে কাটোয়া আদালতে পাঠানো হয়।
এই ঘটনা নিয়ে এক নার্স বলেন,"পাশাপাশি ঘরে আমরা তখন দুজন নার্স দরজা বন্ধ করে বিশ্রাম নিচ্ছি। সেসময় শুনি দরজায় কেউ ধাক্কা দিচ্ছে। তার পর দরজা খুলে বাইরে বেড়িয়ে আসি। তখন দেখি মুন্না নামে ওই ব্যক্তি আমাদের বাথরুম থেকে বের হচ্ছে। খালি গা। মদ্যপবস্থায় ছিল। এর পর ভয়ে আমি দরজা বন্ধ করে পাশের ঘরে থাকা সহকর্মীকে চিৎকার করে ডাকি। তখনও মুন্না বাইরে দাঁড়িয়ে সাড়া দিচ্ছিল। বেড়িয়ে চলে যায়। যাওয়ার সময় দোতলায় ও নিচে আমাদের যেসব অন্তর্বাস শুকোতে দেওয়া ছিল সেগুলো নিয়ে পালিয়ে যায়। আমরা পুরো ঘটনা হাসপাতালের সুপারকে জানাই।"
জানা গিয়েছে, এর পরেই নার্সদের সঙ্গে দেখা করে ঘটনার কথা শোনেন সুপার। তার পর হাসপাতাল সুপার বিপ্লব মণ্ডল পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগ পেয়েই রাতের মধ্যেই অভিযুক্ত শেখ মুন্নাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। হাসপাতালের চতুর্থ শ্রেণির কর্মী মহসিন শেখ হাসপাতাল কোয়ার্টারে থাকেন। তার কাছেই থাকে ছেলে বছর পঁয়ত্রিশের মুন্না। বাবার কিনে দেওয়া অ্যাম্বুলেন্স নিজেই চালায় সে।
যদিও এদিন হাসপাতালে দেখা না মেলায় মহসিন শেখের মতামত জানা যায়নি। তবে মহসিন শেখ একজন সজ্জন ব্যক্তি বলেই সহকর্মীরা জানিয়েছেন। এই ঘটনা ঘিরে হাসপাতালের কর্মীদের মধ্যে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। হস্টেলে দিনের বেলায় কোনও নিরাপত্তারক্ষী না থাকায় অবাধে ওই যুবক দোতলায় উঠে গিয়েছিল বলে নার্সদের দাবি। হাসপাতাল সুপার জানিয়েছেন, নার্স হস্টেলে নিরাপত্তার বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখা হবে।