সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: জেরুজালেম মোটেই ইজরায়েলের একছত্র অধিকার নয়। তা শুধুই ইজরায়েলের রাজধানী নয়। আর তাই প্রাচীন শহরটিকে ইজরায়েলের রাজধানী হিসাবে ঘোষণা করার মার্কিন সিদ্ধান্তকে খারিজ করে দিল রাষ্ট্রসংঘ।
[নামমাত্র দামে নিলাম জার্মানির এই গ্রাম, কেন জানেন?]
হিব্রুতে জেরুশা লাজিম। আরবিতে আল কুদ। ইহুদি ও ইসলামি সংস্কৃতির অন্যতম পীঠস্থান জেরুজালেম। দুই পৃথক জীবনযাত্রার আকড়বিন্দু এই প্রাচীন শহর। ফলে এর ‘হক’-এর দাবিদার একত্রে ইজরায়েল ও প্যালেস্তাইন। খানিক এই মর্মেই মধ্যস্থতার চেষ্টায় নামল রাষ্ট্রসংঘ। রাষ্ট্রসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) প্রতিনিধি পাঁচ দেশ এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ইজরায়েল এবং প্যালেস্তিনীয়দের পারস্পারিক আলোচনা ও মধ্যস্থতাতেই জেরুজালেমের অবস্থান নির্ণয় করা হবে। যতক্ষণ না পারস্পারিক আলোচনায় বসছে দুই যুযুধান দেশ, ততক্ষণ মার্কিন প্রেসিডেন্টের দাবিকে কোনওভাবেই স্বীকৃতি দেওয়া হবে না। ইইউয়ের এই সিদ্ধান্ত রাষ্ট্রসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত হিসাবে গৃহীত হয়েছে। এদিকে, এই উত্তাল পরিস্থিতিতে আগুনে ঘি ঢালল গাজা স্ট্রিপে ইজরায়েলি বিমান হানা। শনিবার এই বিমানহানায় মারা যায় দুই হামাস সদস্য। ট্রাম্পের ঘোষণার পর ওই স্পর্শকাতর অঞ্চলে এই নিয়ে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল চার। আহত ১২ জনের বেশি।
[হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে আফরাজুলের খুনির প্রশংসা, দেখেও নীরব বিজেপি সাংসদ]
ঐতিহাসিক, পৌরাণিক ও রাজনীতিক স্মৃতি বিজড়িত জেরুজালেম। প্রাচীন এই শহরটিকে ইজরায়েলের রাজধানী হিসাবে ঘোষণার হিটলারি সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে সমালোচনার ঝড় বিশ্বজুড়ে। প্রতিবাদে কট্টর অবস্থান নিয়েছে পাকিস্তান-সহ আরব বিশ্বের অন্য দেশগুলিও। পাকিস্তানে মুম্বই হামলার মাস্টারমাইন্ড হাফিজ সইদ ট্রাম্পের ঘোষণার বিরুদ্ধে শুক্রবার মিছিলে নেতৃত্ব দেন। সদ্য ফুরিয়েছে তার গৃহবন্দি থাকার মেয়াদ। মুক্তি পাওয়ার পর এই প্রথম তার প্রকাশ্যে আসা। জনসমক্ষে এসেই মুসলিম দেশগুলিকে আমেরিকার বিরুদ্ধে একজোট হওয়ার ডাক দিয়েছে জামাত প্রধান। শুক্রবারের প্রার্থনার পর লাহোরের চৌবুরজিতে জামাতের দপ্তরের বাইরে মিছিল করে সে। সেখানে আমেরিকা ও ভারত বিরোধী স্লোগান তোলে। আমেরিকা জেরুজালেমকে ইজরায়েলের রাজধানী হিসাবে স্বীকৃতি দেওয়ার পর রাষ্ট্রসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ শুক্রবার একটি বৈঠক ডাকে। বৈঠকের শুরুতে পশ্চিম এশিয়ায় রাষ্ট্রসংঘের বিশেষ দূত নিকোলাই ম্লাজেনভ জেরুজালেম থেকে এক ভিডিও কনফারেন্স করেন। সেখানে জানান, রাগের আগুনে জ্বলছে জেরুজালেমের ইসলামি ধর্মাবলম্বীরা। যেকোনও মুহূর্তে বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে হিংসা ছড়াতে পারে। তা দীর্ঘস্থায়ী হতে পারে। কোনও প্রকার সন্ত্রাস ছড়ানোর আগে যেন সব পক্ষ একটি আলোচনায় বসে– তার পরামর্শ দেন তিনি। এরপর রাষ্ট্রসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠকে কেবল ইইউ-কেই সংঘবদ্ধ মতামত দিতে দেখা যায়। তারা পরিষ্কার করে দেয়, জেরুজালেম এখনও পর্যন্ত দু’দেশের রাজধানী হিসাবেই স্বীকৃত। তার উপর তৃতীয় কোনও দেশের মতামতের ভিত্তিতে দখলদারি খাটবে না। কার্যত কোণঠাসা হয়ে পড়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তবে ডনের পাশে দাঁড়িয়েছেন রাষ্ট্রসংঘের মার্কিন রাষ্ট্রদূত নিকি হ্যালে। তাঁর মতে, এই ইস্যুতে রাষ্ট্রসংঘের বর্তমান অবস্থান আদতে ইজরায়েলের প্রতি তাদের বিরূপ মনোভাবের পরিচয়বাহী।
[শিক্ষামূলক ভ্রমণে বেরিয়ে দুর্ঘটনায় পড়ুয়াদের বাস, মৃত্যু শিক্ষকের]
The post ট্রাম্পের ঘোষণাকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে জেরুজালেমের স্বীকৃতি খারিজ রাষ্ট্রসংঘে appeared first on Sangbad Pratidin.