সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: আগামী বছর বিধানসভা নির্বাচন উত্তরপ্রদেশে (Uttar Pradesh)। সেই নিয়ে এবার সরগরম জাতীয় রাজনীতি। বৃহস্পতিবার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহর সঙ্গে বৈঠকের পর আজ অর্থাৎ শুক্রবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে দিল্লিতে আলোচনায় বসেন উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ।
[আরও পড়ুন: লাক্ষাদ্বীপে করোনা ‘জৈব অস্ত্র’! কেন্দ্রের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলেই ‘দেশদ্রোহী’ পরিচালক]
জানা গিয়েছে, এদিন প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনে আড়াই ঘন্টারও বেশি আলোচনা হয় মোদি ও যোগীর মধ্যে। এরপর বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জে পি নাড্ডার সঙ্গে দেখা করেন যোগী। রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের সঙ্গেও দেখা করবেন তিনি। এমনটাই খবর। মনে করা হচ্ছে দিল্লিতে এই ম্যারাথন বৈঠকের পর উত্তরপ্রদেশে মন্ত্রিসভার সম্প্রসারণ একপ্রকার নিশ্চিত। আর সবচেয়ে তাৎপর্যপূর্ণ বিষয় হল যে যোগীর নয়া মন্ত্রিসভায় স্থান পেতে পারেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ‘বিশ্বস্ত সেনাপতি’ অরবিন্দ শর্মা ও কংগ্রেস থেকে সদ্য গেরুয়া শিবিরে নাম লেখানো নেতা জিতিন প্রসাদ। বিশ্লেষকদের মতে, গুজরাট ক্যাডারের আইএএস অরবিন্দ চিরকাল মোদির বিশ্বস্ত। কয়েক মাস আগে উত্তরপ্রদেশের বিধান পরিষদের সদস্য হয়েছেন ওই প্রাক্তন আমলা। যোগীর রাশ টানতে তাঁকে উপমুখ্যমন্ত্রী করতে চেয়েছিলেন মোদি। কিন্তু বেঁকে বসেন যোগী। সেই থেকে থেমে রয়েছে মন্ত্রিসভার সম্প্রসারণ। দফায় দফায় বৈঠক করছেন সংঘ নেতারা। বৈঠক হচ্ছে মোদি, শাহ, নাড্ডা ও সংঘ পরিবারের মধ্যেও। এবার উত্তরপ্রদেশ জয়ের ‘ব্লু প্রিন্ট’ তৈরি করে সেই সংঘাতে ইতি টানতেই ফের বৈঠক বলে মনে করছেন অনেকে। এদিকে, আগামী বিধানসভা নির্বাচনের আগে ‘সুহেলদেব ভারতীয় সমাজ পার্টি’ র নেতা ওমপ্রকাশ রাজভরের সঙ্গে সমঝোতায় আসতে চাইছিল বিজেপি। কিন্তু সেই জল্পনা সাফ উড়িয়ে রাজভর জানিয়ে দিয়েছেন যে তিনি গেরুয়া শিবিরে যোগ দেবেন না।
বিশ্লেষকদের মতে, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ একই দলের নেতা হলেও, রাজনীতির কারণে তাঁদের অবস্থান এখন দুই মেরুতে। এতটাই যে ৫ জুন আদিত্যনাথের জন্মদিনে প্রধানমন্ত্রী মোদি কেন তাঁকে শুভেচ্ছা জানিয়ে টুইট করলেন না, তা নিয়ে বিস্তর জলঘোলা চলছে। আগামী বছর ফেব্রুয়ারি-মার্চে যে পাঁচ রাজ্যে বিধানসভার ভোট, উত্তরপ্রদেশ সেগুলোর মধ্যে অন্যতম। বাকি চার রাজ্য হল পাঞ্জাব, গোয়া, উত্তরাখণ্ড ও মণিপুর। বছর শেষে ভোট গুজরাট ও হিমাচল প্রদেশে। পাঞ্জাব ছাড়া সব রাজ্যেই বিজেপি ক্ষমতায়। উত্তরপ্রদেশে ক্ষমতাসীনের চালচিত্রটি আবার ঈর্ষাজনক। ২০১৭ সালে ৪০৩ আসনের মধ্যে বিজেপি একাই জিতেছিল ৩১২টি। জোটের সংগ্রহ ৩২৫। সেই উত্তরপ্রদেশে বিজেপি ক্ষমতা ধরে রাখতে পারবে কি না, এই মুহূর্তের বড় জল্পনা তা। জল্পনায় ঘি ঢালছে মোদি-যোগীর দূরত্ব।