সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: দেখতে দেখতে বছর পেরিয়ে গিয়েছে করোনা (Coronavirus) অতিমারীর। প্রাথমিক ধাক্কা সামলাতে না সামলাতে আছড়ে পড়েছে দ্বিতীয় ঢেউ। এই সময়কালে মারণ ভাইরাসের প্রকোপে দেশজুড়ে কত মানুষ আক্রান্ত হয়েছেন। সেই সংক্রমণ যাতে বাকিদের মধ্যে ছড়িয়ে না পড়ে, সেই জন্য তাঁদের যেতে হয়েছে বাধ্যতামূলক আইসোলেশনে। কিন্তু তেলেঙ্গানার এক শাশুড়ির যে মনোবৃত্তির সন্ধান মিলল তেমন ঘটনা প্রায় বিরলই। নিজের একাকীত্ব কাটানোর অছিলায় তিনি যা করেছেন তা অভাবনীয়।
ঠিক কী ঘটেছে? তেলেঙ্গানার (Telangana) সমারিপেটা গ্রামের ঘটনা। এক মহিলার দেহে করোনা সংক্রমণ ধরা পড়ে। বাধ্যতামূলক নিভৃতবাসে থাকতে হয় তাঁকে। কিন্তু কিছুতেই তিনি মানতে পারছিলেন না যে, সকলে কেন এমন এড়িয়ে চলছে তাঁকে! তাঁর ঘরের সামনে খাবার রেখে আসা হচ্ছিল। নাতি-নাতনিদেরও দেখতে পাচ্ছিলেন না। স্বভাবতই হাঁফিয়ে উঠছিলেন। ভিতরে ভিতরে তৈরি হচ্ছিন অভিমান ও রাগ।
[আরও পড়ুন: ভারত থেকে পাঁচ হাজার লিটার বিষ কিনতে চায় অস্ট্রেলিয়া, কারণ জানলে অবাক হবেন]
এরপরই একদিন তিনি গিয়ে হাজির হন বউমার (Daughter-in-law) সামনে। জানতে চান, ‘‘আমি মরে গেলেও তোমরা সবাই ভাল থাকতে চাও?’’ তারপরই সটান জড়িয়ে ধরেন নিজের বউমাকে। গোটা ঘটনায় স্তম্ভিত হয়ে যান সকলে। এক সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে এবিষয়ে কথা বলতে গিয়ে বছর বিশেকের পুত্রবধূ জানাচ্ছেন, ‘‘আমার শাশুড়ি আমাকে জড়িয়ে ধরে বলেন, আমারও যেন করোনা হয়।’’
ঘটনার অব্যবহিত পরেই করোনা পরীক্ষা করানো হয় ওই গৃহবধূর। দেখা যায় তিনি করোনা পজিটিভ। প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই তাঁকে বের করে দেওয়া হয় শ্বশুরবাড়ি থেকে! তিনি গিয়ে ওঠেন রজান্যা জেলার থিমাপুরে বোনের বাড়িতে। এই মুহূর্তে সেখানেই আইসোলেশনে রয়েছেন তিনি। চলছে চিকিৎসা। কী করে নিজের আক্রান্ত হওয়ার বদলা নিতে নিজেরই বউমাকে জড়িয়ে ধরলেন শাশুড়ি, সেই নিষ্ঠুর মানসিকতার পরিচয় পেয়ে স্তম্ভিত সকলেই। অতিমারীর আবহে তা যেন ভারতীয় নারীর চিরন্তন দুর্ভোগের ছবিটাই আবার তুলে ধরল।