সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: মুম্বই হামলার অন্যতম অভিযুক্ত তাহাউর রানাকে হেফাজতে পেতে চলেছে ভারত। ওই পাকিস্তানি বংশোদ্ভূত জঙ্গিকে ভারতের হতে তুলে দেওয়ার জন্য আদালতের কাছে আরজি জানিয়েছিল আমেরিকার বাইডেন প্রশাসন। সেই আরজি মেনে নিয়েছে কোর্ট।
২৬/১১ কাণ্ডের (Mumbai Attack) অন্যতম চক্রী কানাডার নাগরিক রানা এখন আমেরিকায় জেলবন্দি। ২০০৮ সালের মুম্বই হামলায় ছয় মার্কিন নাগরিকেরও মৃত্যু হয়। ২০০৫ সালে মহম্মদের নামে বিতর্কিত কার্টুন প্রকাশ করায় ডেনমার্কের একটি সংবাদপত্রের অফিসে হামলা চালায় পাকিস্তানের মদতপুষ্ট লস্কর-ই-তৈইবা। পরে এই ঘটনার তদন্তে নেমে এই হামলায় মদত দেওয়া রানাকে শিকাগো থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরে আদালতে দোষ প্রমাণিত হওয়ার পর তাকে ২০১৩ সালে রানাকে ১৪ বছর সশ্রম কারাদণ্ড দেয় আমেরিকার আদালত।
২০২০ সালে স্বাস্থ্যের কথা মাথায় রেখে তাকে মুক্তি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় প্রশাসন। কিন্তু ভারতের প্রত্যর্পণের আবেদনে খুনের মামলায ফের তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। গত বছর ট্রাম্প প্রশাসনের বিশেষ সূত্র উদ্ধৃত করে সংবাদসংস্থা পিটিআই ও এএফপি জানিয়েছিল যে, কারাবাসের মেয়াদ শেষ হওয়ার পর ২০২১ সালের ডিসেম্বর মাস নাগাদ রানাকে ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা এনআইএ-র হাতে তুলে দিতে পারে আমেরিকা।
[আরও পড়ুন: সোনিয়ার হস্তক্ষেপেই গোঁসা ভাঙল শিবকুমারের! কর্ণাটকে কুরসি কোন্দলে ইতি]
এহার রানাকে হাতে পেলে এটা হবে ভারতের ‘প্রাইজ ক্যাচ’। ভারতের অন্যতম মোস্ট ওয়ান্টেড সন্ত্রাসবাদী রানার অপরাধ কোনওভাবেই জইশ-ই-মহম্মদ জঙ্গি নেতা মাসুদ আজহার, হিজবুল নেতা সৈয়দ সালাউদ্দিন এবং লস্কর-ই-তইবার নেতা হাফিজ সইদের থেকে কম নয়।
উল্লেখ্য, ২৬/১১ কাণ্ডে আরেক ষড়যন্ত্রী ডেভিড কোলম্যান হেডলি ওরফে দাউদ গিলানির সঙ্গে রানার দুর্দান্ত বোঝাপড়া ছিল। হজরত মহম্মদকে নিয়ে বিতর্কিত কার্টুন ছাপায় ২০০৮ সালে ডেনমার্কের সংবাদপত্র অফিস ‘জিল্যান্ডস পস্টেন’-এর দপ্তরে হামলা চালানোর পরিকল্পনা ছিল তাদের। ২০০৯ সালের অক্টোবর মাসে দু’জনকে গ্রেপ্তার করে মার্কিন পুলিশ। তাদের টানা জেরা করার সময় তাদের কথার সূত্র ধরেই মুম্বই হামলায় রানার জড়িত থাকার ঘটনাটি ফাঁস হয়ে যায়।
প্রসঙ্গত, পাকিস্তানি চর হিসাবে রানা ২৬/১১ কাণ্ডে সক্রিয় ভূমিকা নিয়েছিল। আজমল কাসভদের হামলাকে কার্যকর করতে তিলে তিলে নিখুঁত ছক কষেছিল সে। আদতে সে ছিল পাক সেনায় কর্মরত একজন চিকিৎসক। পরে কানাডার নাগরিকত্ব নিয়ে সে দেশে বাস করতে শুরু করে। কিন্তু সে ছিল ‘বেসরকারিভাবে’ নিযুক্ত আইএসআইয়ের একজন বিশ্বস্ত চর। অর্থাৎ বেতনভুক না হলেও সব রকমের সুবিধা ও মদত সে চাইলেই আইএসআই থেকে পেত। জেরা চলাকালীন মুম্বই হামলার সঙ্গে রানার যোগ ধরা পড়ে। জানা যায়, হেডলির সঙ্গে মুম্বইয়ে একটি ভুয়ো অভিবাসন দপ্তর খুলেছিল সে। মানুষকে কানাডা ও আমেরিকার ভিসা পাইয়ে দেওয়ার আড়ালে গুপ্তচর নিয়োগ করে ভারতে হামলার ছক কষছিল তারা।