সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: দিল্লির রাস্তা লখনউ হয়ে যায়। অর্থাৎ, কেন্দ্রে সরকার গড়তে হলে উত্তরপ্রদেশ জয় করতে হবে। ভারতীয় রাজনীতির এই প্রবাদের মতোই আমেরিকায় বলা হয়, হোয়াইট হাউস দখল করতে গেলে ফ্লোরিডায় জয় নিশ্চিত করতে হবে। আর এবারের ট্রাম্প-বিডেন লড়াইয়ে নির্ণায়ক ভূমিকা নেবে ১২টি ‘ব্যাটল গ্রাউন্ড’ স্টেট। যার মধ্যে ফ্লোরিডা, টেক্সাস ও জর্জিয়া অন্যতম।
[আরও পড়ুন: জম্মু ও কাশ্মীর ভারতের বাইরে! ট্রাম্পপুত্রের ওয়ার্ল্ড ম্যাপ নিয়ে তুঙ্গে বিতর্ক]
নভেম্বরের ৩ তারিখ ভোটদান শেষ হওয়ার পর মার্কিন সংবাদমাধ্যমে ফলের পূর্বাভাস আশা শুরু হয়। গোড়ার দিকে ডেমোক্র্যাটিক পার্টির প্রার্থী জো বিডেন (Joe Biden) এগিয়ে থাকলেও বেলা বাড়ার সঙ্গে জমি দখল শুরু করেন রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প (Donald Trump)। ২০১৬ সালের মতোই নিজেদের গড় রক্ষা করতে সক্ষম হয়েছে দুই দলই। ফলে ফলাফল নির্ভর করছে সুইং স্টেটগুলির উপর। মার্কিন সময় মতে এখন রাত প্রায় সাড়ে বারোটা। অন্যবার এই সময়ে মোটামুটি স্পষ্ট হয়ে যায় যে আগামী চার বছর কার দখলে থাকছে হোয়াইট হাউস। কিন্তু এবার করোনা মহামারীর জেরে মেল-ইন-ব্যালটের মাধ্যমে ভোট দিয়েছেন প্রায় ১০ কোটি মার্কিন জনতা। ফলে সেগুলির হিসেবে কিছুটা সময় লাগছে। যাই হোক, মার্কিন রাজনীতিতে বরাবরই পরবর্তী প্রেসিডেন্ট ঠিক করে ব্যাটল গ্রাউন্ড স্টেটগুলি। এবারও তেমনটাই দেখা যাচ্ছে। ফক্স নিউজ ও সিএনএন জানিয়েছে, ডোনাল্ড ট্রাম্পের দখলে গিয়েছে ফ্লোরিডা। ২০১৬ সালেও ‘সানশাইন স্টেট’ দখল করেছিলেন ট্রাম্প। একইভাবে টেক্সাসেও এগিয়ে রিপাবলিকান প্রার্থী। উল্লেখ্য, ফ্লোরিডা ও টেক্সাসে ইলেক্টোরাল ভোট বা আসন সংখ্যা যথাক্রমে ২৯ ও ৩৮। তাই এই দুই সুইং স্টেট অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ৫৩৮ আসনের ‘ইলেক্টোরাল কলেজ’-এ ম্যাজিক ফিগার ২৭০। এপর্যন্ত, বিডেনের ঝুলিতে রয়েছে ২২৩ টি আসন ও ট্রামপের কবজায় এসেছে ১৭৪টি। কোন প্রার্থী আগে তা ছুঁয়ে ফেলবেন সেটা আর কিছুক্ষণের মধ্যেই পরিষ্কার হয়ে যাবে। এহেন পরিস্থিতিতে সমর্থকদের উদ্দেশে বার্তা দেন বিডেন। গণনায় দেরি নিয়ে তিনি বলেন, “আমরা জয়ের পথে আছি। তবে এই প্রক্রিয়াতে সময় লাগবে।”
তবে করোনা আবহে এবারের পরিস্থিতি অনেকটাই আলাদা। মহামারীর জেরে বিপুল সংখ্যায় মেল-ইন-ব্যালট জমা পড়ায় শুরু হয়েছে বিতর্ক। এই প্রক্রিয়ায় কারচুপির অভিযোগ তুলেছেন ট্রাম্প। তাই গণনা শেষ হলেও মামলা আদালত পর্যন্ত গড়াতে পারে। সেক্ষেত্রে নতুন প্রেসিডেন্টের নাম ঘোষণা হবে আদালতের নির্দেশের উপর ভিত্তি করে। প্রসঙ্গত, আমাদের যেমন সবচেয়ে বেশি লোকসভা আসন উত্তরপ্রদেশে, আমেরিকায় তেমনই ৫৫টি ইলেক্টোরাল আসন নিয়ে ক্যালিফোর্নিয়া হল সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ রাজ্য। তবে, পার্থক্য হল, ক্যালিফোর্নিয়ার ওই ৫৫টি আসন কোনও একটি দল পাবে একসঙ্গে। ওদিকে, আলাস্কা কিংবা ডেলাওয়্যারের মতো রাজ্যের ইলেক্টোরাল ভোট ৩টি করে। মোটের উপর কতটা লাল বা নীল হয়ে ওঠে অনিশ্চিত রাজ্য বা ‘সুইং স্টেট’গুলি, তার ভিত্তিতেই ঠিক হবে হোয়াইট হাউসের পরের চার বছরের মালিকানা।