সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়ালের গ্রেপ্তারি নিয়ে মন্তব্য করেছিল আমেরিকা। যা মোটেই ভালোভাবে নেয়নি কেন্দ্র। ফলস্বরূপ মার্কিন দূতকে তলব করে বিদেশমন্ত্রক। কিন্তু তাতেও কোনও কাজ হল না। নিজেদের অবস্থানেই অনড় থাকল ওয়াশিংটন। ফের একবার আপ সুপ্রিমোর গ্রেপ্তারি নিয়ে মতামত দিল মার্কিন প্রশাসন। পাশাপাশি এবার কংগ্রেসের অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ করা নিয়েও 'বন্ধু' দেশকে 'খোঁচা' দিল আমেরিকা।
গত বৃহস্পতিবার আবগারি দুর্নীতি মামলায় কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের হাতে গ্রেপ্তার হন কেজরি। দিল্লির মুখ্যমন্ত্রীর গ্রেপ্তারি নিয়ে মঙ্গলবার মুখ খোলে আমেরিকা। আম আদমি পার্টির সুপ্রিমোর বিচার যেন ন্যায়সঙ্গত, স্বচ্ছ ও দ্রুত হয়, সেকথা জানিয়ে নয়াদিল্লির উপরে পরোক্ষে চাপ সৃষ্টি করেছিল মার্কিন প্রশাসন। যার প্রেক্ষিতে বুধবারই তলব করা মার্কিন দূতাবাসের কার্যনির্বাহী প্রধান গ্লোরিয়া বারবেনাকে। নর্থ ব্লকে মার্কিন দূতের সঙ্গে প্রায় মিনিট চল্লিশের বৈঠক হয় বিদেশমন্ত্রকের শীর্ষ আধিকারিকদের। কিন্তু এর পরও ফের এই বিষয়ে আমেরিকার অবস্থান স্পষ্ট করে বক্তব্য রাখেন মার্কিন বিদেশ দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথু মিলার।
[আরও পড়ুন: আততায়ীর হামলায় রক্তাক্ত আমেরিকা, উন্মত্ত যুবকের ছুরির কোপে মৃত ৪!]
বারবেনার তলব প্রসঙ্গ নিয়ে বুধবারই মিলার সাফ জানিয়ে দেন, "মুখ্যমন্ত্রী কেজরিওয়ালের গ্রেপ্তারির বিষয়টির উপর আমরা নজর রাখব। আমরা আবারও বলতে চাই ওনার বিচার যেন ন্যায়সঙ্গত, স্বচ্ছ ও সময়োপযোগী হয়।" আসন্ন লোকসভা ভোটের আগে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সরকারকে অস্বস্তিতে ফেলে হাত শিবিরের অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ নিয়েও কথা বলতে শোনা যায় মিলারকে। এনিয়ে তিনি বলেন, "অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ নিয়ে কংগ্রেস পার্টির যে অভিযোগ রয়েছে সে বিষয়ও আমরা অবগত। আয়কর দপ্তর তাদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে দিয়েছে। যে কারণে নির্বাচনে প্রচার চালানোর ক্ষেত্রে কংগ্রেসকে আর্থিক সমস্যার মুখে পড়তে হয়েছে। এই ধরনের বিষয়গুলোতে ন্যায়সঙ্গত, স্বচ্ছ ও দ্রুত আইনি প্রক্রিয়াকেই আমেরিকা সমর্থন করে।" কূটনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, লোকসভা ভোটের আগে 'বন্ধু' দেশের এহেন অবস্থানে বেশ অস্বস্তিতেই পড়তে হচ্ছে মোদি সরকারকে। দেশের অভ্যান্তরীণ বিষয়ে কোনও দেশের নাক গলানোকে যে বরদাস্ত করা হয় না তা অতীতে বহুবার স্পষ্ট করে দিয়েছে নয়াদিল্লি। ফলে আগামিদিনে এই ইস্যুগুলো দুদেশের সম্পর্কে কী প্রভাব ফেলে সেদিকেই নজর রয়েছে আন্তর্জাতিক মহলের।
উল্লেখ্য, গত ১৬ ফেব্রুয়ারি কংগ্রেসের (Congress) প্রধান ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ করে দেয় আয়কর বিভাগ। এর পর গত ২১ ফেব্রুয়ারি কংগ্রেসের কোষাধ্যক্ষ অজয় মাকেন (Ajay Maken) অভিযোগ করেন, আয়কর দপ্তর (IT) নিয়ম-বহির্ভূত ভাবে তাদের ওই ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টগুলো থেকে ৬৫ কোটি টাকা জরিমানা হিসাবে কেটে নিয়েছে। এর বিরুদ্ধে প্রথমে আয়কর ট্রাইব্যুনালে আবেদন করছিল কংগ্রেস। ট্রাইব্যুনাল প্রাথমিকভাবে কংগ্রেসের সব অ্যাকাউন্ট খুলে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল। কিন্তু চূড়ান্ত রায় অনুযায়ী কংগ্রেসের ৭০ কোটির কর বকেয়া আছে, সেটা দিতেই হবে। লোকসভার আগে এই বকেয়া মেটাতে হলে বিরাট ধাক্কা খাবে কংগ্রেস।