সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: শুরু হয়েছে দুর্গোৎসব। এপার বাংলার মতো ওপার বাংলাও পুজোর জন্য সেজে উঠেছে। তবে এবছর বাংলাদেশের পরিস্থিতি সম্পূর্ণ আলাদা। উৎসব শুরু হওয়ার মাস তিনেক আগে হিংসাত্মক ছাত্র আন্দোলনে রক্তাক্ত হয়েছে বাংলাদেশের নানা জায়গা। গণ অভ্যুত্থানের জেরে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছেন শেখ হাসিনা। দেশ ছেড়েছেন তিনি। তার পর থেকেই নিপীড়নের শিকার হচ্ছেন হিন্দু-সহ অন্যান্য সংখ্যালঘুরা। দুর্গাপুজো নিয়েও হিন্দুদের নানা হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। যা নিয়ে ভারতের পর এবার উদ্বেগ প্রকাশ করল আমেরিকা। হিন্দুরা যাতে নির্বিঘ্নে দুর্গাপুজোর আনন্দে মেতে উঠতে পারেন, সেই আহ্বানই অন্তর্বর্তী সরকার জানিয়েছে ওয়াশিংটন।
বাংলাদেশের পট পরিবর্তনের পর গোটা পরিস্থিতির উপর তীক্ষ্ণ নজর রেখেছে আমেরিকা। যেখাবে হিন্দু-সহ অন্যান্য সংখ্যালঘুদের উপর অত্যাচারের খাঁড়া নেমে এসেছে তা নজর এড়ায়নি হোয়াইট হাউসের। এর আগেও এই বিষয় নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছিল আমেরিকা। এবার পুজো আবহে ফের একবার বাংলাদেশকে বার্তা দিল তারা। পিটিআই সূত্রে খবর, মার্কিন বিদেশ দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার বলেন, "আমরা চাই, সারা বিশ্বের মতো বাংলাদেশেও সংখ্যালঘুদের অধিকার সুরক্ষিত থাকুক। হিন্দুরাও যেন নির্বিঘ্নে সেদেশে দুর্গাপুজো পালন করতে পারেন।"
কয়েকদিন আগেই পুজোর সময় হিন্দু ও অন্যান্য সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিয়ে ড.মহম্মদ ইউনুসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারকে বার্তা দিয়েছিল ভারত। বিদেশমন্ত্রকের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল বিবৃতি দিয়ে বলেছিলেন, "বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিয়ে আমরা বার বার বার্তা দিয়েছি। আমাদের প্রত্যাশা এই যে, সব পরিস্থিতিতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার তাঁদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে। দুর্গাপুজোর সময় কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটলে তা ভালো হবে না। পুজো সকলের জন্য শুভ হোক।” ফলে এখন হিন্দু-সহ অন্যান্য সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করে শান্তিপূর্ণ পুজো সম্পন্ন করাই বড় চ্যালেঞ্জ ইউনুস সরকারের কাছে।
উল্লেখ্য, গত ৫ আগস্ট ব্যাপক গণ আন্দোলনের জেরে প্রধানমন্ত্রীর গদি হারান হাসিনা। পতন ঘটে আওয়ামি লিগ সরকারের। এখন ক্ষমতায় ইউনুসের নেতৃত্বাধীন সরকার। এই রাজনৈতিক পালাবদলের মধ্যেই দুর্গাপুজো অনুষ্ঠিত হচ্ছে বাংলাদেশে। হাসিনার দেশ ছেড়ে যাওয়ার পর থেকে নানা প্রান্তে হামলার শিকার হন হিন্দুরা। ভেঙে দেওয়া হয় বেশ কয়েকটি মন্দির। এছাড়া নমাজ বা আজানের সময় দুর্গাপুজোর সমস্ত সাউন্ড সিস্টেম বন্ধ রাখার কথা মন্দির ও প্যান্ডেলগুলোকে জানিয়েছিল ইউনুস সরকার।
তাই মনে ভয়ে, আশঙ্কা, উদ্বেগ নিয়েই শুরু হয়েছিল এবছরের পুজোর প্রস্তুতি। কিন্তু দুর্গাপুজো নিয়ে হিন্দুদের নানা হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠছে। এমনকী পুজো উপলক্ষে বাংলাদেশের খুলনার দাকোপ উপজেলার ৫টি মন্দিরে ৫ লক্ষ টাকা চাঁদা চেয়ে উড়ো চিঠি পাঠানো হয় বলেও অভিযোগ। কিন্তু নির্বিঘ্নে উৎসব উদযাপনের আশ্বাস দিয়েছে ইউনুস সরকার। নিরাপত্তার দিকে বিশেষ নজর দিয়ে নানা পদক্ষেপ করা হয়েছে। হাসিনাহীন বাংলাদেশে কীভাবে শান্তিপূর্ণ দুর্গাপুজো সম্পন্ন হয়, সেদিকে নজর থাকবে ভারত ও আমেরিকার।